সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৬

শরতের প্রণয়

কোন এক শরতের বিকেল
আমি আর তুমি
হেঁটেছি বহু পথ
গাঁয়ের মেঠো পথে
আকাশে বিক্ষিপ্ত সাদা মেঘ
ছিল ঝিরি ঝিরি হাওয়া
এমনি মায়াবী বিকেলে
হল যে আজকে হায়
তোমাকে কাছে পাওয়া ।
পথসঙ্গী কেবলই তুমি বলে
প্রস্ফুটিত কাশবন নৃত্য তালে হায়
হাতছানি দিয়ে বলে
ভালবাসার ছলে
এমনি মায়াবিনী
তুমি পেয়েছ কোথায় ?
আজ পাখিরাও গাচ্ছে গান
বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যাবেলায়
মধুমাখা সে ঐক্যতান !

হে সারদা সুন্দরী
মিনতি যে তোমায়
রাজকুমার - কুমারীর গল্পে
এসো কাটাই আজ রাত
শারদীয় এ জোসনাতে বসে
হয়ে একাকার
নির্ঘুম অভিসারের পর
স্বাগত জানাই প্রভাত ।
শিশিরস্নাত ঘাসফুলেরা
হয়তো মুগ্ধ হবে
তোমার পদযুগলের
শীতল ছোঁয়ায়
শিউলী ফুলের
প্রেমের মালায়
শারদীয় শুভেচ্ছা
অবশেষে জানাবো তোমায় ।

হে প্রেয়সী
এ শরত এ প্রণয়
মোরে করেছে
আজ চির সুখময় !

তখন প্রেম ছিল

যে প্রেমিকা ফুলবনে বিচরণকালে
আনমনে প্রেমিকের ফুল ছেড়া সইতে পারত না
সেই মানবী আজ হৃদয় ছিড়ে !
যে প্রেমিকা কাশবনে ঘুরে বলতো
শুধু সৌরভ না, দেখ, শুভ্রতাও কিভাবে হৃদয় টানে
সেই মানবী আজ কলুষ প্রেমে !
যে প্রেমিকা ছিল প্রকৃত সুরের সাধক
পাখির গান, নদীর কলতান শুনে কাটাত সময়
সেই মানবী আজ কর্কশ কন্ঠী !
যে প্রেমিকা ছিল বৃষ্টি ছন্দ প্রেমী ময়ুরী
আবেগে প্রেম বিরহে কান্নায় ফেলত চোখের কাজল ধুয়ে
সেই মানবী আজ বিচ্ছেদ কামী !
-তখন প্রেম ছিল
এখন আর নেই ।

হে আমার প্রেম

প্রহরের পর প্রহর
এভাবে কতো অষ্টপ্রহর
হয়ে গেলো শেষ,
অথচ অপেক্ষায় তোমার
কবে এই কষ্ট প্রহর
হবে প্রান্ত শেষ ?

অপেক্ষায় ছিলাম সূর্য ওঠার
উঠে সে ডুবেও গেলো ।
অপেক্ষায় ছিলাম চন্দ্র ওঠার
উঠে সে ডুবেও গেলো ।

অথচ অপেক্ষায় তোমার
নবদিগন্ত উদয় হলোনা
দুর্ভাগার দর্শনে,
এই নষ্ট প্রহর আমার
কেন তবু হয়না শেষ
ক্লান্তি ভরা মননে ?

হে আমার প্রেম-
হে আমার সুশাসন 

পূর্ণিমা রাতে অমাবস্যা

শরতের এই বারের পূর্ণিমাটা বেশ যৌবনা ছিলো
তোমার মত !
একটু একটু করে কৈশর বেড়ে বেড়ে
আজ যে পদচিহ্ন তোমার সে বড় চঞ্চলা হয়তো !
পরিপূর্ণ চাঁদটার মত সফেদ পাহাড় আড়ালে ঢাকা
কোন ধনকুবের নিরস দামী রেশমী কাপড়ে -
তাই আমার দৃষ্টিতে অমাবস্যা -
নিসঙ্গ প্রহর -
আমি ক্ষয়িষ্ণু -
বিরহে তোমার !
অমন চাঁদ, অমন পূর্ণিমার কি দরকার ছিল ?
যদি এমন রাত ব্যার্থ হয় প্রেমের কবিতার অভাবে !

