রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪

আধ্যাত্মিক ময়ূর

 আধ্যাত্মিক ময়ূর

- সাকিব জামাল

জ্বলজ্বল করে অলৌকিক জল। মস্তিষ্কজুড়ে নাঁচে যমুনার প্রেম। হাওয়াকুঞ্জে অভিসার বাসনা। অনাগত অনুজের আহ্বানে, সপ্তর্ষি মন্ডলে গান তোলে আধ্যাত্মিক ময়ূর- অক্লান্ত যৌবনের আয়োজনে!

প্রকৃতির পুঁথি পাঠ চলে- নদী, পাহাড়, সমতলে। গুহা সভ্যতা আনন্দে হাসে। আগামী গ্রহিক সভ্যতার স্বপ্ন দেখে আধুনিক সমকাল। আমি স্থানান্তরিত করি আমাকে অন্য জনমে! বিনিময়ে, তুমিই আমার আনন্দময়ী সেই সত্তরটি ফুল!

হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

 হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

- সাকিব জামাল


শীতার্ত পাখিসব, ডেকে ওঠো

ডেকে ওঠো কাঙ্খিত বসন্তদিনের কামনায়।

ঝরাপাতার মর্মরধ্বনি রূপান্তরিত হোক 

নতুনের গানে গানে, শ্লোগানে!

চাপাকলির খোলস ভেঙে 

ফুলেরা ফুটে ওঠো অবিরাম গণতান্ত্রিক সৌরভে!

মুগ্ধতার এই সমস্ত কোলাহলে 

নদীরা বয়ে চলো উল্লাসিত স্রোতে

কবিতামাতৃক বাংলাদেশে- ইচ্ছেখুশি!

শীতল সম্পর্কসব উষ্ণ হোক।

সম্ভবনাময় একটু উষ্ণতার জন্যে

হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল

 ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল

- সাকিব জামাল


হিম হিম বাতাসে, কেমনতর আগুনে পুড়ে যায় মন!

ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল এই সময়ে, 

প্রজাপতি ডানার চাদরে উষ্ণতার মায়া

রাত্রির প্রহরে তীব্র হয় যখন। 

চোখে চোখে গাঢ় বিরহে কুয়াশার জল

মুছে দাও, মুছে দাও যুগপথ ওমে। 

তারপর ভোর হোক। 

ভোর হোক আকাঙ্খার আকাশে 

সূর্যোদয়ের সফল গানে- প্রেমে এবং সংবিধানে!

পুড়ছি তোর প্রেমে!

 পুড়ছি তোর প্রেমে!

- সাকিব জামাল


প্রেমের আগুনে পুড়ে

বিচ্ছিন্ন ফানুস হয়ে উড়ে গেছি দূরে।

দগ্ধ মন ভর্তি এখন 

একাকীত্বের বার্ন ইউনিটে, 

ভীষণ যন্ত্রণা কাতর!

ও ডাক্তার, 

বিরহ দহন আমার 

নেভানোর মায়া নেই কী তোর?

স্রোত

 স্রোত

- সাকিব জামাল


নিরিবিলি গভীর রাতে, নদী তোলে গান

অঙ্গে অঙ্গে ছলাৎ ছলাৎ সুরে।

জলের ছোঁয়ায় জল, 

বিগ ব্যাং রহস্য নিয়ে বেড়ায় ঘুরে।

পৃথিবীর বুকে-

শাখা নদী হয় জাতক।

কী দারুণ জেনেটিক্স কেরামতি!

স্রোতে স্রোতে জলের বাড়ে গতি...

আহ্...সুখ!

 আহ্...সুখ!

- সাকিব জামাল


ওহ্ সময়, ওহ্ প্রিয়তমা

শৈশবে মেলেনি সুখ, কৈশরেও না।

যৌবনে ফোটেনি ওই ফুল

জীবনের মৌবনে!

বৃদ্ধবেলায়

তা...না...না...

সমস্ত সুখ আমার, তাই

মায়াবী মাটির কাছে

রেখেছি জমা।

যদি দেখা হয়, হাওয়া'র খেলা শেষে!

--------

কবিতাটি দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন এ প্রকাশিত।

এইসব শীতবৃষ্টি এবং কয়েকটি কাক

 এইসব শীতবৃষ্টি এবং কয়েকটি কাক

- সাকিব জামাল


এইসব শীতবৃষ্টির কালে, নীড়হারা পাখিরা উড়ে বেড়ায়। 

ডাস্টবিনে রাখা চোখে অন্ধকার নামে,

জলস্রোতে ভেসে যায় রুটি-রুজির শেষ ভরসা! 

