বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩

স্বাক্ষী শরৎকাল

 স্বাক্ষী শরৎকাল

- সাকিব জামাল


কোন এক শুক্রবার, পুরোটা বিকেল 

শাদারঙ কাশফুল আর

          নীল প্রজাপতির আকাশ 

মিলেমিশে হয়েছিল একাকার। 

ভালোবেসে দিনান্তে,

          সেদিন হেসেছিলো চাঁদ। 

ছিল নদী, পাখির গান। জয়ন্ত উৎসব।

স্বাক্ষী শরৎকাল!

কী আশ্চর্য! এখনও শরৎ আসে 

অথচ বিশেষ বিরহ।

সব বিকেল চুপচাপ! স্বাক্ষী নিরুত্তর!

চন্দ্রকথা

 চন্দ্রকথা

- সাকিব জামাল


পূর্ণ চাঁদে-

জল বাড়ে। ছল বাড়ে!

বাড়ে ফুলের ঘ্রাণ। 

সাধক ক্ষ্যাপা প্রেমিক হয়।

চাতক পায় প্রাণ।

আর আমি?

ভ্রমের সুরে গাই,

চলো পালায়ে যাই!

তিনটি হাইকু

 তিনটি হাইকু

- সাকিব জামাল


১.

এসো নাগিন,

রাতকে ভালোবেসে

বাজাবো বীণ!



২.

দেহস্থ নদী:

চন্দ্রবতীর প্রেমে-

জোয়ারবতী!



৩.

কুফা বরাত,

বিরহে ক্ষয়ে যায়

ফাগুনে চাঁদ!

রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩

রিভলভিং চেয়ার

 রিভলভিং চেয়ার

- সাকিব জামাল


ভেবেছিলাম ফিক্সড পলিসি ফলোয়ার

অথচ চরিত্র সূর্যমুখী! ভৌগোলিক সূত্রে-

অদ্ভুত অস্থিতিশীল মন। 

দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য ইকোনোমিক ব্যাকরণে 

সাজানো রিভলভিং চেয়ার।

বড়'রা বোধহয়, এমনই হয়! 

দিন শেষে, ক্লান্ত সব 'এলডিসি' প্রাণ!

রাঘব বোয়াল

 রাঘব বোয়াল

- সাকিব জামাল


তখন বয়স আমার হয়তো ষোল কি সতেরো!

এক বিকেলে বললো দাদাভাই,

চলো, আমরা নদীতে মাছ ধরতে যাই। 

ভীষণ মজা হবে! জাল আর নাও বের করো।

সেই বিকেলে জাল টেনে পেলাম কিছু চুনোপুটি

খানিকটা জাল গেল ছিড়ে।

দাদাভাইকে জিজ্ঞেস করলাম,

এখানে হলো কী রে!

জবাব এলো, বড় একটি বোয়াল বোধহয়

পড়েছিল ধরা। আহা, গেছে বেরিয়ে!

"চুনোপুটি ধরা খায়,

রাঘব বোয়াল বেরিয়ে যায়!"

সেই গল্প, এই স্মৃতি এখনও আমার, 

জীবন চলার বাঁকে বাঁকে মনে পড়ে বারবার।

হৃদয়পোড়া গন্ধ

 হৃদয়পোড়া গন্ধ

- সাকিব জামাল


হৃদয়পোড়া গন্ধ আমার, মেখে দিয়েছি শিউলি ফুলের গায়।

কোন এক সকালে তুমি এসে দেখো

ক্যামন বেদনা বিধুর চোখে চেয়ে আছি

বিচ্ছিন্নতাবোধের একেলা জনমে!

লোনা হয়ে গেছে শিশিরের জল।

বিষন্ন সবুজ প্রান্তরে এখন, 

কেউ মালা গাঁথার বায়না ধরে না।

অন্ধকারে ছেড়ে যাবার উৎসবে- ক্লান্ত শাদা মনফুল আমার।

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গল্পহীন সন্ধ্যার কাব্য

 গল্পহীন সন্ধ্যার কাব্য

- সাকিব জামাল


সন্ধ্যাবেলায় তোমার সাথে গল্প করবো বলে

সকাল থেকে পাখির চোখে চেয়ে আছি



প্রেমের পিদিম হঠাৎ মেঘের আড়ালে ঢেকে যায়

অন্ধকার অনুভব করি বুকে। বুঝতে পারি- 

কেউ কাছে আসবে না এই দুর্যোগপূর্ণ জলহাওয়ায়

অদূরে একটি কাঠঠোকরা উদ্ভ্রান্তপ্রায়

ঝড়ে ভেঙে গেছে আশ্রয়বৃক্ষ।



হতাশা ও উদ্বাস্তু জীবনের উদ্বোধন হলো,

আমার ও কাঠঠোকরার গল্পহীন সন্ধ্যায়।

--------

কবিতাটি দৈনিক সমকাল এর কালের খেয়ায় প্রকাশিত।

এই শ্রাবণে

 এই শ্রাবণে

- সাকিব জামাল


এই শ্রাবণে, তোর দেহে হাসনাহেনার ঘ্রাণ। 

রাত বেরাতে পাগলপ্রায় কৃষ্ণ মেঘের প্রাণ।।



চাইলে তুই, তুমুল বৃষ্টি- 

নামাতে পারিস আজ,

বিজলীর চমকে সাজুক বাসর, 

নেই একটুকুও লাজ!

টাপুর টুপুর সুরে সুরে, হোক বাদল দিনের গান।।



বৃষ্টির শেষে মিষ্টি হেসে

আসুক সোনার একটা ভোর,

শাড়ির ভাঁজে আঁকিবুঁকি আয়

রংধনুটা ফের তোর!

