রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০

বাউলিয়ানা প্রেম

 

বাউলিয়ানা প্রেম

- সাকিব জামাল

বাউলিয়ানা প্রেমে-
বারো চাঁন্দে ঘুরি আমি, ছোট-বড় হই!
নিজের মাঝে খুঁজি, নিজের প্রিয় সই!
হঠাৎ হঠাৎ পাঠে বসি-
শূন্য কতো বড়?
মহাশূন্য কতো অসীম,
কতোটুকু 'হৃদয়' ধরো?
মন বলে,
"মানুষ বড়, প্রেম অসীম- এর উপরে নাই,
সহজিয়া অন্তর কোণে সর্বসুখের ঠাই!"
বারো চাঁন্দে এক সাধনা করি আমি ঠিক,
সই'র মাঝে খুঁজে বেড়াই স্বর্গপথের দিক!

জেগে ওঠো একাত্তর, বর্তমানে!

 

জেগে ওঠো একাত্তর, বর্তমানে!

- সাকিব জামাল

জেগে ওঠো একাত্তর।
তোমার এনে দেয়া স্বাধীনতার স্রোত-
থেমে থেমে প্রায় স্থিরতায় চেতনার নহর!


মুক্তিযুদ্ধের মূলমঞ্চ থেকে উৎসারিত,
বাহাত্তরের সেই 'চার' শাখা নদীতে বাঁধ নির্মাণে ব্যস্ত-
পরাজিত শত্রুদের অনুগামী প্রজন্মদল।
অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি তোমার স্বপ্নসকল।


কালের প্রবাহে-
শ্যাওলাদের তোড়জোড় বেড়েছে!
ইস্যুর আঘাতে আঘাতে আহত চেতনায়-
প্রগতির পথে স্রোত নেই!

হে প্রিয় প্রাক্তন সময়,
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বুকে, বীরদর্পে-
জেগে ওঠো একাত্তর, বর্তমানে।
মুক্তির স্বপ্নেরা এগিয়ে চলুক অনন্তকাল...

হেমন্ত সন্ধ্যায় প্রার্থনা

হেমন্ত সন্ধ্যায় প্রার্থনা

- সাকিব জামাল

এই সন্ধ্যায়
কুয়াশাবৃষ্টি হয়ে ঝরে যাক
তোমার দুঃখসব।
চুপ হোক
দীঘল রাতে একলা থাকা
কষ্ট কলরব।


সময় গড়িয়ে
আনন্দ গানে ভোর হোক।


সফল সফরে
ছড়াক ঝলমলে সূর্য ময়ূখ
তেজস্বী চলনে।
দিনান্তে
আসুক আরেকটি সন্ধ্যাসময়
প্রশান্তির শিহরণে।


এভাবে, এই হেমন্তে
আহ্নিক গতি চক্রে
সম্পূর্ণ সময়-
নিবেদিত হোক
তোমার জন্যে
সুখে সৌরভে গতিময়।

রবিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০

অঘ্রানের চাঁদ

অঘ্রানের চাঁদ
- সাকিব জামাল

শিশিরে ভেজা অঘ্রানের চাঁদ 
         তোমার আকাশে ভাসে,
জোছনার জলে ডুবে ডুবে প্রেম 
            আমার কাছে আসে!  
অথচ,
হাসে দূরে কুয়াশার নেকাবে ঢাকা 
                আসন্ন বিরহ মুখ,
ক'দিন পরে অমাবস্যার রাতে হয় 
                স্বপ্ন মরণের সুখ!

বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০

বীজতলা

 

বীজতলা

বীজতলা প্রেমে, কৃষকধ্যাণে-
সোনালী স্বপ্ন দেখি 'সবুজে ডানা' মেলে!


তুমিও সঙ্গ দাও আমায় বিপ্লবে!
কৃষাণী হও,
স্বপ্নে স্বপ্নে ডুবে রও!


পৃথিবী সমৃদ্ধ হোক-
প্রেম ও ফসলের যুগপথ গানে!

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০

সম্ভ্রান্ত

 

সম্ভ্রান্ত

- সাকিব জামাল

নয় জন্মগত পারিবারিক ঐতিহ্য বহনকারীর স্তুতি,
সম্ভ্রান্তের সংজ্ঞায়: শুধু ধনিকশ্রেণী ভুক্তি- তাও বিচ‌্যুতি!
বরং, প্রশস্ত যার নিজ হৃদয়,
ভালোবেসে মানুষের মন যে করে জয়,
তাকেই সম্ভ্রান্ত বলি আমি, দেই হৃদয়ে- শ্রদ্ধায় বসতি!


হেমন্তে নিমন্ত্রণ তোমায়

 

হেমন্তে নিমন্ত্রণ তোমায়

- সাকিব জামাল

হেমন্ত উৎসব আমার- শুধু তোমায় ঘিরে!


তোমার জন্য-
ঘাসফুলের নুপুর, শিউলির মালা।
কামিনীর টিকলি, ছাতিমের ডালা।


সাজো। সৌরভে মাতো!


তারপর, আমার নিমন্ত্রণে,
শান্ত শান্ত শীতল শীতল কুয়াশাভেজা স্নিগ্ধ পায়ে-
'একেলা স্বর্গ' থেকে এসো নেমে।


উৎসব হোক শুরু- যুগল প্রেমে জনমে, পরজনমে!

