মেঘবালিকাকে নিবেদিত হাইকুগুচ্ছ
১.
মেঘবালিকা
তপ্ত হৃদয়ে দাও
বৃষ্টির ছোঁয়া!
২.
হয়ে নিঃশেষ
গাও প্রেমের গান
নিঃস্বার্থ বেশ!
৩.
মনে তোমার
বেঁচে থাকার প্রাণ
রাখা আমার!
৪.
মরু হৃদয়ে
তোমারই পরশে
সাজে সবুজে!
৫.
চাতক আমি
তোমার অপেক্ষায়
বরষাপ্রেমী।
১.
মেঘবালিকা
তপ্ত হৃদয়ে দাও
বৃষ্টির ছোঁয়া!
২.
হয়ে নিঃশেষ
গাও প্রেমের গান
নিঃস্বার্থ বেশ!
৩.
মনে তোমার
বেঁচে থাকার প্রাণ
রাখা আমার!
৪.
মরু হৃদয়ে
তোমারই পরশে
সাজে সবুজে!
৫.
চাতক আমি
তোমার অপেক্ষায়
বরষাপ্রেমী।
মনের কোণে লুকানো ইচ্ছে ভীষণ
একদিন আকাশে উড়ে বেড়াবো মেঘের মতন।
সৃষ্টির উৎস ভুলে যাবো, ভুলে যাবো রোদে পোড়ার কাল!
অচেনা দমকা হাওয়া ভালোবেসে সঙ্গী হবো তার,
ভেসে যাবো সীমানাহীন লক্ষ্য বরাবর,
আছরে পড়বো পাহাড়ের বুকে
তারপর ভেঙে চুরে নিঃশেষ হবো সুখে-
হবো রূপান্তরিত জল, হিউমাস, জ্বীবাশ্ম।
ঈদের মানে বদলে দেয়া দুঃসময় চলছে পৃথিবীর বুকে!
স্বশরীর বন্ধ ঘরে, নেই প্রিয়জনের সাক্ষাত,
কেনাকাটার ধুম নেই, নেই কোন উচ্ছ্বাস। মন্দ বরাত!
এমন দুঃখক্রান্ত ঈদ দেখিনি এ জীবনে আগে-
সব সুখ যেন খেয়ে ফেলেছে এক 'করোনা' বাঘে!
বিচ্ছিন্নতার ঈদ এবার। মন পাখি আমার-
শুধু গায় করুণ সুরে দীর্ঘদুঃখের গান!
খুশি নেই, হাসি নেই। বিমর্ষ মনমুকুরে-
নেই কোনো আনন্দের কলতান!
প্রার্থনা করি এমন ঘরবন্দি ঈদের কালে-
সুখের তিলক ফুটুক ফের সব মানুষের ভালে।
ঈদের মানে বদলে দেয়া দুঃসময় কেটে যাক,
হারিয়ে যাওয়া আনন্দ আবার সবাই ফিরে পাক!
তুমি মনে রাখো নি আমায়
ডুব দিয়েছি তাই সুদূর আকাশে; মহাশূণ্যে।
তোমার মাঝে নতুন রূপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম
সময় দাও নি, সুযোগ দাও নি, তাই-
অভিমানে সাগর থেকে দূরে সরে যায় মেঘ!
জল থাকে যদি জলাধারে স্থির, গতিহীন-
ঐ জল জীবনের গান গায় না!
জনমে জনমে অস্তিত্ব জানতে-
করতে হয় জলের সন্ধান, মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতো।
ডুব দিয়েছি তাই সুদূর আকাশে, মহাশূন্যে।
তবে তুমিও এসো আকাশে একবার, যদি ইচ্ছেহয়!
দেখা হবে সৃষ্টির খেলায়, ভালোবাসার পুণ্যে।
তামাম দুনিয়ায় প্রান্তরে প্রান্তরে জনচিত্রে
মুহুর্মুহু মানবতার বার্তা বেজে উঠুক, ছড়িয়ে পড়ুক
আঠারো বছর বয়সের দুর্বার গতিতে...
ফিরে ফিরে আসুক সবার উদ্দীপ্ত নিউরনে
বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার তাড়া।
অবাক পৃথিবী তাকিয়ে দেখুক,
'মানবতার কল্যাণে নিবেদিত সাম্যবাদী সমাজ'
যেমন সময়চিত্র খুঁজেছেন আমৃত্যু আমার কবি সুকান্ত!
আসুক সুকান্ত সময় পৃথিবীর বুকে, অবারিত মানবপ্রেমে।
---
উৎসর্গঃ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে।
পরিস্থিতি সাপেক্ষে, জীবন এখন একটি কোয়ান্টাম কণিকার মতো-
হাইজেনবার্গের 'অনিশ্চয়তা নীতি' নির্ভর দোদুল্যমান অবস্থায়,
'দশা' স্পষ্ট করে বলা যায় না কারো!
যেমন ধরো, সমকালে আমাদের মাঝে দূরত্ব বেড়ে গেলো,
ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি থেকেও চোখের আড়াল,
মনের দূরত্ব কমেছে নাকি বেড়েছে- অনিশ্চিত।
এ অনিশ্চিত সময় দীর্ঘ হয়ে হয়ে এগিয়ে চলছে মহাকালমূখে,
সঙ্গত কারণেই 'ফের দেখা' অনিশ্চয়তার দোলাচলে!