আকাশজুড়ে উঠুক জমে শুধু ভালোবাসার গান।।

প্রিয় সন্ধ্যাটি ডুবে গেছে রাত্রির মোহনায়

 প্রিয় সন্ধ্যাটি ডুবে গেছে রাত্রির মোহনায়

- সাকিব জামাল


একদিন সন্ধ্যায়, আমার নীল আকাশের বুকে 

দিগন্ত দূরত্ব উপেক্ষা করে

সিঁদুর রঙ জ্বলে ওঠে

মিলনের গানে।

চোখে চোখে উত্তাল সমুদ্র ঢেউ নিভে যায়।

সেই সন্ধ্যায়, এই জমিনে স্বর্গ নামে

আর হুলস্থুল বিরহের স্থবিরতা ঝেড়ে

গণতান্ত্রিক প্রণয়ে-

ঠোঁটে ঠোঁটে শাদা পায়রার গল্প উড়ে বেড়ায়!



অথচ, এখন, থৈ থৈ অন্ধকার স্রোত 

আমার নদীমাতৃক ঠিকানায়।

প্রিয় সন্ধ্যাটি ডুবে গেছে রাত্রির মোহনায়!

তোমার চোখে আমার আরশিনগরের পথ!

 তোমার চোখে আমার আরশিনগরের পথ!

- সাকিব জামাল


তোমার চোখে তাঁকিয়ে আর ফিরে আসতে পারি নি বাড়ি। 

কী আজব এক পথে হারিয়ে গেলাম তারপর!

পথের শেষ খোঁজবার নেশায়- 

অনন্ত দিওয়ানা হয়েছি, আস্তানা মেলেনি!

অথচ, এখনও প্রজাপতিরা ওড়ে,

আমি ওড়বার সাহস পাই না।

নদীরা ছুটে চলে,

আমি চলবার সাহস পাই না।

প্রেমের ছোঁয়ায়-

ভয়ের এই ভ্রমটুকু মুছে দেবার শক্তি আছে তোমার?

তোমার চোখেই তাঁকিয়ে আছি। সিদরাতুল মুনতাহা পার করে-

আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো তুমি, অসীম প্রশান্তির পথ ধরে।

বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩

অতঃপর অন্ধকার

অতঃপর অন্ধকার 
- সাকিব জামাল

'নো ট্রাস্ট' এর এই যুগে, আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম
তোমার ভালোবাসায়, প্রতিক্রিয়াজ্ঞান ভুলে!
জ্বলেছিল মোমবাতি মনপাগলা ঘরে।
ধুপধুনোর ঘ্রাণ ছিল শ্বাস-প্রশ্বাসে। 
অথচ তুমি কামনার ডানা মেলেছো
নিরীহ পাখি শিকারে!
ছক মোতাবেক রাজকাহন শিখেছো বেশ।
রপ্ত করেছো ইনোভেটিভ অর্থনীতির রকমফের।
এলার্জিক ইফেক্টে, এখন
দম বন্ধ আমার। ঘোর অন্ধকার। বিব্রতকর ক্লেশ!

মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩

গেরুয়া রঙের রাতে

 গেরুয়া রঙের রাতে

- সাকিব জামাল


যখন বৃষ্টি নামে রাতে, 

গেরুয়া রঙের কদম ফোটে মনে।

রেণুময় ভেজা বাতাস বয়ে চলে

ভীষণ এলোমেলো- নীল আকাশের বারান্দায়!

এমন সময়ে তুমি, 

যদি খুলে দাও শাড়ির জানালা তোমার, 

দেখবে, একটি চড়ুই, ভাঙা বাসার বেদনা নিয়ে-

এসেছে তোমার ঘরে, অসহায় চোখে!

ইচ্ছে হলে, এই বর্ষায়, বীজ বুনতে পারো- 

আউশ ধানের ক্ষেতে!

একদা বৃষ্টির বারামখানায়

 একদা বৃষ্টির বারামখানায়

- সাকিব জামাল


রুফটপ মেঘের উপরে, বৃষ্টির বারামখানা।

ঝিকিমিকি বিজলীবাতি জ্বলে। 

একখণ্ড কালো বরফ চেয়ারে- 

আমি বসে আছি পেখম মেলে! 

সন্ধ্যায় বলেছিলো মন, কবিতা আসবে ঘনরাতে। 

অপেক্ষায় আছি। হঠাৎ দেখি, জলের আগুনে,

দুটো চড়ুই ভস্ম হয়ে গেলো-

ক্ষণকালের প্রেমে।

কী ভয়ঙ্কর সুন্দর যুদ্ধক্ষেত্র!

নফসঃ নেগেটিভ/পজিটিভ/স্পার্ক।

ঈশ্বরকে বললাম, আমাকে লুকিয়ে নাও-

মেঘের কফিনে। নুর খুঁজি বাকি জীবন!

সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

বিরহ বিলাস

 বিরহ বিলাস!

- সাকিব জামাল


নীড়হারা পাখিদের সাথে,

বিরহের উৎসবে শামিল হবো বলে-

রাত জেগে থাকি, একা!

ধীরে ধীরে রাত, একাকীত্বের স্পর্শে- 

উত্তেজিত হয়! আসে জোনাকির দল।

পাখিরা জলসা বসায় আমার ঘরে।

বিধবা নারীর মতো নিজেকে ভেঙেচুরে- 

সময় গভীর হয়। তারপর, 

গাঢ় আঁধারে, দুঃখতমা'র হাতে-

শরাব পানে তুমুল মাতাল হই আমি!