চিত্রায়ণ

 

চিত্রায়ণ

- সাকিব জামাল

তারাদের আমরা যেভাবে দেখি-
সেভাবে ছবি আঁকি না!
খাঁজকাটা পঞ্চভুজ কী বিজ্ঞানসম্মত?
নিরুত্তর চিত্রকর!
সময় বয়ে চলে-
সভ্যতাফুলের পাপড়ি অকালে ঝরে,
পূর্ণতা আসে না!


চিত্রভ্রান্তিতে ডুবে থাকে মানুষ।
চিত্রভ্রান্তিতে ডুবে থাকে সমাজ।


তোমার কাছে-
'বেনীআসহকলা' সাত রঙ আছে,
মাইক্রোস্কোপিক থেকে টেলিস্কোপিক-
যেমন দেখো, তেমন আঁকো-
ঠিকঠাক বিজ্ঞান মেনে।
মুক্তি আসুক মানবতার- সত্যচিত্র উন্মোচনে।

মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২০

হঠাৎ বিদায়

 

হঠাৎ বিদায়

সাকিব জামাল

দূর কক্ষপথে, ছিলাম দুজনে।
ভালোবাসার মহাকর্ষ টানে,
কাছে এসে, পাশে বসে, রেখেছিলাম চোখ-
তোমার চোখের পানে।
যাত্রা শুরু, আনন্দ পথে-
যেন যুগল স্যাটেলাইট।
কেন্দ্র প্রেম। ঘূর্ণন অক্ষ-
স্বপ্নের বসবাসে।


তোমার ঠোঁটের কোণে, তখন, এক ফালি চাঁদ হাসে
দেখে সুখে, মন আমার, আকাশগঙ্গায় ভাসে।।


হঠাৎ বিদায়! হঠাৎ হলো ছুটি!
পৃথিবী ছেড়ে আকাশগঙ্গায়-
তারারা আবাসিক জুটি!
তোমার হাসি, চোখের ঝলক
তরঙ্গে তরঙ্গে ভাসে,
তোমার ভালো থাকার খবর
আমার এখানে আসে!
তোমার সুখে,
বেদনা মুছে, মিটিমিটি আমি জ্বলি-
মহাশূন্যে, দূর ভুবনে-
প্রেমের অমরাবাসে।

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

হরিণী নয়, সিংহী হও নারী!

 

হরিণী নয়, সিংহী হও নারী!

সাকিব জামাল

গাণিতিক হিসাব ধরো-
আথবা, ধরো, বাস্তুতন্ত্রের খাদ্যচক্র-
বাঘের ভয়ে দৌড়ে বেড়ানো- হরিণী, বাঁচতে পারে?
বেঁচে থাকা যায়!
উপায়?
হরিণী নয়, সিংহী হও নারী।
দ্রোহকে ভালোবেসে-
আমি হলফ করে বলতে পারি,
ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন- সেসব দূরের কথা!
তোমার দেহে-
নখের আঁচরও কাটতে পারবে না কেউ!
নিজেকে রূপান্তরে-
নিউরন মাঝে যদি তুলতে পারো ঢেউ।
বাঘের সাথে সমানতালে-
তুমিও চলতে পারো সবখানে, সবসময়।


হরিণী নয়, সিংহী হও নারী।।

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০

কর্পোরেট কারাগার

 

কর্পোরেট কারাগার

- সাকিব জামাল

ঘড়ির কাঁটায় আঁকা ছকবাধা জীবনে-
শৃঙ্খলা থাকতে পারে, সুখানুভূতি কম!
কর্পোরেট কারাগারে-
নিত্য এক নিয়ম।
       এতো টা'র সময় এ কাজ করো!
       এতো টা'র সময় ঐ কাজ করো!
সভ্যতার যাত্রায় কর্মকৌশল বিবর্তনে,
এমন সিনেমা নির্মাণ করে চলেছে মানুষ-
        যেখানে দুঃখ'রা স্বাগতিক!
অথচ, উদাসমনে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়া-
এক দুর্দান্ত সুখ।
           অনুভূতি মহাজাগতিক!

বাটখারা

 

বাটখারা

- সাকিব জামাল

দুর্জনের বাজারে- সজ্জন ওজনে হালকা!
মর্যাদাবোধের বাটখারা তাই নিজের কাছে রেখো,
মাঝেমাঝে নিজেকে নিজে মেপো।
বিশেষত, ঘুমোতে যাবার পূর্বে-
যখন রাত গভীর হয়, নেমে আসে নিস্তব্ধতা-
সরব করো তখন নিউরন সমস্ত।
নিক্তি নাঁচাও-
দোলে কোন দোলে? দেখো।
ঝুল দুর্জনে হলে বেশি-
পরিশুদ্ধবোধে, সরিয়ে ফেলো-
যতসব ময়লা জমেছিল তোমার সজ্জন মনে।
ওজন বাড়াও নিজের!
প্রতিটি ভোর হোক-
শুভ্রতায় নির্মিত এক নতুন 'তুমি' নিয়ে।

মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

নানা বাড়ি

 

নানা বাড়ি

- সাকিব জামাল

গ্রাম দেশে নানা বাড়ি
বেড়াতে যাই চলো,
এমন সুন্দর আনন্দ ভারি
আর কী আছে বলো!
আছে ফুল আছে ফল
পুকুর ভরা মাছ,
সবুজে ঘেরা গ্রাম মাঝে
দারুণ ধান গাছ!
নানান পশুর ঘোরাঘুরি
আর পাখির কলরব,
নদীর জল টলমল
ভালো লাগে সব।
ভীষণ মিশুক গায়ের লোক
সরলতার ছবি আঁকা
শহরের মতো নেই সেখানে
একলা একা থাকা।
তুমিও কি যাবে নাকি
আমার নানা বাড়ি?
চলো বন্ধু, বেড়িয়ে আসি,
যাই সুখের বলিহারি!