টুকরো টুকরো প্রেম

অজান্তে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে দেখি-
শরতের নীল আকাশে
টুকরো টুকরো সাদা মেঘ -
এ যেন টুকরো টুকরো প্রেম ।

মনে করে দেখি অতীত খুঁজে
বয়স যখন ছিল উনিশ-কুড়ি
কী যে আনন্দ পেতাম
দেখে দু একটি ফুলের কুঁড়ি !
কুঁড়ি গুলো আজ প্রায় বুড়ো-বুড়ি
সংসার ধর্ম করে আপন ঘরে
অথচ আমি আজও আকাশ দেখি
রাতে বেরাতে একলা চরে ।

এ যেন টুকরো টুকরো প্রেম ।
জীবনে আঁকা ছবির হারানো ফ্রেম ।

মেঘগুলো হারাবে কোথায় ?
আমিতো হারালাম-
প্রেমের চোরাগলির বাঁকে
অজান্তেই ভেসে ওঠে
ভালোলাগা মূখগুলো
শরতের আকাশে !

স্নিগ্ধ মনের. শুভ্রতা ভরা প্রাণের
সেই বয়সের সব বন্ধুরা -
ভালো থাকিস,
আকাশ দেখিস -
এ যেন টুকরো টুকরো প্রেম ।
জীবনে আঁকা ছবির হারানো ফ্রেম ।

বৃষ্টি আসো

তোমার অপেক্ষায় নির্ঘুম চোখের পাতায়
ক্লান্তি ভরা হাতছানি ঘুমের পরির
তবুও জেগে আছে অন্তর-কোনে রবি !
হে বৃষ্টি, তুমি আসো তাড়াতাড়ি
বাংলার সবুজ জমিনে নেমে
অপেক্ষায় তোমার রয়েছে শত শত কবি !

যদিও দুয়ারে দুয়ারে দুর্বৃত্ত পাহারাদার
"অনাকাঙ্ক্ষিত" তুমি তাদের কাছে জানি
তবুও তোমায় আসতেই হবে মানবতার খাতিরে
তাড়াতে হেথায় সব দুর্নীতির বেসাতি ।

অন্বেষণ

রূপের মাঝে কি খোঁজ তুমি
এ যে বৃথা অন্বেষণ
মনের মাঝে গুন খোঁজ মন
তবেই পাবে গুপ্তধন ।
রূপের বাহার দেহের আহার
এক সময় হয় অবসান
গুনের কদর সে পরশ পাথর
চিরকাল রয় বহমান ।
রূপের মাঝে কি খোঁজ তুমি
এ যে বৃথা অন্বেষণ
মনের মাঝে গুন খোঁজ মন
তবেই পাবে গুপ্তধন ।
রূপের নেশায় পাগল হলে
বিপদ করবে আলিঙ্গন
গুনীজনকে বাসলে ভালো
পাবে সঠিক পথের নিদর্শণ ।
রূপের মাঝে কি খোঁজ তুমি
এ যে বৃথা অন্বেষণ
মনের মাঝে গুন খোঁজ মন
তবেই পাবে গুপ্তধন ।

লক্ষী জোসনা

একা একা বসে পুকুর ঘাটে
লক্ষী আসা জোসনা ভরা রাতে
নদীর জলে করে সে যে খেলা
মনের ঘরে দেয়না তবু ধরা !

এতো ডাকলাম, এতো দিলাম পুজা
তবু দেবী দেয়না তার মন
প্রতিক্ষণে তারে খুজি, তারে ভজি
তবু বয়না কেন প্রেমের পবন ?

সয়না যে আর এই অন্তরে
মধু জোসনায় এমন একাকী ভ্রমন
ভালবেসে তুমি আসো মোর ঘরে
রইল দেবী এ সবিশেষ নিমন্ত্রণ !

জলসা ঘর

এলে তবে কবিতা শুনতে
অধম কবির জলসা ঘরে
একলা কেন ? বন্ধু তুমি -
আনোনি কাউকে সঙ্গী করে ?
আজকের কবিতা গরম বটে
জালিম বিরোধী, মজলুম ভক্ত
শরম-নরম মন নিয়ে হবেনা
কবিতা ভক্তের দিল চাই শক্ত !
একলা চলা যাবেনা দুর্বল
আছে আরও কিছু শর্তযুক্ত
মজদুর সব একতা চাই
চিত্ত চাই কর্পোরেট মুক্ত !