-------

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

ভিন্নরকমের ভিনাস্ট্রাফোবিয়া

 ভিন্নরকমের ভিনাস্ট্রাফোবিয়া

- সাকিব জামাল


অথচ কেবল তুমি সামনে এলে, ভিনাস্ট্রাফোবিয়ায়-

আমি ভুগি সাইকোলজিকাল অ্যাফাসিয়ায়!

মনের কথা মনে থাকে, মস্তিষ্কজুড়ে- 

শুধু কল্পনার কোলাজ ঘুরপাক খায়।



একদিনের কথা বলি...



আমাদের দেখা হয়েছিল, অলস বৃষ্টির দুপুরে।

হতে পারতো তুমুল কথার উৎসব!

কিন্তু সবকিছু ভুলে, আমি ডুবেছিলাম-

যুগল গানে ময়ূরীর মায়াবী নাচে।

কদমফুল ঢেকে রাখা পাতার খাঁজে।

টিনএইজ ডাহুকদের লুকিয়ে যাওয়া বনে!



কতো স্বপ্ন, কতো প্রেম, কতো সঙ্গমচিত্র

আমাদের চোখের সামনে ছিল, 

তবুও মুখ খোলেনি- আমার চুপকথারা!

শরাবান তহুরা

 শরাবান তহুরা

- সাকিব জামাল


আমি চাতক এক, তৃষ্ণার্ত ভীষণ!

তোমার কাছে যে নহরসব আছে, প্রিয়তমা, 

সেখানে করো বৃষ্টির আয়োজন।

সেই শরাবে চুমুকে চুমুকে-

মাতাল হয়ে আমি বাঁচি কিছুক্ষণ!

তারপর, না-হয় তোমার জলসা ঘরে,

ইচ্ছেখুশি পাশা খেলো। বাজি থাকলো- 

আমার লালন সাঁইজি'র মন!

প্রেমঃ ওভার দ্য পিরিয়ড, দীর্ঘশ্বাস!

 প্রেমঃ ওভার দ্য পিরিয়ড, দীর্ঘশ্বাস!

- সাকিব জামাল


বোধকরি, প্রেমেও আছে অ্যামরটাইজেশন!

যদি এসেট ধরি, সমপরিমাণ লায়াবেলিটিও থাকার কথা।

ক্ষণে ক্ষণে তাই বিরহ জমে মনে,

ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় প্রেম। 

বয়ে যায় যুগল ঢেউ, স্রোতহীনতার মোহনায়-

একাকীত্বের তুমুল আয়োজনে।

ওভার দ্য পিরিয়ড, দীর্ঘশ্বাস।

উদ্বাস্তু বুকে চলে ফের একেলা পাখির কীর্তন!

------

কবিতাটি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণে প্রকাশিত।

প্রতিনায়ক

 প্রতিনায়ক

- সাকিব জামাল


রোদফাটা আকাশে আমার, মেঘের ভাসান হও তুমি প্রিয়। 

ফোটাও বৃষ্টিফুল! ভীষণ ব্যাকুল মন ভেসে ভেসে যাক  

বেহুলার কোলে- জলের গানে গানে। 

প্রাণে লুকানো বিরহের নীলপদ্ম,  

ক্লান্ত জনম যার, তার বাসরে নেচে উঠুক দ্রোহ মুকুল

ভেলার বুকে জ্বলুক বজ্রমুষ্টিবদ্ধ জীবনের জয়- প্রেমে।

মনসা নত হোক প্রতিনায়কের বৈজ্ঞানিক কৌশলে!

শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

একই রকম থাকে না দিন!

 একই রকম থাকে না দিন!

- সাকিব জামাল


একই রকম থাকে না দিন!

সকালে দেখি- রোদ্দুর ভীষণ, 

বিকেলে আঁকি- 

মেঘের সমুদ্র, বৃষ্টিপ্রবণ। 

একই রকম থাকে না দিন!

কালবেলা

 কালবেলা

- সাকিব জামাল


সুচিন্তা যখন, রাজনৈতিক উত্তাপে- 

বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, সময়ের হাওয়ায় 

নেমে আসে তখন কালবৈশাখির ঘন অন্ধকার।  

শাদা পালকের পাখিসব থাকে দূরে দূরে

পলাতকা জনঅধিকারের মতন।

সুযোগ পেয়ে ফিরে ফিরে আসে- 

তোষামোদি চড়ুইয়েরদল উৎসব মেজাজে

বেসুরো কাকেরা এসে দাড়ায় কার্ণিশে ফের

আর স্বদেশ মানচিত্র মায়াহীন হয়ে পড়ে থাকে

গুমোট আবহাওয়া অধিদপ্তরে।

বোঝা দায়, এই সময়ে-

কত নম্বর বিপদ সংকেত কখন বয়ে যায়!

দুঃখ মোছার কোন ইরেজার নেই!

 দুঃখ মোছার কোন ইরেজার নেই!

- সাকিব জামাল


প্রেমে পড়ার কালে, 

আমি তাকে ভালোবাসার কথা বলিনি।

বলেছিলাম, আমার মনে অনেক দুঃখ!

সে বলেছিল, তার কাছে ইরেজার আছে। 

দুঃখ মুছে দেবার ইরেজার!

আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম। 

শাদা ক্যানভাসে এঁকেছিলাম- 

ভালোবাসার ছবি। পেন্সিল স্কেচ।

জীবনের চিত্রকলায়-

অর্থনীতির ফাংগাস আক্রমণ স্বাভাবিক।

আমাদেরও ব্যতিক্রম ঘটেনি!

ইরেজার ব্যবহৃত হলো-

ভালোবাসা মুছে দেবার কাজে! 

দুঃখ রয়ে গেল। স্বভাবতই, 

এখন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-

দুঃখ মোছার কোন ইরেজার নেই!

