অপেক্ষা
- সাকিব জামাল
বৃষ্টি হোক অথবা না-হোক!
তোমার অপেক্ষায়, প্রতিদিন, চাতক হয়ে যায়-
এই দু' চোখ!
ক্লান্তি নেই কোনো ভালোবাসার পথচলায়।
দুঃখ অথবা সুখ!
অন্তিমে, এই কপালে, যে ফুল-
ইচ্ছে ফুটুক!
অপেক্ষা
- সাকিব জামাল
বৃষ্টি হোক অথবা না-হোক!
তোমার অপেক্ষায়, প্রতিদিন, চাতক হয়ে যায়-
এই দু' চোখ!
ক্লান্তি নেই কোনো ভালোবাসার পথচলায়।
দুঃখ অথবা সুখ!
অন্তিমে, এই কপালে, যে ফুল-
ইচ্ছে ফুটুক!
পরিচয়পত্র
- সাকিব জামাল
টোকা! অতঃপর শব্দসুর...
বোঝা যায়, মাটির পাত্র
কতোটুকু ভালো তোমার!
গতি! অতঃপর শব্দসুর...
বোঝা যায়, ডপলার ইফেক্ট
কেমন দৌড় তোমার!
মুখের ভাষা, দেহের ভাষা,
এ দুটোই তোমার-
পরিচয়পত্র। যথেষ্ট!
কামিনী ফুল
- সাকিব জামাল
রোদমাখা করোটির বুকে ফোটে কামিনী ফুল,
ভেজার বাহানায়!
তুমি, এসো, রাত বেরাতে-
আকাশের কলসিভরা নদীর জলে।
নিভে যাক দহনকাল আমাদের!
দুই শালিখের ভেজা শরীরে জেগে উঠুক-
অশরীরি প্রেম, মানচিত্রহীন!
বাসা বাঁধবো- বাবার মতো!
- সাকিব জামাল
এই দেহের ডালে ডালে,
বাসা বেঁধেছে-
কিছু রোগ,
কিছু শোক,
কিছু দুঃখ।
সেসব পাখিরা ডাকে প্রতিদিন!
ডেকে ডেকে যেদিন-
অস্থির হবে,
ক্লান্ত হবে,
নির্বাক হবে,
সেদিন ভীষণ মমতায়-
প্রিয় মাটির বুকে,
আমিও বাসা বাঁধবো-
বাবার মতো!
--------
উৎসর্গঃ বাবা নেই যাদের।
দুধশাদা রাতে...
- সাকিব জামাল
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে মিহি জোছনা।
দুধশাদা চাঁদ, ফুল কুড়োনো স্বভাব জাগিয়ে তোলে আমার!
আলতো ছোঁয়ায়, কাঙ্খিত ফুল হাসে লজ্জাবতীর সাজে।
তাঁকায় হংসমিথুন চোখে- অসীম প্রেমে।
আমি উচ্ছল হই-
এক 'গৃহহারা' ধ্যানে!
ঘুরি সারারাত-
আদিম জঙ্গলে!
পেয়ালাভরা জোছনার শরাব,
পান করে করে মাতাল থাকি- হাওয়ার ঘরে!
দ্রব্যদামে দম যায় যায়
- সাকিব জামাল
সবকিছুরই দাম বাড়ে হায়
দাম কমে শুধু মানুষের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
দ্রব্যদামে দম যায় যায়
গরীব দুঃখী মানুষের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
সমাধান নাই, নিয়ন্ত্রণ নাই
কোথাও কোন বাজারের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
দাম নিয়ে মশকরার ছলে
উপদেশ দেয় বিকল্পের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
নেতা, জনতা কেউ জানে না
শেষ কোথায় এই দুঃখের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
আড়ালের গল্প!
- সাকিব জামাল
তুমি বোঝ নি!
বুঝেছে মেঘ, বৃষ্টিরেণু। বুঝেছে নীল আকাশ, রংধনু।
বুঝেছে আর বিকেলের হাওয়ায়!
প্রিয় ক্যাম্পাসে,
একেলা একা বসে, কাটিয়ে দিয়েছি কতোটা সময়-
তোমার অপেক্ষায়।
সময়ের সম্মুখ তীর,
কেড়ে নেয় সেসব দিন। বহতা নদীর সুরে-
চলে যাই আমি দূরে, তুমিও বহুদূরে।
আর দেখা হয় না!
স্বাক্ষী কার্জন। নীরবে চেয়ে থাকে!
প্রাক্তনঃ সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। হঠাৎ হঠাৎ জাগে!
কার্জনের ছায়ায়,
ফিরে ফিরে আসি- শ্রেষ্ঠ অনুভূতির মায়ায়।
কাঁপে তখন নিউরনসমস্ত!