‘ও, রাতে খেয়েছো মাছে-ভাতে
নাকি ফাস্টফুডে ভরেছ পেটের-প্যানেল ?
আজ বাংলায় টিভি দেখেছ তো
নাকি হিন্দি, উর্দু, ইংলিশ প্রীতির চ্যানেল ?
আসার সময় তাকিয়েছ ফুটপাতে
নাকি দেখেছ শুধু ঝলমলে শহর ?
চলাফেরা করো কি সাধারণের মত
নাকি চল নিয়ে গাড়ীর বহর ?
ভালোবাসো সব মানুষকেই
নাকি শুধুই থাকো আত্মকেন্দ্রিক ?
সত্য কথা সব সময় বলোতো
নাকি মিথ্যে বলায় বেশ শৈল্পিক ?
চলনে বলনে দৃঢ় সুনীতি পালনে
নাকি সখ্যতা দুর্নীতির সাথে ?
আত্ম-সমালোচনার যো আছেতো
নাকি পরনিন্দায় ব্যস্ত দিন-রাতে ?’

হে বন্ধু, আজ তবে এতটুকুই-
রইল মোর কবিতায় জিজ্ঞাসা,
শর্ত মেনে জলসা ঘরে এসো ফের
যাদি হতে পারো বাঙালি খাসা ।

বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬

বিরহ

আষাঢ়ের মধ্যরাত্রি
কৃত্রিমতার কোলাহল নেই
আমি জেগে আছি
কোন এক মায়াবী প্রহরে
বাতাসে বনফুলের সুবাস
কখনও তীব্র কখনও বা মৃদু
আর ছন্দময় সুরে
অঝোর বর্ষার গান ।
নৈস্বর্গিক সে রাত
স্মৃতিময় অতীত
ব্যাকুল হৃদয়ে
বিরহের তান ।
খুঁজে খুঁজে মরি
তোমাকে তাই স্মরণ করি
উষ্ণ আবেগে আপ্লুত হৃদয়ে
তোমারই সান্নিধ্য রচি ।
বাহিরে বর্ষার গান
আকুল মন-প্রাণ
জীবনের সাধ আজ নাহি মিটে
তুমি বিহনে মোর ।
এসো তুমি বারে বারে
এমিন মধুর প্রহরে
বাস্তবতা হয়ে
ভেঙ্গে স্বপ্নঘোর ।

বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০১৬

সেদিনও ভোর হবার কথা ছিলো

সেদিনও ভোর হবার কথা ছিলো এই বাংলার আকাশে আবহমান নিয়ম মত
কিন্তু , কালো অন্ধকারের নেশাগ্রস্থ, ‘লাল-সবুজ’ বিদ্বেষী, ‘পাক’ অনুগত
হঠাৎ কিছু হায়েনার রক্ত পিপাসা জাগে - বাতাসে ভাসাতে রক্তের গন্ধ
থমকে দিতে বাংলাদেশ । দীর্ঘায়িত করতে রাত । কন্ঠ করতে স্তব্দ ।
স্টেনগান হাতে উদ্ভ্রান্ত হায়েনার দল এসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়ক 
স্বপরিবারে জাতির জনককে করে খুন - জাতির কপালে ছাঁপে কলঙ্ক তিলক ।
খুন করে বাংলাদেশকে । বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে করে ধুলিস্যাত –
ভোর হলোনা আর সেদিন- কালো আধারে ঢাকে ফের বাঙলীর ভবিষ্যত ।
সময় বয়ে যায় - কুলাঙ্গাররা মাতে রাজপথে, বসে মসনদে বাংলার 
কলঙ্কের বোঝা কাধে জাতি হারায় পথ, হোচট খায় সে ক্লান্তে বারবার ।
আমনিশার দু:সময় কবে কাটবে ফের, হবে কবে বাংলায় আবার ভোর
মুছে যাবে কলঙ্কের দাগ, খুলবে কবে কুলাঙ্গারদের বিচার করার দ্বোর ?
কলঙ্ক মুক্ত বাঙালীর হাসি দেখে জাতি খুনিদের ফাঁসি কার্যকরে অবশেষে
৩৪ বছর পর, মেলে ফের আলোর রেখা সোনার বাংলার পুব আকাশে ।

রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬

বসন্তেও বিষন্ন বাতাস

বসন্তেও বিষন্ন বাতাস বয়ে যায় আমার জীবনে
আজি কেন ? এখনোতো এলোনা কেউ আমার ভুবনে
সেজেছিলাম আজ, ঘুরেছিলাম আজ, যতক্ষণ ধরায় নাহি এলো সাঝ
কতোজন লাগলো ভালো, কতোজন এলোগেলো
হাত দুটি মোর কেহ নাহি ধরলো ভেঙ্গে তাহার লাজ ।
বয়ে গেল শুধু বসন্তেও বিষন্ন বাতাস ।
বসন্তে বিষন্নতা চাইনা আর, বরং বসন্ত রাতের স্নিগ্ধ জোসনায়
চাই হৃদয়ে জাগুক প্রেম-সমুদ্রসম গভীর, অসীম আকাশের ন্যায়
আসুক কেউ কাছে মোর, ভেঙ্গে তাহার লাজ
হারিয়ে যাই দুজনে অক্লান্ত পবিত্র ভালোবাসায় ।

কামনা

কামনাদ্বীপ্ত হৃদয় মোর
ইন্দ্রিয় বিলাসী
একান্ত অভিসারে
তোমারই অভিলাষী ।
মোর কামনায়
একান্তই তুমি
তোমাতে ভিড়াই
নিত্য মোর তরি ।
তোমাতে খুজি স্বর্গসুধা
তোমারই কাছে চাই সুখ
মোর কামনায় মোর সাধনায়
সদা তোমার প্রিয় মুখ ।
ধরাতে যখন
নেমে আসে নিশি
তখনই আমি
তোমাতে মিশি ।
ছন্দ হিন্দোলে
নাচি আর গাই
তোমাতে তাই
জীবন খুজে পাই ।

বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬

সময় মাঝি

যেতে চাই ফিরে
শুরু করা সে তীরে
নাই উপায় ! ‘সময়’ মাঝি  বলে -
সে কেবলই সামনে চলে...

জীবন নদীর গতি পথে
স্বপ্ন কিংবা দু:স্বপ্নের রথে
যেতেই হবে !  ‘সময়’ মাঝি  বলে -
সে কেবলই সম্মুখ সমরে চলে...

আমি পথিক যতই বলি
থামো কিছুক্ষণ । ফুটুক সুসময়ের কলি
নাই উপায় ! ‘সময়’ মাঝি  বলে -
সে কেবলই স্রষ্টার কথায় চলে...

প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ব্যবধান

প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ব্যবধান থেকে উৎসারিত
মোর চোখের লোনা জলে সাগরের লোনা জল মনে হয় মিশে যাবে অবিরত
তোমার মনে যে এখনো জন্ম হয়নি ভালোবাসার
তাই বহমান নদী হতে  দেরি নেই আর ।

কবে ভালোবাসবে ? চোখের জল আটকে দেবে ?

ঘাসফুল মেঘ প্রেম

আমি আসবো, সত্যিই আবার আসবো
আরেকটু সুন্দর তব তোমার মনের মত সাঁজে ।
তুমি থাকবে তো এই নীল আকাশের নীচে
লুকিয়ে রবে নাতো আবার স্বভাবগত লাজে ।
তোমাকে আরও সতেজ আর উর্বর করার আশায়
ঠিকই কিন্তু ছুটে আসবো, কথা দিলাম তোমায় ।
হে বন্ধু থেকো কিন্তু তুমি কেবলই মোর প্রতীক্ষায়
ভালোবাসা রেখো মনে, ভুলো নাকো হেলায় ।
ঘাসফুল হেসে কহে ওহে মেঘ বন্ধু মোর
থাকবো প্রতীক্ষায় তোমার হোক যত প্রহর ।
তুমি বিনে অস্তিত্ব মোর সে তো কল্পনাতীত
তোমার বৃষ্টি দানেই হয় মোর শক্ত ভিত ।
এসো তুমি যখন খুশি, আমিও দিলাম কথা
আগমনে তোমার মেলে দেবো পাপড়ি, ভুলে সব প্রথা ।
ভালোবেসো মোরে পবনে ভেসে এসে দেশে মোর
তোমার তরে রইবে খোলা আমার ঘরের দ্বোর ।