--------

কবিতাটি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ এ প্রকাশিত।

শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

তখন আমি ঘুড়ি উড়াতাম, তুমি ওড়াতে শাড়ি!

তখন আমি ঘুড়ি উড়াতাম, তুমি ওড়াতে শাড়ি!
- সাকিব জামাল

বৃষ্টির মায়ায়, শাড়ি আর ঘুড়ি এক হাওয়ায় উড়ে যায়!
অথচ বেদনার বারান্দায়- 
আমি এখন শূণ্যে ভাসি। কৃষ্ণবর্ণ সময়। 
মনে লয়, ব্লাক হোল।
বুঝিনি, কীসের টানে-
প্রেমিক টুকরো টুকরো হতে জানে?
বুঝিনি, কী মোহ থাকে- 
প্রথম প্রাক্তনে!
বয়স বাড়ে, মস্তিষ্কের এত এত সেল ড্যামেজ হয়
তবুও বৃষ্টির দৃশ্য লিখে রাখে নিউরন।
অলৌকিক ক্যানভাসে- 
অক্ষত উচ্চ মাধ্যমিক বিকেল। 
তখন আমি ঘুড়ি উড়াতাম, তুমি ওড়াতে শাড়ি!

বৈশাখে ফোটে আনন্দফুল

 বৈশাখে ফোটে আনন্দফুল

- সাকিব জামাল


নতুন ধানের ঘ্রাণে, 

বৈশাখে ফোটে আনন্দফুল কৃষ্ণাণীর মনে। 

কৃষক বাহানা খোঁজে- ভ্রমর হবে আবার! 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যান্ত্রিকতা পাশ কাটিয়ে- 

রাতের নির্জনে, ক্লান্তিহীন ডুয়েট গানে,

মাটির স্পর্শে উর্বর হয় মাটি।

আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে প্রতিধ্বনি করে-

দুই ফসলের মাঠে! 

সভ্যতার সৌন্দর্য্য বেড়ে ওঠে-

মাটির মায়ায়, স্বপ্নীল আগামীর পথে।

মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩

তুমি কোন মাটির তৈরি গো

তুমি কোন মাটির তৈরি গো

- সাকিব জামাল

কেটে গেল বৈশাখি লগন। 
অথচ, ফোটেনি ফুল তোমার মনে!
জানতে ইচ্ছে হয় ভীষণ, 
তুমি কোন মাটির তৈরি গো?


আমি তো জানতাম, বাংলার মাটি উর্বর বেশ।
জানতাম, এখানকার প্রজাপতিরা নদীও চেনে!


যেদিকে তাকিয়েছি, দেখেছি একসময়, 
পলিমাটির বুকে-
শুয়ে থাকা লালটিপ পড়া কুসুমদল।
দেখেছি, সময়ের সঙ্গমে- 
সভ্যতা নির্মিতি'র দ্বিধাহীন অসংখ্য ভাস্কর।


আজ, সূর্য ওঠে না তোমার? 
ভুলে গেছ রুদ্রের গান?
তুমি কোন মাটির তৈরি গো?
------
উৎসর্গঃ রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। 
---------
কবিতাটি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণে প্রকাশিত।

চৈত্রসংক্রান্তি

 

চৈত্রসংক্রান্তি

আবীররাঙা ক্ষণ শুরু হবার সাথে সাথে,
বছরান্তে, চৈতালি সন্ধ্যায়-
দিগন্ত বিস্তৃত সব নীল মুছে যাক তোমার।
রাতে রাতেই শেষ হোক অন্ধকারকাল!


আসছে নতুন ভোরে, মৌঘ্রানে-
তোমার কপালে ফুটুক সৌভাগ্যের বাহারি ফুল।
বিষন্ন প্রহরসমস্ত, ঝেড়ে ফেলার প্রত্যয়ে,
হৃদয়ে জ্বলুক আরও আরও লাল শিমুল!


অতঃপর সূর্যের ডানা মেলে,
তুমি উড়ে চলো! গেয়ে ওঠো এগিয়ে যাবার গান।
সোনালী পালকে, আগামীর সময়সকল,
হোক তোমার স্বপ্ন সমান- উচ্ছাসে বহমান!


আর্তনাদ

 আর্তনাদ

- সাকিব জামাল


যতদূর চোখ যায় আমার, দেখি বেদনার নীল আকাশ!

এলোমেলো বাতাসে, জমা রাখছি যতোসব দীর্ঘশ্বাস!

হয়তো, একদিন তুমি আকাশ দেখবে।

প্রিয় প্রাসাদের জানালা খুলে- 

নেবে নাগরিক বাতাসের স্বাদ।

সেদিন আকাশ বলে দিবে, 

নীলকন্ঠ প্রেমিকের মনের গান

কেমন শনশন ঝড়ো সুরে গায়- বিরামহীন। তপ্ত তমসায়!

-------

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

বৈশাখে, মেঘের আঁচলে

 বৈশাখে, মেঘের আঁচলে...

- সাকিব জামাল


যৌবনা বৈশাখে, সোনারাঙা ফসল ওঠার কালে, 

ইচ্ছে আছে, ঝড়ের রাতে লুকিয়ে যাবো একদিন- 

দুরন্ত মেঘের আঁচলে, প্রেমে!

তুমি একটু শাড়ি পড়ো।

নীলের সাথে বন্ধুতা গড়ি খানিক। 

তারপর, হাতচুড়ির গা বেয়ে বেয়ে-

মুক্তোর দানা হয়ে ঝরে পরবো, 

যদি হাত বাড়াও!

আপত্তি নেই, তোমার আনন্দ হাসির সুরে, 

বিলীন হয়ে যাক অস্তিত্ব আমার।

মনে রেখো, ফিনিক্স পাখির কথা। আর

বারবার বৈশাখও আসে দক্ষ কৃষকের মাঠে!