নাগরিক সমাজ ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ে 

সামসময়িক রাজনৈতিক কোলাহলে!

অথচ উষ্ণতার কোন খোঁজ খবর মেলে না

দারিদ্র্যসীমার নিচু রেখা বরাবর। 

কী দুর্ভাগ্য এই জনমের! কয়েকটি কাক

তখনও ভুণা খিচুড়ি'র পঙতি সাজায় বেপরোয়া!

বুধবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৪

ধ্যানবিন্দু

 ধ্যানবিন্দু

- সাকিব জামাল


আমার পাশে জায়নামাজে তোমাকে চাই!

তুমি কথা কও নিরবে। তোমার কথার 

রহস্যপথ ধরে আমি ধ্যান করি; 

ধ্যান করি আকাশে ওড়বার। 

নীল শূণ্যতার মাঝে 

কী দারুণ পালঙ্ক এক! 

থাকতে চাই ওখানে বাকি কাল।

সম্ভব? সম্ভব না? দ্বিধায় ডুবে রই!

ডুবে যাই, আমি শুধু ডুবে যাই...

আমার পাশে জায়নামাজে তোমাকে চাই!

গোলাপ জ্বালা

 গোলাপ জ্বালা

- সাকিব জামাল


বকুল ফুলে কেমন যেন 

বিরহ ঘ্রাণ পাই!

মালা নয় প্রিয়, গোলাপের 

জ্বালা দিও তাই!

কাঁটায়, জ্বালায় 

তেমন ভয় নেই আমার 

সইতে পারি বেশ!

তবু থাকুক প্রেম

বাঁচুক প্রেম

হোক বিরহ নিরুদ্দেশ।

সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৪

নাগরিক পত্র

 নাগরিক পত্র

- সাকিব জামাল


তোমার চোখে তাঁকিয়ে-

শব্দহীন কত কথা বলে যাই আমি!

তুমি বুঝে নিও বাতাসের কম্পন।

বুঝে নিও ডপলার ইফেক্ট। 

যদি তুমি চাও, আমার চুপকথারা 

মুখর হবে স্বাধীনতার গানে 

ভালোবাসার রাজপথে!

পাশাপাশি হেটে যাব আমরা বহুদূর

সুশাসনের স্মার্ট সড়কে!

ছুটি

 ছুটি

- সাকিব জামাল


তোমার প্রিয় পথে উড়ে যাও পাখি, 

উড়ে যাও দূরে, যত খুশি উড়ে যাও।

বেলা শুরুর গানের কথা ভুলে যাও, 

ভুলে যাও দ্রুত, যত ইচ্ছে ভুলে যাও।



তবু মনে রাখবো আমি, মনে রাখবো একা,  

সবুজ বৃক্ষ। খড়কুটোর ওম। যৌথ ভ্রমন। 

মনে রাখবো, দিনের খুনসুটি। রাতের কূজন। 

বসন্তকাল। আর হংস-মিথুনের গল্প কথা!



অতঃপর, মাটির মায়ায়, একদিন

মিশে যাবো সময়ের প্রান্তিক ঘাসে,

একদম অভিযোগহীন!

হবে না দেখা আর গোলাপের সাথে!

--------

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

ফিলিস্তিন

 ফিলিস্তিন

- সাকিব জামাল


টুকরো টুকরো পাথরে বোনা স্বাধীনতার স্বপ্ন 

কচি ঘাসের গায়ে লেগে থাকা রক্তের দাগ

তোমরা বোঝ না? 

তোমরা বোঝ না, কতোটা অধিকারহারা হলে

আপন সন্তানের মৃতমুখ দেখেও

বাবা বলে ওঠেন, "হে আরশের মালিক,

তবুও আমার পরিচয়টুকু নিশ্চিত করো!"


অথচ তোমরা পাথরের টুকরোগুলোকে 

ভয়ঙ্কর বলো বোমারু বিমানের চেয়ে!

তাদের পক্ষে জলসা বসাও। সংঘ করো।

সন্ত্রাসবাদের তকমা দিয়ে- 

অস্বীকার করো স্বাধীনতার সংগ্রাম।

অন্যান্য মানবাধিকারের হিসাব দূরে থাক!

শুধু এতোটুকু হিসাব করো,

কে কতজন মানুষ মেরেছে, 

কে কতোটা দখলবাজ?


তবে, জেনে রেখো, একদিন এইসব পবিত্র পাথরের টুকরোই

আল-আকসাকে মুক্ত করার জন্য যথেষ্ট হবে!

--------

কবিতাটি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণে প্রকাশিত।