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কবিতা যখন ম্যানগ্রোভ বন!

 

কবিতা যখন ম্যানগ্রোভ বন!

- সাকিব জামাল

সশব্দে অথবা নিঃশব্দে-
পেটে যখন 'ক্ষুধার্ত বাঘ' করে ঘোরাফেরা
ভালোবাসা তখন হরিনীর মতো দেয় ভোঁদৌড়!
সংকট উভয়-
ধরা পরলেও শেষ,
ধরা না-পরলে পালিয়ে হয় নিরুদ্ধেশ!
সংসার চলে-
নারী-পুরুষ প্রেমহীন
সামাজিক সমঝোতায় 'মধ্যবিত্ত' বসবাস!
বাস্তুতন্ত্র রক্ষায়-
কবিতা তখন ম্যানগ্রোভ বন
জোয়ার-ভাটার নিত্য খেলায় বাড়ে-কমে ক্ষেত্রফল!

তিরিং বিরিং ঘাসফড়িং

 

তিরিং বিরিং ঘাসফড়িং

সাকিব জামাল

নম্র-ভদ্র ঘাসফুল আর
          তিরিং বিরিং ঘাসফড়িং
বন্ধুতা হলো দুজনে-
         কোন এক বৃষ্টির দিন!


আতি দুষ্ট ঘাসফড়িং শুধু
             ঘাসফুলকে জ্বালায়,
ফুলের দিকে করে না খেয়াল
           উল্টা-পাল্টা লাফায়।


বন্ধু ভেবে ঘাসফুল বলে,
          "মেতো না খুব বেশি
পরে গেলো কষ্ট পাবে,
          থেমে যাবে সবখুশি!"


শুনলো না ঘাসফড়িং-
                 বন্ধু'র সে কথা,
পা পিছলে চিৎপটাং-
                পেল খুব ব্যথা।


দুঃখে শোকে ঘাসফড়িং বলে,
             "উহ্,আহ্, 'মা'... রে
না-শুনলে বন্ধুর কথা
              বিপদ ঠিকই বাড়ে!"

বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বড় স্যারের ড্রাইভার!

 

বড় স্যারের ড্রাইভার!

- সাকিব জামাল

হলে বড় স্যারের ড্রাইভার,
আর কিছু নেই দরকার!
         টাকা হবে কোটি কোটি,
         বাড়ি হবে ভুরি ভুরি,
         গাড়ি, নারী কুড়ি কুড়ি
         সবই হবে চমৎকার!
হলে বড় স্যারের ড্রাইভার,
আর কিছু নেই দরকার!
         ক্ষমতা বেশি স্যারের চেয়ে-
         চোটপাঠ, ঠ্যালা ভীষণ তার!
         নিয়োগ, বদলি, দুর্নীতি, টেন্ডার-
         মিলবে কমিশন, পার্সেন্ট হার।
হলে বড় স্যারের ড্রাইভার,
আর কিছু নেই দরকার!
        দেশের কথা, দশের কথা-
        সে ভাবনা করে না স্যার!
        ড্রাইভার আর করবে কি?
        ভাগ নেয়টা মূল ব্যাপার!
হলে বড় স্যারের ড্রাইভার,
আর কিছু নেই দরকার!
        সময় বলে, চলতে থাকো-
        হিসাব হবে একদিন ঠিক,
        থাকবে না পাশে কেউ তখন,
        ছুটবে তুমি দিক বিদিক!
        থাকতে সময় এখনই সবাই-
        সুপথে ফিরে আসো আবার।
হলে বড় স্যারের ড্রাইভার,
সৎ থাকাটা খুব দরকার!

ছায়াজ্ঞান

 

ছায়াজ্ঞান

- সাকিব জামাল

ক্ষুদ্রজ্ঞানে, কম আলোয়- কেবল 'ভ্রান্তিরা' বড় হয়!


ছায়া-আলোর খেলা নিদর্শন।
আলো যখন তির্যকে পরে-
'দেহ' কম আলো পায়, 'ছায়া' হয় অপেক্ষাকৃত বড়।
অথচ, সরাসরি আলোর নিচে-
'দেহ' প্রায় পূর্ণ আলোকময়, কিন্তু 'ছায়া' ছোট!
জ্ঞানের আলোও তেমন পরে মনের অঙ্গনে।
'আলোকিত মানুষ' তাই, ঠিকই, নিজের 'ক্ষুদ্রতা' রাখে স্মরণে।
বিপরীত বোধে- 'অহম' বড়। মানুষ নয়, আলোও নয়।


ক্ষুদ্রজ্ঞানে, কম আলোয়- কেবল 'ভ্রান্তিরা' বড় হয়!


বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

জাতীয় পশু

 

জাতীয় পশু

- সাকিব জামাল

বাংলাদেশের জাতীয় পশু-
রয়েল বেঙ্গল টাইগার,
মাথা উঁচিয়ে চলে সদা-  
সুন্দরবনে বাড়ি তার।


হলদে-কালো ডোরা কাটা
বনের রাজা বাঘের গায়,
হালুম হালুম ডাকলে পরে
অন্য পশুরা ভয় পায়।  


শক্তির প্রতীক, সাহসের প্রতীক
বাঙালি জাতির মতো,
আদর করে 'বাঘ মামা' ডাকি,
ভয় পাইনা ততো!

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

জোতির্ময় ভালোবাসা

 

জোতির্ময় ভালোবাসা

- সাকিব জামাল

এসো, ভালোবাসো। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি-
আমরা প্রবেশ করবো এক 'জোতির্ময়' গুহায়!
যেখানে দেয়ালে দেয়ালে ফুল হয়ে ফোটে-
আসমানী তারার দল। শুদ্ধতার আলো ছড়ায়।


তুমি কি জানো? জাগতিক কামনার জলে-
ভেসে ভেসে আসা অন্ধকার,
হৃদয়ের উপরে জমে অদৃশ্য করে দেয় প্রেম!
নদীর মতো নাব্যতা হারায় মনের গভীরতা।
স্রোতহীন হয়ে পড়ে জনকল্যাণচিন্তা।
মানুষ তখন, পৃথিবীর সহচর প্রাণীদের থেকে অভিন্ন!
ভুলে যায় আত্মপরিচয়।
এমন ভয় আমার, আমাকে নিয়ে হয়।
এমন ভয় আমার, তোমাকে নিয়েও হয়!


এসো, দূর করি ভয়। ঐশ্বরিক প্রেমে, জোতির্ময় ছোঁয়ায়!


মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মানবাধিকার ফিজিক্স

 

মানবাধিকার ফিজিক্স

- সাকিব জামাল

বঞ্চিত অধিকারের ধ্বংসস্তুপে বসে- হু হু করে কাঁদতে নেই!
বরং চিৎকার করো- শ্লোগানে। শ্লোগানে, শ্লোগানে- কাঁপন ধরুক-
শোষকশ্রেণীর পায়ের নিচে মাটিতে- রিখটার স্কেলের সর্বোচ্চ মাত্রায়।
ভয় নেই, ভয় পাবার কোন কারণ নেই!
সুদৃঢ় পর্বতমালা নিমিষে বিলীন হয়ে যায়-
যথাযথ ভরবেগে ডিনামাইট আঘাত করে যখন। এটাই ফিজিক্স!


তোমার অধিকার- ফিজিক্সের 'জড়তা' সূত্র মানে।
'যতক্ষণ বাহ্যিক বল প্রয়োগ না-করা হয়, স্থির বস্তু স্থির, গতিশীল বস্তু সমবেগে চলে।'
অধিকার হরণের মহোৎসবও চলতে থাকে, যতক্ষণ তুমি চুপ থাকো।
ঠিক বিপরীত। যখন তোমার ভোকাল কর্ডের কম্পন নায্যতার আওয়াজে মিলে যায়-
অনুনাদ হয় আকাশে বাতাসে তখন। সে বিপ্রতীপ বলে-
শোষকদল চুপ হতে বাধ্য।
কার আছে- ফিজিক্সকে অস্বীকার করার সাধ্য?


মানবাধিকার ফিজিক্স বুঝে নাও দ্রুত, পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছো শোষিত-বঞ্চিত।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ঋতুরানি শরৎ

 

ঋতুরানি শরৎ

সাকিব জামাল

এসেছে শরৎ,         সোনালী রোদ-
      সাদামেঘ ওড়ে আকাশে,
কাশবন দোলে,         শাপলা নাঁচে,
       দখিনের মিষ্টি বাতাসে।
শিউলি তলা         শিশির ভেজা
       দারুণ সুবাস ফুলবনে,
নদীর জল             শান্ত-সুশীতল
     আনন্দ জাগায় বেশ মনে!
ঋতুরানি শরৎ       আপরূপা ভীষণ
      বাংলা মায়ের এই বুকে,
পরশে তার,             হৃদয় সবার-
         মেতে ওঠে খুব সুখে।

আটশো কোটি জোড়া সমুদ্র

 

আটশো কোটি জোড়া সমুদ্র

- সাকিব জামাল

আটশো কোটি জোড়া সমুদ্র পৃথিবীর বুকে,
কথা কয়- চোখে চোখে, জলে জলে!
লোনা জলের স্বাদ-
সুখে-দুঃখে সবার চেনা,
অচেনা শুধু জীবনের মানে-
'আদিম রহস্য' সে এখনো রহস্যময়!
ঘুরপাক খায় কষ্টরা, প্রতিজনে, জোড়া সমুদ্রে-
কূল-কিনারাহীন!
তবু, ঝড় ওঠে, রহস্যভেদ নেশায়-
চোখ যুগল শান্ত হয় নি আজ অবধি- অস্থিরতার!
বয়ে চলে জোড়া সমুদ্র, সংখ্যায় বাড়ে, ফুলে ফেঁপে ওঠে-
অ্যাকুয়াস হিউমার!


