শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১

আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ

 আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ!

- সাকিব জামাল


দিন, দিনান্তে-

সুখটুকু নিয়ে উড়ে যায় সময়পাখি,

দুঃখেরা উৎসবে মাতে আমার বারান্দায়।

আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ!

শ্রীহীন ধুসর ক্যানভাসে,

সেনহীন, আমি আঁকি- 

একলা শালিখের বিরহবোধ।

কমলালেবুর গন্ধ সাথে, 

একটি নদী বয়ে চলে- 

সভ্যতারূপে, অবিরাম একাকী!

শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১

ধর্মফুল

 ধর্মফুল

- সাকিব জামাল


তোমার ধর্মফুলের সৌরভে- 

মুগ্ধ যত মানুষ, ততো সুন্দর তুমি, 

ততোটা নিকটবর্তী স্রষ্টার ভালোবাসার।

আর যদি অমানবিকতার সংক্রমণে-

সৌরভ রূপ নেয় দুর্গন্ধে, 

দূরে দূরে থাকবে সবাই।

ঘৃণা জিতে যাবে!

অথচ, জীবনবৃত্তান্ত পড়ে দেখো, 

ঘৃণা নয়, ভালোবাসা অর্জন করাই ছিল-

তোমার ধর্মগুরুর কাজ।



এবার, উত্তর ভেবো, তোমার ধর্মফুল-

সৌরভমাখা নাকি দুর্গন্ধময়?

বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১

ডিয়ার কমরেডস

 ডিয়ার কমরেডস

- সাকিব জামাল


ডিয়ার কমরেডস, দেখো, সবুজ চত্বরগুলো-

ধীরে ধীরে হলদে-তামাটে হয়ে নিশ্চিহ্নপ্রায়।

শোষক একনায়ক ইউক্যালিপ্টাসে ঘিরে ধরেছে!

আলোক অধিকারহীনে ফুটছে না রঙিন ঘাসফুল।

নিরীহ লতা-গুল্মকুঞ্জ অনুর্বর ভূমিতে অসহায়।

হতাশায় ডুবে আছে ছোট ছোট বৃক্ষদল।

পৃথিবীর প্রান্তরে প্রান্তরে-

ইউক্যালিপ্টাস উপড়ে ফেলে, ছুটে চলো তাই-

সবুজ সমাজ রক্ষার দুরন্ত কৃষক হয়ে!

সাম্যতার ভূমিতে বাঁচুক- ঘাস, লতা, গুল্ম, গাছ।

শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১

ত্রয়ী উপন্যাস

 ত্রয়ী উপন্যাস!

- সাকিব জামাল


তোমাকে নিবেদন করেছিলাম-

ভালোবাসার একগুচ্ছ কবিতা।

ফিরে ফিরে তুমি উপহার দিলে- 

কষ্টের গল্পসমগ্র।

সেসব প্রাক্তন কবিতা, 

সেসব প্রাক্তন গল্প,

তোমার বর্তমানের কাছে গোপন রাখা-

কী নিপুন ত্রয়ী উপন্যাস!

শহুরে সাপ এবং মা

 শহুরে সাপ এবং মা!

- সাকিব জামাল


ছেলেবেলায়, দুষ্টুমি শেষে, মায়ের বকা এড়াতে- 

একদিন ঝোপের আড়ালে লুকিয়েছিলাম।

হঠাৎ, দেখি সাপ! 

'মা' বলে চিৎকার করে- 

আবার ফিরে গিয়েছি মায়ের কোলে। নিশ্চিন্তপুর।



এখন শহুরে আবাস, ঝোপজঙ্গল নেই, সাপ আছে!

অথচ, বড়বেলার দুর্ভাগ্য-

মা গ্রামে। কাছে নেই। চিৎকার করে লাভ নেই!

রোজ সাপের কামড় খেয়ে চলছি...