প্রবাহমান কাল

 প্রবাহমান কাল

- সাকিব জামাল


কথা রাখেনি, দখিনা হাওয়া!

সখির সৌরভ আসেনি- আমার দেশে।

যেমন ছিল শীতার্ত প্রাণ, 

তেমন তেমনই আছে।

চুপ চুপ কোকিল, নেই গান আর,

এখনও এখানে বহুমাত্রিক আঁধার!



উৎসবহীন বসন্তদিন!

ফাল্গুনের তপ্ত আগুনে পোড়া মন।

শিমুলরাঙা চৈতালি চোখে- 

বিরহে নামে লোনা জলের প্রসবন।



এইতো প্রেম, আমাদের প্রেমঃ

এক ঋতুতে ফোটে ফুল, অন্যকালে যায় ঝরে!

স্বাধীনতার গান

 স্বাধীনতার গান

- সাকিব জামাল


স্বাধীনতার মানে, 

জানে বনের পাখি জানে!

ইচ্ছে খুশি-           

      উড়তে পারে, ঘুরতে পারে, 

গাইতে পারে গান।

আমার কাছে ভীষণ প্রিয়- 

পাখির সংবিধান!



পাখিদের দেখাদেখি,

লাল সবুজের ছবি আঁকি।

হবো আমি-           

      মুক্ত ভূমির মুক্ত পাখি,

স্বাধীনচেতা প্রাণ।

পাখির মতো গাইবো আমি-

স্বাধীনতার গান!

রবিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৩

প্রেমের কাফেলা

প্রেমের কাফেলা
- সাকিব জামাল

কামনার প্রাচীর পেরিয়ে প্রিয়তম প্রান্তরে
যাচ্ছি আমি। ভালোবাসার গন্তব্য বহুদূর। 
যতদূরে থাকে 'মুহিব্বি' আমার,
থাকে মায়াবী রোদ্দুর!
জানি, তোমার শহরেও হয়ত
মেঘলা দিনকাল এখন।
চলছে মন খারাপের
তুমুল সব আয়োজন!
এসো, সিদরাতুল মুনতাহা'র গল্প
শুনে শুনে, উড়িয়ে দেবো দুর্দিন-
শিমুল তুলোর মতো। সঙ্গী হবে? 
হয় হোক পথটুকু আমাদের যতটা কঠিন!

ঘাস বৃত্তান্ত

 ঘাস বৃত্তান্ত

- সাকিব জামাল


আমি ঘাস। ছোট বড় ঘাস। 

আমায়, ছাগলে খায়। 

গরুতে খায়...

মাঝেমধ্যে দুষ্ট নেতারাও খায়!



আমি ঘাস। ছোট বড় ঘাস। তবে,

ইচ্ছে আছে, পরজনমে- মশা হবো!

ছাগল কামড়াবো। 

গরু কামড়াবো।

সুযোগ পেলে-

সবার সাথেই শোধবোধ মেটাবো!

ক্যামোফ্লাজ

 ক্যামোফ্লাজ

- সাকিব জামাল


শাড়ির আঁচলে লুকিয়ে রাখে

বিরহ কিতাব, সই!

অবিরত পাঠে ক্লান্ত হয়ে

শূণ্যে ডুবে রই!

শূন্যতার মাঝে চেয়ে দেখি

এক শালিকের মুখ,

এলোমেলো নীতির বাতাস

ভাসিয়ে নেয় সুখ!

একটু দূরে অভিজাত ঘরে

আনন্দে নাঁচে চড়ুই, 

আমার শালিকের রূপ বদলে

চড়ুই হলো দুই!

তারা জোট বেঁধেছে দেহে দেহে

মন রেখে তেপান্তর,

আমি হলাম প্রবাস পথিক

আহ্! কতোদিন প্রাণখুলে বাজার করি না!

 আহ্! কতোদিন প্রাণখুলে বাজার করি না!

- সাকিব জামাল


প্রেমিকার দেয়া রুমালের মতন-

যতক্ষণ থাকো কাছে, বেশ থাকি।

একটু শূণ্যতা অনুভবে, ভুগি ফেইক ডিজিজে!

মাথা ভনভন করে, দৌড় মারি নিউরোসাইন্স হাসপাতালে।

অথচ, কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন, ভালোই আছেন! 

ধীরে ধীরে হেটে আসি-

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ভাবি, মহাবিশ্ব কি একটাই?

নাকি আরও পৃথিবী আছে?

কারেন্সি ফ্রি পৃথিবী! ওয়ার ফ্রি পৃথিবী!

ভাবতে ভাবতে ঝাপসা চোখে, দেখি, 

হঠাৎ আমার নিজের ছায়াটাই মাটিতে নাই।

বুঝে ফেলি, জাদুবাস্তবতায়-

টাকার উত্তাপে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে শুদ্ধ সময়।

অচিন এক দ্রোহের পৃথিবীতে ছুটে যাই তখন।

বহুমাত্রিক ক্ষোভে, মন বলে, এখানে তুমিই সেরা! 

শুনে দেই ভোঁদৌড়-

শাহবাগের চৌরাস্তায়। চিৎকার করে বলি,

এই রাশিয়া, এই আমেরিকা,

যুদ্ধ থামা। যুদ্ধ থামা!

আমায় দেখে লোকে হাসে। বিচ্ছিরিভাবে হাসে!

(হয়তো তাদের অঢেল টাকা আছে 

অথবা যুদ্ধ ভালো লাগে!)

অথচ তাদের হাসি দেখে-

আমি উন্মাদ হয়ে যাই। একা একা বলি,

আহ্! কতোদিন প্রাণখুলে বাজার করি না!

মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩

কসমিক ফিলিংস

 

কসমিক ফিলিংস

ঈশ্বর একা। আমি একা। একাকীত্বে তাই,
বিন্দুমাত্র ভয় নেই, ভয় নেই আমার!
বরং গাঢ় রাতের নিস্তব্ধতায়-
প্রিয়তমা'র মতো ভালোবাসি।
শাড়ির আঁচলে- নিশ্চিন্তে লুকিয়ে প্রাণ,
আমি দম নিই। কসমিক প্রেমে-
একা থেকে আরো একা হতে চাই, প্রতিদিন!


শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

প্রথম বৃষ্টি

 প্রথম বৃষ্টি

- সাকিব জামাল


মনটা শুকিয়ে আছে ভীষণ,

 তুমুল বৃষ্টি দরকার।

খোদার কাছে চেয়েছিলাম মেঘ, 

খোদা দিয়েছেন তোমাকে!

এরপর, হঠাৎ একদিন, 

হাওয়া'র কেরামতি।

বৃষ্টিতে ভিজে গেল-

পৃথিবীর বুক।

ন্যাচারাল সিলেকশনে- 

বেঁচে আছি আমি, আজও!

শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

কেন জীবনানন্দ ফিরে আসবে না?


কেন জীবনানন্দ ফিরে আসবে না?
- সাকিব জামাল

ভালো নেই শঙ্খচিল, শালিক। ভালো নেই-
ধানসিঁড়ি। ভালো নেই সমুদ্র সফেন।
ভালো নেই নাটোর। ভালো নেই বনলতা সেন!
              এই ধারা, ওই নীতি, 
              বিবিধ কারণ!
ভালো নেই কমলালেবু, ভালো নেই-
মাছরাঙা সূর্য। ভালো নেই হাজার বছরের পথ।
ভালো নেই দোয়েল, ফড়িং, জীবনের রথ!
              এই তন্ত্র, ওই মন্ত্র,
              বিবিধ কারণ!
ভালো নেই দেবদারু-দ্বীপের নক্ষত্র। ভালো নেই-
কুয়াশা, কার্তিকের নবান্ন। ভালো নেই হিজলবন।
ভালো নেই রূপসী বাংলা। ভালো নেই-
'জীবনানন্দ' ফিরে আসার কোন আয়োজন!
-------

মাতৃভাষা

 মাতৃভাষা

- সাকিব জামাল


মা আমার, গাঁও গেরামের লোক

তবু তাঁর মুখের ভাষায়-

            আমার পরিচয় হোক!

কথায় আমার আঞ্চলিকতার টান, 

জন্মসূত্রে পাওয়া খোদার সেরা দান। 

এসব নিয়ে ভর সমাজে, লোকে-

              যা খুশি তাই বলুক!

ভাষা বৈচিত্র্যে- যাদের গাঁ জ্বলে, 

মেরুদন্ড বিকিয়ে তারা- 

                কেঁচো হয়ে চলুক!

গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ এবং নীলকন্ঠ নাগরিক!

 গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ এবং নীলকন্ঠ নাগরিক!

- সাকিব জামাল


কাককে কোকিল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়- এখন আমাদের কাছে। ঘোলা লোনাজলকে বলা হয় পবিত্র মধুর নহর। এসব মেনে নিয়েই চলি। অধিকারহীনতার জীবনে অভ্যস্ত বেশ, যেন মগতন্ত্রের সর্বোচ্চ সহনশীল নাগরিক আমরা!



'গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ' এমন খবরে আমাদের কিছু যায় আসে না! তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে এমনটিও আশা করি না, অথচ যখন দেখি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরে থাকে- 

গুম হওয়া রবীন্দ্রনাথের মাথা, 

                        বই নেই, 

                     কলম নেই,

অন্যান্য অঙ্গ প্রতঙ্গের হদিস নেই, 

তখন এড়িয়ে চলার অভ্যাস ভেঙে আতঙ্কিত হই খানিকটা!



তবুও তোষণপ্রিয় রাজকাহনের মেলায় যাই না। তার চেয়ে বরং কোন লেখকের 'গোপন পান্ডুলিপি' চুপি চুপি পড়ি! পড়তে পড়তে দেখি, দূরে উড়ে যায়- একটি নীলকন্ঠ পাখি।

মহুয়া

মহুয়া

- সাকিব জামাল


যখন রাত নেমে আসে-

তোমার লালটিপে সূর্য ওঠে আমার!

অন্ধকার ভেঙে, চলি চুপি চুপি

রজনীগন্ধার দূয়ারে। অবাক চোখে দেখি- 

এক রহস্যময় পৃথিবী!

ঐশ্বরিক আর লৌকিক পার্থক্যহীন, 

সময়ের বুকে জ্বলে মিহি জোছনার মতো- 

মাটির প্রদীপ। আগরবাতি।

আলোকিত প্রেমে- 

তোমার মহুয়া দেহের প্রিয়তম পুজোয়,

কেটে যায় এমনও রাত আমার- 

একদম ক্লান্তিহীন!

রহস্যময়ী চাঁদ

 রহস্যময়ী চাঁদ

- সাকিব জামাল


সন্ধ্যাবেলার মলিন চাঁদ মধ্যরাতে হাসে,

মন আমার উথাল পাথাল প্রেম যমুনায় ভাসে!

ভাসতে ভাসতে ডুবে যায় মন 

              ডুবতে ডুবতে জাগে 

রাত্রি শেষে দেখা হয়- ভৈরবী রাগে!