সবগুলো জোড়া সমুদ্র- প্রশান্ত হবে যেদিন,
সে স্বর্গসময়কাল কতো দূরে?
ঘুমিয়ে আছে কোন সভ্যতার বুকে!
রহস্যময় সমুদ্রজলে মানব ডোবে বিরামহীন...

সমান্তরাল প্রেম

 

সমান্তরাল প্রেম

- সাকিব জামাল

ধরে নাও, আমাদের ফের দেখা হলো-
গাণিতিক সংখ্যারেখার শূন্য বরাবর।
যে দিন গেছে- বিরহে, বিষাদে- ঋণাত্মক ধরো। ভুলে যাও।
যে দিন সামনে- ভালোবাসায়, আনন্দে- ধনাত্মক ধরো। মনে রাখো।
তারপর,
আমার চোখে তাঁকাও। হাতে হাত ধরো।
সংখ্যারেখার প্রতি বিন্দুতে স্থানিক মানে- মনে মনে প্রেম বসাও!
এরপর, ছুটে চলো-
শূন্য থেকে সামনে, অসীমে।
প্রয়োজনে-
তোমার রেখায় তুমি থাকো!
আমার রেখায় থাকি আমি!
তবুও যাত্রা চলুক!
যাত্রা চলুক- সমান্তরালে, ভালোবাসায়, বিরামহীন।
আসছে দিন হোক- 'আচ্ছে' দিন!


বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

তোমায় নিয়ে দ্রোহ!

 

তোমায় নিয়ে দ্রোহ!

সাকিব জামাল

অপ্সরা নয়, তোমায় নিয়ে-
দ্রোহ আমার ইন্দ্রের সাথে!
তুমি সামনে এলে-
নৈসর্গিক ধ্যানে পড়ি প্রেমের,
সুর, অসুর কিংবা ইন্দ্রের পাঠানো অপ্সরা-
আমার মগ্নতা ভাঙানোর ক্ষমতা রাখে না কেউ!
তোমার মগ্নপাঠে-
কাটিয়ে দিতে পারি অনন্তকাল।
তুমি প্রেমিকা হলে,
প্রেমের দেবত্ব লাভে-
দ্রোহ করবো আমি আজন্মকাল।

সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

এসো, ভাদ্র-বৃষ্টি-প্রেম!

এসো, ভাদ্র-বৃষ্টি-প্রেম!

- সাকিব জামাল

ভাদ্র মাসের সূর্যাগুনে-
হৃদয় পুড়ে 'খই'!
ছুটে আসো, ভালোবাসো,
দাও বৃষ্টির ছোঁয়া, সই।
'তালপাকা' গরম, ভাদ্রে বেরহম-
চরম কষ্টক্লান্ত রই!
চায় মনচাতকে, তোমার পরশে-
একটু সরস হই!
খরায় খরায়- জ্বলে পৃথিবী,
জ্বলে যায় মন ঢের।
এসো, ভাদ্র-বৃষ্টি-প্রেম,
শরৎ স্নিগ্ধতা ফের!

মাতৃকোল

 মাতৃকোল

- সাকিব জামাল

মমতার মাতৃকোল সন্তানের স্বর্গ
আজন্ম নিশ্চিন্ত বাস প্রিয়তম স্থান,
সুখে দুখে মনজুড়ে শান্তির সম্পান,
ভালোবাসা মেখে থাকা নিয়ত নিসর্গ।
মায়ের আঁচল সে যে পুজনীয় অর্ঘ্য
বটবৃক্ষ ছাঁয়াঘেরা দেবীসম প্রাণ,
প্রেমের বন্ধনে গাথা সুনির্মল গান,
বিষন্নতা মুছে ফেলা ‘ইরেজার বর্গ’।


নেই যার মাতৃছাঁয়া দূর্ভাগা সেজন
পৃথিবীর বুকে তার দুঃখ চিরকাল,
কষ্টমাখা পথচলা ভীষণ বেহাল,
বেদনায় ডুবে থাকা তৃপ্তিহীন মন।
যার আছে মাতৃধন দীর্ঘকাল থাক,
নেই যার দুঃখ তার দূরে উড়ে যাক।


বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

যতদূরে ইচ্ছে থাকো!

 

যতদূরে ইচ্ছে থাকো!

- সাকিব জামাল

থাকো তুমি, যতদূরে ইচ্ছে থাকো-
ধ্যানসংযোগে আমি তোমাকেই দেখি!
দিগন্তরেখায় আকাশ-পাতাল মিলনের সঙ্গমছল,
দূরে দূরে থেকেও কীভাবে 'মিছে' মিশে যাওয়া-
'ভ্রান্তি' দর্শকের চোখে, প্রেমিকের চোখে না!
প্রেমিক জানে, খসে পড়া উল্কাপিন্ড একদিন সেও ছিলো-
ধূমকেতুর অংশবিশেষ, প্রাণবন্ত বন্ধনে।
প্রেমিক বিশ্বাস রাখে-
পাতাল আকাশের অংশ- অসীম শূণ্যতার মাঝে!
ভালোবেসে মিশে যাওয়া আত্মারা-
দৈহিক দূরত্বে ভুগোল মানে, মনোবিজ্ঞান মানে না!