ভাবি,
বন্ধুতার আড়ালে কতো প্রেম-
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় মোমবাতির মতো।
বিবিজানের টেক্কা
- সাকিব জামাল
নিস্তব্ধ রাত। চুপি চুপি যাই আমি-
বিবিজানের ঘরে। চমৎকার! বাবুই পাখির বাসা।
ভেবেছি, মহাজাগতিক প্রেম ছড়ানো এখানে-
জোনাকির দলে দলে আলোয় ভরা।
শরাব পানে সিক্ত কন্ঠে-
আগুন-ধোঁয়ার উল্লাসে যখন মগ্ন হই,
বিবিজান বলে, "মোরে একখান গলার হার দিও!"
পরাবাস্তবতা ছেড়ে-
ফিরে আসি আমি, গ্রহের জমিনে!
দেখি, এখানেও, কেবল টেক্কা চলে-
টাকার উপর টাকার!
দিন নয়, রাতের বাজিমাত- পৃথিবীর বুকে!
খ অথবা প্রাক্তন
- সাকিব জামাল
খ, দিগন্ত ছাপিয়ে তোমার,
রাতের তুমুল অন্ধকারে ভেসে আসে
ফের রজনীগন্ধার সৌরভ। আমি কেঁপে উঠি-
প্রেম ফোবিয়ায়!
ঠিক, একলা পাখি যেমন উড়ে বেড়ায় তোমার বুকে,
একবার নীড় হারিয়েছে যে!
দূরে ডাল খুঁজে পেয়ে হুতোম প্যাঁচা ডাকে।
ভয়ে, তোমায় জড়িয়ে ধরতে চাই আমি!
যদিও রূপ রয়েছে তোমার-
এক আশ্চর্য আশ্রমের,
অথচ, শূন্যতার অসীম নদী!
রক্তজবা
- সাকিব জামাল
রক্তজবা আমায় দারুণভাবে ডাকে-
থরে থরে সাজানো দ্রোহ-লালের ভাঁজে!
কথা হলো, দুজনে একদিন-
এখনকার অস্থির সময় নিয়ে।
হেসে বলে, "এই জনমে-
দ্রোহই ভালো। দ্রোহই আলো।
জ্বলে ওঠো- চোখ জুড়ানো প্রেমে!"
সত্যি, ঠেঙিয়ে দিবো কিন্তু!
- সাকিব জামাল
সত্যি, ঠেঙিয়ে দিবো কিন্তু এবার,
যদি কেউ সাজো নব্য রাজাকার!
না-থেকে দেশের পথে,
যদি চলো ভিনদেশি রথে!
তবে বিদায় নাও, ছেড়ে এ বাংলা আমার।
-------------------------
উৎসর্গঃ কবি আব্দুল হাকিম। (১৬২০-১৬৯০)
চৈত্রযাপন
- সাকিব জামাল
বাতাসে ভাসিয়ে দাও- তোমার অভিমান সকল।
চৈত্র দহনকালে-
বাষ্প হয়ে উড়ে যাক চোখের জল।
তারপর, হাসো! হাসো, একেলা প্রেমে।
একাকিত্ব উপভোগ করো- ভীষণ ভালোবেসে!
তৃপ্ত আত্মার জোড়ে, চৈত্রযাপন শেষে-
তুমিও বলতে পারবে,
"বেশ ভালো আছি, এই একা আমি!"
বাতাসে ভাসিয়ে দাও- তোমার অভিমান সকল।।
একগুচ্ছ হাইকু
- সাকিব জামাল
১.
বুকে এখন,
ফাটা বাঙ্গির মতো-
কষ্ট লগন!
২.
চৈতালি দিনঃ
সিক্ত প্রেম হাওয়া,
বাষ্পে বিলীন!
৩.
শিমুলে রঙ,
দ্রোহ প্রেমিক খোঁজে-
হারানো ঢঙ!
৪.
ফাগুন শেষে,
কর্পুরে প্রেম মেশে-
দহন গ্রীষ্মে!
৫.
আউলা মন,
বসন্তেও বেদনা
নিত্য যখন!
মায়া
- সাকিব জামাল
দক্ষিণে টানে উত্তর, উত্তরে টানে দক্ষিণ।
দূরে যাই, কাছে আসি। কেন? 'প্রশ্ন' উত্তরবিহীন!
মনোবিজ্ঞান বলে মনস্তাত্ত্বিক, বায়োলজি কয় জৈবিক।
নৃবিজ্ঞান ধরে আদিম সুর, ইতিহাসে- প্রাগৈতিহাসিক।
দক্ষিণে টানে উত্তর, উত্তরে টানে দক্ষিণ।
অথচ, দুচোখে ভরা এখনো না-দেখার ঋণ!
আমি এতসব বুঝি না!
তোমাকে বলি, ভালোবেসে-
আমাকে ভাঙো সেমি-কন্ডাক্টরের মতো,
হয়ে উঠি আরও এনার্জেটিক। প্রেমে! মায়ায়!