শুদ্ধ স্নানে, পবিত্র দেহে- নেচে ওঠে ফুল

পাখির ডাকে মুখরিত হয় যমুনার দু'কুল

দিন কাটে অপেক্ষায়, অপেক্ষায়-

          কখন ফের কৃষ্ণ হবে রাত,

রাধারূপে ঢেউ খেলে যায় রহস্যময়ী চাঁদ!

বরং ভালো একলা থাকা

বরং ভালো একলা থাকা
- সাকিব জামাল

আমি আমার মতো থাকি
তুমি তোমার মতো রও,
আমি আমার কথা বলি
তুমি তোমার কথা কও!
       ঠোকাঠুকি আর ভালো লাগে না
       ভালো লাগে না চেঁচামেচি সুর,
       বরং ভালো একলা একা থাকা
       একলা চলা যতো ইচ্ছে দূর!
রেলের মতো সমান্তরাল যে পথ
সেথায় মোহনা খোঁজা ভুল,
গুচ্ছ গুচ্ছ কাঁটার বন চিঁড়ে 
ফুটুক যার মতো তার ফুল!

বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

ফেব্রুয়ারি কথা কয়

 ফেব্রুয়ারি কথা কয়

- সাকিব জামাল

আমার রাতের চোখে তাঁকাও, তোমার সকাল হয়ে যাবে!
গাঢ় গাঢ় অন্ধকার, ভেঙে ভেঙে-
ফুটবে ভোরের স্বর্ণরাঙা রোদের ফুল- স্বাধীন।
কোমল বসন্তের অপেক্ষায়-
লাল চোখেরা রাত্রি যাপনে ক্লান্ত হয় না,
শীতনিদ্রা শেষে দ্রোহে জাগে। কুহু কুহু বাংলা শ্লোগানে-
ভূ-রাজনৈতিক স্ট্রাটেজিসকল, 
মাকড়শার জালের মতো উপেক্ষা করে-
গেয়ে ওঠে স্বদেশের গান। অবিরাম...
আমার রাতের চোখে তাঁকাও, তোমার সকাল হয়ে যাবে!

দ্য স্পিরিট অব এলিয়েন বাট উই হ্যাভ লস্ট

 দ্য স্পিরিট অব এলিয়েন বাট উই হ্যাভ লস্ট

- সাকিব জামাল

মানুষেরা যখন আমাদের পৃথিবীতে আসবে, 
সাবধান থেকো! সম্ভবত ওরা সাথে নিয়ে আসবে-
বিবেক বিবশ যুদ্ধাস্ত্রঃ 
লোভ, অহম, অসাম্য!
সেই স্টারওয়ারে, তখন, যদি পরাজিত হই আমরা, 
হারিয়ে ফেলবো- আমাদের এলিয়েনত্ব! 
নানাবিধ ন্যাশনালিজমের মারপ্যাঁচে বিভক্ত হয়ে যাবো!
ইকনমিকস্ এর বিবিধ তত্ত্বে- বাড়বে বৈষম্য আমাদের!
ঠিক যেভাবে প্লানেট আর্থ, আজ, বাস অযোগ্য প্রায়। 
অনেকটাই মনুষ্যত্বহীন!
শোনো, হে এলিয়েনসকল, আমরা চাই না, 
মানুষদের মতো- আমাদেরও আসুক সেইসব দিন!

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩

মায়াঘর

 মায়াঘর

- সাকিব জামাল


একলা শালিখ আমি। উড়ে বেড়াই- 

তোমার বুকে বাসার খোঁজে। 

অনুমতি দাও, নারীবৃক্ষ!

তোমার তিন ডালের মোহনায়, 

ত্রিভুজ অনুভূতি ভেঙে- 

'একক এবং অদ্বিতীয়' 

একটি বাড়ির বন্দোবস্ত করি- 

ভালোবেসে। জন্ম থেকে জন্মান্তরে

দেখা হোক, আমাদের- 

শামস তাবরিজি'র ঘরে!

ঐক্য রঙ্গ রাজনীতি

 ঐক্য রঙ্গ রাজনীতি

- সাকিব জামাল


ক্ষমতায় যাবার ঘ্রাণ পেলেই 

কাছে আসে বাম-ডান,

সম্ভাবনা কিছুটা কমে গেলেই

ভিন্ন সুরে গায় গান!



নীতি আদর্শ ভুলে তারা 

নিত্য নতুন জোট গড়ে,

স্বার্থ হানি হলেই আবার 

ছুট যে মারে চট করে!



ক্ষমতা পাগল নেতা সকল 

এদিক সেদিক খায় দোল,

রাজনীতির এই ঐক্য দেখে

জনতার পায় হাসির রোল!

ডাহুক

 ডাহুক

- সাকিব জামাল


আমার হৃদয়পোড়া কাজল রঙে

রাঙাবো তোমার চোখ,

বুঝবে তখন, প্রিয়তমাকে না-দেখা

কতো বড় শোক!



এই শোকে- দিনমান জ্বলে 

তপ্ত সূর্য মন আকাশে!

এই শোকে- রাতভর চলে

বিরহ মাতম দীর্ঘশ্বাসে!



থাক, এসব ব্যাখ্যা আমার

আমার কাছেই থাক।

তবু বর্ষার দিনে প্রথম বৃষ্টিতে-

ডাহুক ডেকে যাক!

সত্তা

 সত্তা

- সাকিব জামাল


হৃদয় ডুবে যায়- দুই পাহাড়ের চুড়ায়।

মাঝ বরাবর দূরে, সঙ্গমরত নদীরা 

মাতে উৎসবে- পলিমাটির জলে!