থাকো তুমি, যতদূরে ইচ্ছে থাকো!
ধ্যানসংযোগে আমি তোমাকেই দেখি,
মিলনাত্মক প্রেমে ডুবে থাকি আজন্মকাল।।

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০

হবেতো কৃষাণী আমার?

 

হবেতো কৃষাণী আমার?

- সাকিব জামাল

মনোসঙ্গম করেছি তোমার সাথে, গতরাতে, কৃষকধ্যানে!
লাঙ্গল দিয়ে ফালি ফালি করেছি স্বপ্নের জমিন। হালকা হালকা বৃষ্টি ছিলো-
মই দিয়ে, সহজে, সমতল করেছি উঁচু-নিচু বুক। থেমে থেমে-
শ্রমে-বিশ্রামে সাজিয়েছি কাঙ্ক্ষিত বীজতলা।


তারপর, উন্নত ডিএনএ ধারক বীজ বুনেছি যতনে। কিছুদিন, কিছুক্ষণ পরে-
স্বপ্নের জমিন হলো- সবুজ উদ্যান। যৌবনা ধানগাছে ফসলের মৌঘ্রাণ।
সোনালী ফসলে- আনন্দে নেঁচে ওঠে প্রাণ, পাগলপ্রায় ভালোবাসায়-
আত্মজ-আত্মাজার সমৃদ্ধ হাসি গানে!
সার্থক হলো সঙ্গম আমার সুফলা কৃষকধ্যানে!


রাত শেষ। সূর্য উঠে গেছে। ফের রাতে, প্রতিরাতে-
মন চায়- তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখবো আবার!
বলো, হবেতো কৃষাণী আমার?

মহররম

 

মহররম

- সাকিব জামাল

মাটির বুক থেকে রক্ত, ফিনকি দিয়ে পৌঁছে যায় আকাশ অবধি-
নীল আকাশে ছোপ ছোপ লাল রঙের বিষাদ!
কালো পতাকা ওড়ে ফোরাত নদীর পাড়ে,
ধূ ধূ বালুচরে পরে থাকে-
তেত্রিশটি বর্শা, চৌত্রিশটি তরবারির আঘাতে-
নিথর, নবীজির দৌহিত্র।
জালিম ইয়াজিদ, হিংস্রতার শরাবে মত্ত,
চাই তার- হোসাইনের বিচ্ছিন্ন মস্তক!
খুনি সীমার, বাজায় রক্তাক্ত খঞ্জরে- বেদনার সপ্তক!
সেদিন থেকে, মুসলিম জাহান, বেদনা বুকে নিয়ে করে বাস।
মহররমে বিষাদে, অন্ধকারে ঢেকে যায়- ইসলামের ইতিহাস!

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০

লুকোচুরি খেলা

এই কাছে পাই তোমায়
এই পাই না,
লুকোচুরির এ খেলা, কিগো-
শেষ হবে না।।


হঠাৎ সোনালী রোদ
হঠাৎ বৃষ্টি নামে,
হঠাৎ প্রেম তোমার
হঠাৎ বিরহে থামে!
ভালোবাসার আসা-যাওয়া
ভালো লাগে না।
লুকোচুরির এ খেলা, কিগো-
শেষ হবে না।।


ক্ষণিক হাসো তুমি
ক্ষণিক করো মান,
ক্ষণিক ভাসাও আমায়
ক্ষণিক ডুবাও প্রাণ!
সুখ দুখের উথাল পাথাল
আর সয় না!
লুকোচুরির এ খেলা, কিগো-
শেষ হবে না।।

বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০

অপরূপা শরৎ (সনেট)

 

অপরূপা শরৎ (সনেট)

- সাকিব জামাল

শরতের সারথি সে- শাদা কাশফুল,
শিশির শুভ্রতা ভেজা- ঐ শিউলিদল,
স্নিগ্ধতা নদীর বুকে- জল টলমল,
ভেসে চলা মেঘকূল- আকাশে অতুল।
মেঘ-সূর্য লুকোচুরি- সৌন্দর্য্য প্রতুল,
সবুজের মাঠে ধান- নাঁচে নৃত্যদল,
গানে গানে ওড়ে পাখি- উচ্ছল সকল,
উঁচু শিরে ফুটে ওঠা- শাপলার ফুল।

শরৎ সারথিসব- মনে দেয় দোলা,
প্রশান্তির ছোঁয়া লাগে- হৃদয়ে গহীন।
ঋতুরানি অপরূপা- শরৎ দারুণ!
প্রেম আবেদন তার- যায় না যে ভোলা,
বাংলার শরত প্রেমে- দৃঢ়তা কঠিন।
বারবার প্রেমে পড়ে- হয়ে যায় খুন!

মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০

হরিজন পল্লীগীতি!

 

হরিজন পল্লীগীতি!

সাকিব জামাল

গতকাল রাতে, আমি আকাশে ভেসে বেড়েছি কিছুক্ষণ
আনন্দ শেষে, ক্লান্তি নামে, মেঘ করে মনে-
আমি গলে গলে ক্ষয়ে পরি!
রাস্তায় জ্বলছিলো সরকারি ল্যামপোস্ট,
সে আলোয় নিজেকে দেখি- বৃষ্টির ফোটা, পৃষ্ঠটানে বৃত্তবন্দি-
গোলাকার, স্বরূপ পরিবর্তনের চেস্টা যেখানে দুঃসাধ্য!
চিকচিক রোশনাই ছিলো স্বল্পস্থায়ী স্বপ্নের মতো!
তারপর, আরো আরো নিম্নমুখী অভিকর্ষজ বলে-
আমাকে ফেলে দেয় পথের ধুলোয়,
পদদলিত হতে থাকি অবিরত!
অদূরে হরিজন পল্লী। ভেসে আসে আজন্ম দুঃখের সুর।
আমি শুনি সে গান, আর কেউ শোনে কিনা জানি না!

সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০

লাল কাপড় ও একটি কালো ষাড়!

 

লাল কাপড় ও একটি কালো ষাড়!

- সাকিব জামাল

একটি কালো ষাড় হেটে চলছে...
সামনে ওড়াও লাল কাপড়-
শান্ত নাকি উগ্র? পরীক্ষা হয়ে যাক!
যদি সমাজ কিংবা রাজকাহনে-
কালো মনের মানুষের হিংস্রতা বুঝতে চাও,
দ্রোহপ্রেমে লাল রঙ করো তোমার যুগল চোখ!
অথবা বজ্রমুষ্টিবদ্ধ হাতে ওড়াও লাল নিশান-
পথের সাথীকে চিনে ফেলা পরীক্ষাটি আগে হোক!
তারপর, বঞ্চিতদের অধিকার আদায়ে-
তোমার ছক আঁকো,
দূর করো কালো মনের দৌরত্ব।


রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০

আমাকে ভালোবাসতে বারণ!

 

আমাকে ভালোবাসতে বারণ!

- সাকিব জামাল

দুঃখিত, আমাকে ভালোবাসতে বারণ!
বারণের কারণ-
চাল-চুলোহীন আমার, কিছুই নেই-
হৃদয়জুড়ে কেবল আছে- একটি বাউলে মন!
ভালোবাসলে তাই-
দু' চারটি গান বা কবিতা পেতে পারো-
তোমাকে উৎসর্গ করে,
কয়েকদিন চলতে পারে, তারপরে,
এভাবে চলবে না তোমার!
তারচে' বরং ভালোবাসো কোন রাজপুত্র-
হবে সব ইচ্ছে পূরণ!
শাড়ি, চুড়ি, গয়না... সবকিছু থাকবে- তোমার হাতের মুঠোয়!
তবে বলতে পারি না, কবিতা বা গানের সুরে-
তোমার ঘুম ভাঙার অপেক্ষা কেউ করবে কিনা- রাত দু'টোয়!
দুঃখিত, আমি! দিতে পারবো না-
মিথ্যে কোন আশার বাণী।
তুমিও, আমাকে বুঝতে বলো না-
সামষ্টিক অর্থনীতি!
আমি, বাউলে মনেই থাকি...

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০

বরফ সম্পর্ক!

 

বরফ সম্পর্ক!

- সাকিব জামাল

উষ্ণ ভেবে- চেয়েছি জল,
পেয়েছি বরফ। সম্পর্ক শীতল!
তারপর অপেক্ষা...
অপেক্ষা করছি, যদি বরফ গলতে শুরু করে কখনো-
তৃষ্ণা মেটাবো জলে তখন!
ভয় পিছে-
পরিসংখ্যান বলে, আশি শতাংশ বণিক
তোমার উঠোনে পসরা সাজিয়ে বসে আছে-
জনকল্যাণে!
সেখানে প্রেমিক-
কোন বাটখারায় সঠিক ওজন পাবে-
ভালোবাসার!


বরফ শীতল সম্পর্ক চলমান...
রাজনীতি নেই রাজনীতিবিদের হাতে!
প্রেম হাতে নেই প্রেমিকের!

মাছরাঙা

 

মাছরাঙা

- সাকিব জামাল

মাছরাঙা ভীষণ পছন্দের পাখি আমার।
তুমিও ওকে ভালোবাসতে পারো। ভালোবাসতে পারো এজন্যে-
কী দারুণ কৌশলী ধ্যাণ তার!
অসাধারণ ধৈর্য্যশক্তি! লক্ষ্যে স্থিরতা- চমৎকার!
আমি, যখন জীবন ও সংগ্রামে-
অস্থিরতায় ভুগি, ধৈর্য্য হারাই কিংবা লক্ষ্য ভুলে হারিয়ে ফেলি খেই,
তখন পুকুরপাড়ে যাই, ওকে দেখি।
অথবা সে সুযোগ না-পেলে, ওর কথা মনে মনে ভাবি।
তুমিও মাঝে মাঝে মাছরাঙাকে ভাবতে পারো মনে।।

মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০২০

লালনিয়া

 

লালনিয়া

- সাকিব জামাল

লালনিয়া, প্রেমের দেবী আমার, সাধিকা সই।
ফুলের কলি হয়ে আছো দূরে, কোন কাননে?
যুবক কবি'র আকুতি একটু শোনো-
ভালোবেসে, শেখাও- জীবনের সহজ পাঠ!
কলি থেকে ফুল হয়ে ফোটো!
শোনো, “পারে লয়ে যাওয়ার আকুতি আমার!”
একলা ঘাটে বসে থাকার কষ্টটুকু বোঝো।

লালনিয়া, প্রশান্তির প্রতিমা আমার,
গন্তব্য আমার তোমার কাছে, তোমারমূখী প্রেমে-
এ যাত্রায় বাধ সেজো না, অবহেলায় যেন না-যায় থেমে।
তোমার অবহেলায়- হই দিকভ্রান্ত,
তোমার ভালোবাসায়- মনমহাসাগর প্রশান্ত!
অশান্ত মনে আমার দাও তোমার শান্ত ছোঁয়া
উত্তাল ঘূর্ণিঝড় থেমে যাক!
থেমে যাক কালো মেঘের দৌরত্ব,
কেটে যাক আঁধারের হুংকার-
তাড়া করে যতো জীবনে আমার!