ঘুরে ফিরে মন বারবার মনকে বলে-
হবে কি ফের দেখা, বসবে মেলা আনন্দলোকে?
পৃথিবীতে মানুষের প্রথম গীতিকবিতা 'কান্না'...
কান্নার সুরেই জানান দেয় শিশু
এসেছে সে পৃথিবীর বুকে ।
অজানা ভবিষ্যৎ, হাসি-কান্নার মেলবন্ধনে
জীবনের চাকা চলে সুখে-দুঃখে ।
কান্নার উপকরণ সামনে এলে তাই,
বিমর্ষ হতে নাই! ভেঙে পড়তে নাই!
আলিঙ্গনে তাকে, তুমি এগিয়ে চলো সামনে,
'জন্মমুহূর্ত' হোক প্রেরণা ।
পৃথিবীতে মানুষের প্রথম গীতিকবিতা 'কান্না'...
জীবনের দৈর্ঘ্য সসীম, তবু অসীম দৈর্ঘ্যে স্বপ্ন দেখে মন!
স্বপ্নের অসীম দৈর্ঘ্যেই বেঁচে থাকে মানুষের আগামীক্ষণ ।
ভয় নেই! ভাঙে স্বপ্ন যতবার,
তার বহুগুণে, স্বপ্ন দেখো বারবার ।
স্বপ্ন দেখো মন, স্বপ্ন দেখো নিরবধি, পারো যতোক্ষণ!
কীভাবে আঁকা হয় উন্নয়নের ছবি?
কীভাবে লেখা হয় সমৃদ্ধির ইতিহাস?
নানা মুনির নানা মতে-
'মূলত' মতঃ শ্রমিকদের কথা!
দিনের পর দিন, রাতের পর রাত-
শ্রমিকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে দেহনিঃসৃত ঘাম
আর যথাযথ অধিকার না-পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস মিশে হয়
রঞ্জক পদার্থ ইতিহাসের পাতায়, সময়ের সাথে সাথে-
একটু একটু করে আঁকা হয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির তৈলচিত্র ।
তোমার পূর্বপুরুষদের কথা ভাবো-
দুঃখ কমে আসবে, পাবে সংগ্রামী শক্তি ।
বেশিদিন আগের কথা না!
তোমার পূর্বপুরুষ প্লেগ মোকাবিলা করেছে ।
তোমার পূর্বপুরুষ বসন্ত মোকাবিলা করেছে ।
মোকাবিলা করেছে কলেরা, যক্ষ্মা ।
মোকাবিলা করেছে শত শত ভয়ঙ্কর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াসহ কতো কতো জীবাণু!
তুমি সাহস রাখো মনে তোমার পূর্ব পুরুষদের মতো ।
অবশ্য তাদেরও কিছু কিছু স্বপ্ন ভেঙেছে, কিছু কিছু প্রিয়জন হারিয়েছে!
কিন্তু থেমে যায়নি পথচলা...
সভ্যতা ধ্বংস হতে দেয়নি তারা!
মন বলে, চলমান এ করোনাযুদ্ধে-
তুমিও জিতবে তোমার পূর্বপুরুষদের মতো ।
মিলিয়ন মিলিয়ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার সাগরে
বাস করে মানুষ জন্ম থেকেই।
ক্যান্সার, এইডস্, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ...
অসংখ্য রোগের সাথে বসবাস কতোকাল কতোজনের।
দৃশ্যমান, অদৃশ্য এসব শত্রু চেনে না মানুষ!
উল্টো বোকারদল, মানুষ, শত্রু সাব্যস্ত করে মানুষকে!
ভাইবোনদের হত্যাযজ্ঞে মাতে ভাইবোন!
সভ্যতার বয়সতো কম হলো না-
অথচ, মানুষ চিনলো না তাদের শত্রু কে?
হে পৃথিবীর মানুষসকল, জাগো,
তোমাদের আসল শত্রু চেনার সময় হয়েছে।
সময়ে সময়ে জীবনে কতো ঝড় আসে!
কিছু ঝড় কৃত্রিম, মানুষের সৃষ্টি,
কিছু ঝড় প্রাকৃতিক, রহস্যময়।
কোনটি অজানা উৎসের দমকা হাওয়া,
কোনটি জানা উৎসের আচমকা ধাওয়া!
তবে সব ঝড়েরকাল স্বাভাবিক স্মৃতিতে থাকে কমবেশি,
অবশ্য কিছু স্মৃতি দীর্ঘ হয় আমৃত্যু পর্যন্ত!
জন্মসূত্রে মানুষ কী আশ্চর্য অলৌকিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত,
ঝড়োস্মৃতি গোপন রেখে মনে
এগিয়ে চলতে জানে
শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত!
চলমান দীর্ঘ ঝড়োবেলায় প্রার্থনাঃ
"বর্তমান দুঃসময় সবার জীবনে দ্রুত অতীত হয়ে যাক,
এগিয়ে চলা যেন না-থামে কারো!"