সময় সঙ্গত করে 

নতুনের গানে। 

সভ্যতা ছুটে চলে 

সৃষ্টির রহস্যপথ বেয়ে।

বিগ ব্যাং এবং শিৎকারঃ 

সুরেলা সিমেট্রি। ভাষা খুঁজে পায়- 

কবিতা আর বিস্মিত বিজ্ঞান।

আবার আসবে বসন্ত

 আবার আসবে বসন্ত

- সাকিব জামাল


বেসুরো সময়। পত্রঝরা দিনকাল। 

অভিযোজনে ক্লান্ত প্রাণ।

নেড়ে বৃক্ষের মতো ভয়ার্ত মনে- 

বাজে বেদনার গান।



আবার কী ফিরবে স্বরূপ?

নাকি হবে স্বপ্নের তসরূপ!



ইতিহাস বলে, ভয় নেই। ভয় নেই!

আবার আসবে বসন্ত।

স্বপ্ন দেখো আপ্রাণ, অনন্ত। 

দুঃসময়ে- হারিয়ে ফেলো না খেই!

একটা বিকেল দিও আমায়!

একটা বিকেল দিও আমায়!

- সাকিব জামাল


পাখিস্বভাব আমার! 

উড়তে চাই, ভীষণ উড়তে চাই

তোমাকে নিয়ে- 

এক বিকেল। 

তুমি, একটা বিকেল দিও আমায়!

খুব বেশি দূর যাবো না।

শাহবাগ। আজিজ মার্কেট। 

চারুকলা। টিএসসি। কার্জন। 

যখন, সন্ধ্যারঙ আকাশে লাগবে-

ঠোঁটের চুমুতে চুমুতে,

প্রিয় বৃক্ষের বুকে বানানো-

কোমল কোঠায় 

ফিরে আসবো একা! 

এক বিকেল স্মৃতির মিউটেশন করে, 

আমৃত্যু বেঁচে থাকতে আপত্তি নেই আমার!

তুমি, একটা বিকেল দিও আমায়!

---------





এখনো ঘুমাও নি তুমি

 এখনো ঘুমাও নি তুমি?

- সাকিব জামাল


রাত্রির গভীরতা বাড়তে থাকে

চাঁদ ঘুমতো যায় সূর্যের দেশে!

নির্জনতার মাধুরী মেশানো রবীন্দ্রনাথ সঙ্গীতের সুর 

ধীরে ধীরে রূপ পাল্টাতে থাকে ভৈরবী রাগে!

একের পর এক নিভতে থাকা 

শহুরে বাতিগুলো নিমন্ত্রণ করে 

রোমান্টিক গাঢ় অন্ধকার! অথচ...

এখনো ঘুমাও নি তুমি?

যতো রাত জেগে থাকি,

এ কথাটি আমায়- 

এখন আর বলে না কেউ!

শিশির পড়ে চুপি চুপি

 শিশির পড়ে চুপি চুপি

- সাকিব জামাল


শিশির পড়ে চুপি চুপি

রাত্রির বুকে,

চাঁদের জলে চাঁদ ডুবে যায়

উষ্ণ সুখে!

ভোরের নেশায় ঘোরে কাটে

যুগল যাপন,

শুদ্ধ স্নানে- মুগ্ধ ফুলের 

সকল কাঁপন!

বিরহমুখর দিনকাল

 বিরহমুখর দিনকাল

- সাকিব জামাল


তোমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ আমার! 

এমনসব কথাবার্তা শোনার পরেও-

যুগল স্মৃতির ফোল্ডারসমূহ,

কতোবার যে রিসাইকেল বিনে পাঠিয়েছি

আবার রিস্টোর করেছি- 

হিসাব বিহীন। নিয়ন্ত্রণহীন!

নদীর জলে শুশুকের মতো উঁকি দেয়, মস্তিষ্কজুড়ে- 

ফেলে আসা দিন। অস্থির নিউরন।

তুমি চলে যাবার পর, স্ট্রেসফুল একাকীত্বের পথে- 

এখন চলছি অবিরাম। অত্যন্ত বিরহমুখর!

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩

হিমার্দ্র দিনরাত

 হিমার্দ্র দিনরাত

- সাকিব জামাল


পৌষবৃষ্টি। হিমার্দ্র দিনরাত।

মন উচাটন!

উষ্ণতার জন্যে- 

তোমার স্পর্শ প্রয়োজন।



বিরহ বরফ ভেঙে-

দেখা দাও, সূর্যসখি।

ঝরাপাতার জীবনে

একটু সজীব চুমু মাখি!

লোনা প্রহর

 লোনা প্রহর

- সাকিব জামাল


সন্ধ্যারাতেই এখন, কুয়াশা নামে আমার! তারপর,

সারারাত, দু'চোখে বয়- বিরহ জলের লোনা প্রহর!

ফুলসই, একলা একা কথা কই

ইনসমনিয়ায় একাই ডুবে রই।

চাঁদে, সূর্যে লেগে থাকে গ্রহণ, আসে না যুগ্মভোর!

কবিতার ফুলচাদর

 কবিতার ফুলচাদর

- সাকিব জামাল


শীতের রাতে দোকানে চলছে জমজমাট উৎসব।

দোকানে একটি চাদর ছিল কবিতার, আবৃত জোড়া গাদাফুল!

ছিল কর্পোরেট ক্লাসের আরও আরও পণ্য। 

ক্রেতারা এলো, 

একে একে নিয়ে গেল-

তাদের পছন্দের পণ্যসকল।

রাত গভীর হলো...

দোকান বন্ধ করার নোটিশ লাগিয়ে

বাসায় ফিরে যায় সবাই।

অথচ, আজও চাদরটি কেউ চায় নি,

নেয় নি কেউ গাদা ফুলের ঘ্রাণ!

দুর্ভাগ্যের হ্যাঙ্গারে ঝুলে থাকে- কবিতার ফুলচাদর!