লালনিয়া, দেখো, আকাশে উঠেছে চাঁদ-
পরিপূর্ণ জোছনাবতী, আমার আরতি
তোমার জন্যে, গ্রহণ করো-
চাঁদের সাথে আরেকটি চাঁদ আঁকড়ে ধরো!
চাঁদের গায়ে লাগুক চাঁদ
আলোয় মিশুক আলো -
পৃথিবী জ্বলুক স্নিগ্ধ প্রেমে!
ভালোবাসার জোছনাধারা বয়ে যাক-
সকলের মনে মনে।
পৃথিবী ভীষণ প্রেমহীন হয়ে পরেছে!
তোমার কি আমার- চুপ থাকা পাপ!
দেখো, চাঁদের টানে সমুদ্র জলে ঢেউ জেগেছে,
নদ-নদীর বুক বেয়ে বেয়ে যেতে চায় সমতলে,
এসো, ধুয়ে ফেলি, মুছে ফেলি- সকল পাপ
সহজিয়া সে শুদ্ধ প্রেমের জলে।
শুনতে চাই- গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী-
তিন নদীর মোহনায় মিশে যাওয়া-
ছলাৎ ছলাৎ জলের গান-
ত্রিবেনীসংগমে!

লালনিয়া, সূর্যজ্ঞান সমন্বিতা আমার-
দৃশ্যমান দুটো চোখ আছে!
কিন্তু দেখার জন্যে-
তিনটি চোখের প্রয়োজন হয়, আমি জানি।
তৃতীয় চোখের জাগরণে-
তোমার সহৃদয় স্পর্শ চাই আমার।
ছুঁয়ে দাও আমায় ভালোবেসে- দেরি করো না!
যতোক্ষণ দেরি তোমার, ততোক্ষণ অন্ধ আমি!
আমাকে করো তৃতীয় চোখ দান!
দৃষ্টিদর্শন শেখাও-
তিন চোখে দেখার কৌশলে!
লুকায়িত তৃতীয়দৃষ্টির উদয়ে-
‘এই মানুষে সেই মানুষ আছে’
খুঁজতে শেখাও।
চিনতে শেখাও- আপনারে, আপন খবরে।

লালনিয়া, দেখো, সবুজের বুকে-
লেগেছে কাশফুলের নরম ছোঁয়া।
প্রকৃতির বুকে ঢেউ জাগলে প্রেমের -
পুরুষের বুকেও দোলা লাগে তার।
অথচ, শূণ্য বুক আমার!
জানি, প্রকৃতির সাথে তোমার মেলামেশা বেশ-
আমাকে দাও তার একটুখানি আবেশ!
দেখো, নীল আঁকাশে সাদা সাদা সমুদ্রজলের মেঘ
ভেসে যায়- পাহাড়মুখী,
পাহাড়ের বুকে আছরে পরে-
নিজেকে বিলীন করে দেয়,
এমন ক্ষয়ে-
ভালোবাসার স্পর্শ জয়ের সুখ আছে!
আমাকেও তেমন সুখ দাও,
তোমার সাথে মিশে- একাকার হয়ে হই ফানা!
লালনিয়া, শোনো, কে যেন বাজায় বাঁশি-
চলছে অষ্টমী তিথি কৃষ্ণপক্ষের!
আমি বাজাবো বাঁশি কৃষ্ণপ্রেমে-
তুমি সঙ্গত দিও রাধারূপে।
হারিয়ে ফেলি যদি ‘সপ্তসুর’ জনমে জনমে-
তাল ধরিয়ে দাও তুমি পরমের পরমে!
পৃথিবীর বুকে মানবজনমে ভালোবাসার সুর বিতানে-
দূর হোক অসুরের অনাকাঙ্ক্ষিত অগমন- বিনাশী গানে।

লালনিয়া, তুমি হৃদয়ের রাণী আমার-
পরিচালনা করতে পারো তুমি দুর্দান্ত প্রতাপে
মনের সিংহাসন আমার!
কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য-
আশ্রিত সব শত্রুদল করে দাও নিশ্চিহ্ন।
সহজ শুদ্ধ প্রেম সাধনে-
গড়ে তোলো সেথায় এক সহজিয়া রাজ্য!
প্রাণী থেকে মানুষ করে-
গড়ো আমায় প্রজারূপে- জাত গোত্র ভেদাভেদহীন মনে।
তুমি রাণী, সর্বময়, আমার মনের সিংহাসনে!

‘সময় গেলে সাধন হবে না’
সে চিন্তায় আমার- বাড়ছে উদ্বিগ্নতা!
প্রেম নিবেদন, করো গ্রহণ- আমার লালনিয়া।
তুমিই আমার দীক্ষাগুরু, জীবন সহজিয়া।।