ক'দিন সইতে পারবো, জানি না। চিন্তিত অন্তরপুর।

মিনিংলেস ড্রিম

 মিনিংলেস ড্রিম

- সাকিব জামাল


শরৎ রাত।

আকাশে টুকরো টুকরো শাদা শাদা বরফে'রা- 

ঘিরে রেখেছে ভীষণ সুন্দরী চাঁদ!

আমি এক একলা পেঙ্গুইন, 

বরফরাজ্যে অপটু প্রেমে।

তবুও ধীরে ধীরে হেঁটে এগোচ্ছি, 

প্রায় কাছাকাছি, হঠাৎ 

চন্দ্রাবতীর তুমুল টানে ওঠে জলোচ্ছাস।

ধপাস!

এরপর...

ভোর। 

রোজ সকালে যেভাবে রাঙা চোখে- 

ঘুম ভাঙে একলা আমার,

আজও তার ব্যতিক্রম হয় নি!



--------

কবিতাটি দৈনিক সমকালের কালের খেয়া এ প্রকাশিত।

তালপিঠা আখ্যান

 তালপিঠা আখ্যান

- সাকিব জামাল


বেয়াইসাব কয়, "বেয়াইন, বেরহম ভাদ্রের গরম, 

তাল কি পাকছে? হইছে নরম?

তালপিঠা খামু রাইতের কালে।" 

"হয়, হয়!" বলে বেয়াইন যখন লজ্জায় লাল, 

বেরসিক ভাবী এসে বলে, 

"দেবর, বাড়ি চল। তাল লইছি দুইটা।

তোর ভাইও খাবে আইজ রাইতে তালপিঠা।"

ভাবী আর দেবর যায় ফিরে, গাঁয়ে। 

ধীরে ধীরে নাও চলে,

বেয়াইনসাব ভাসে চোখের জলে!



-------

কবিতাটি দৈনিক জনতা এর সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত।

শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে...

 ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে...

- সাকিব জামাল


ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে-

উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার।

এখানে এরূপ, ওড়ে বহুরূপ- 

শরীর খেকো উপাদান!

ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে-

ইনসমনিয়া, ডিপ্রেশন, দুঃখ হতাশার। 

এখানে এরূপ, ওড়ে বহুরূপ- 

মনোকষ্টের গান!



লোভের ঢাকা'য়- 

দেহ ও মন দুটোই খায় টাকায়!

ডুবে দ্যাখ

 ডুবে দ্যাখ

- সাকিব জামাল


রাত দুপুর। বৃষ্টি নুপুর টাপুর টুপুর। আকাশে মেঘের বাঁধ। 

তবুও ইচ্ছে হলো, দেখবো, পূর্ণ চাঁদ। 

লালনিয়া, বোঝে চোখের ভাষা। বলে, 

চল, নদীর বাঁকে। দেখবি, কী সুন্দর চাঁদ ওঠে জলে!

তারপর, যখন জোছনায় ডুবে গেলাম, 

বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম, 

তখন, ভেসে আসে একতারার মিহি সুর-

ডুবে দ্যাখ দেখি মন...

মৃত্যু মায়াবিনী

 মৃত্যু মায়াবিনী

- সাকিব জামাল


মৃত্যুকে আমি বেশ কাছে থেকে দেখেছি, কয়েকবার।

শান্ত, শুভ্র প্রেমিকার মতো ভীষণ মায়াবিনী।

ভালোবেসে আমাকে জড়িয়ে নিতে চায় বুকে অনন্তকাল।

না, ভৌতিক কোন রূপ নেই তার,

নেই ভয়ঙ্কর কোন কর্কশ স্বর।

কেবল লজ্জাবতীর মতো রহস্যময়তা আছে- 

কাছে আসে আবার আসে না!

তবে সে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অলৌকিক মায়ায়-

একদিন কাছে আসবেই। আলিঙ্গন হবে বিরামহীন প্রেমে!