বঙ্গদেশের ইতিহাস রঙ্গ

বঙ্গদেশের ইতিহাস রঙ্গ
চলছে হরদম
যে যার মত
করছে বাহাস
কে প্রথম ? কে প্রথম ?
আজ এক শুনিতো
কাল আরেক
পরশু আরও নব নব
চলছে মস্ত
আণুবীক্ষণিক বিশ্লেষণ
কে বৈধ ? কে অবৈধ ?
দেশে কি বিদেশে
আছে তার পক্ষ বিপক্ষ
দিচ্ছে যুক্তি তারা
নাই বালাই সত্য কি অসত্য !
বাংলা অভিধান বহির্ভুত
শব্দ চলছে চয়ন
ইতিহাসে তা হচ্ছে
নব সংযোজন ।
ভারি বড় মুসিবত
কি করে করি নসিহত
কেননা আমার অবস্হা
" ইতিহাসে পাতিহাস
ভুগোলেতে গোল
অংকেতে মাথা নাই
হয়েছি পাগল । "
দূর ছাই
এ নিয়ে কি কবিতা হয় !
রাজনীতির কবিতার জন্য
চাই ভালোবাসা
দেশের প্রতি ভালোবাসা
দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ।

বেদনার পাহাড়

বেদনা বহু পেলাম
‍নিজ কর্মগুনে এবং অন্যদের বহু কর্মে
‍ভেবেছি সেই বেদনাগুলো দিয়ে
এক ‍বেদনার পাহাড় গড়বো
আর তার চুড়ায় বসে
কষ্টের কবিতা ‍লেখবো !
কষ্ট আর কবিতারা মিলেমিশে
‍মেঘ হবে ঘন কালো
হাহাকারের দীর্ঘশ্বাসের বাতাস
‍সেই ‍মেঘগুলো উড়িয়ে নিয়ে আসবে
আমার বেদনার পাহাড়ের চুড়ায়
আমি ছুয়ে দেখবো !
বলবো ‍মেঘ তুমি বৃষ্টি হও
চোখের নোনা জলে
‍বেদনার পাহাড় থেকে ঝরনা হোক
শীতল স্রোতধারায়
নব উদ্যম পেতে সেই জলে
আমি স্নান করবো !
‍জানি বেদনা স্থায়ী নয়
ভুলে যাব কষ্টের সময়
আগামীর দৃষ্টি দিয়ে
‍নিজ কর্ম গুনে
গুড়িয়ে বেদনার পাহাড়
পবিত্র হয়ে আবার জাগবো !

সুজন-কুজন

সতত সে সুজন
যেজন যতী
নীরত নিরবধি
ভবে ভজনে ভুঞ্জন ।
পক্ষান্তরে পংকিল
কাহারে কহিনু কুজন
যাহার জিবনে যৌবনে
ভবে ভজনে ভুঞ্জন ।

অতিথি পাখির অধিকার...

হে বাংলাদেশ, কেমন আছো
আবার এলাম বেড়াতে তোমার হাওড়ে
সারা বিশ্বের সবাই জানে
বেশ অতিথি পরায়ণ তুমি বাপুরে !
এসেছি সুদূর থেকে ক্লান্ত আমরা
ক'টা দিন থাকবো তোমার এখানে
তব অনুরোধ, একটি অনুরোধ
যেন যেতে পারি ফিরে আপন দেশে ।
তোমার সন্তানেরা দেখুক মোদের
জুড়িয়ে দু নয়ন তোমারই সৌন্দর্যের সাথে
আহা না মারে যেন মোদের কেউ শখের বসে
দিয়ে গুলি কিংবা বিষটোপের বিষে ।
হে বন্ধু বাংলাদেশ, সবিনয়ে বলি
মনে রেখো, আমি অতিথি তোমার
তোমার প্রিয় মানব সন্তানের মত
আমারও আছে যেথায় খুশি বেড়াবার অধিকার !

কিসে স্বর্গ, কিসে নরক ?

কিসে স্বর্গ, কিসে নরক ?
------------------------------------------------------------------
যদি অমরাবাসী হতে চাও
ইহসান করো সব মানবে
যদি না পারো তা সবকর্মে
নূন্যতম ইনসাফ করো ভুবনে ।
পক্ষান্তরে যদি করো জুলুম
ঠগবাজি করো এ ধরার বুকে
নিগৃহীত হতে হবে রেখো মালুম
পরকালে যেতে হবে নরকে ।
-----------------------------------------------------------------
সাকিব জামাল

দাও শ্রমিকের নায্য অধিকার

বলো তোমরা, শ্রমিকেরা আর কতো খাবে মার
দু বেলা দু মুঠো ভাতের জন্য
সইবে তারা কতো অমানবিক অত্যাচার ।
কলের চাকা সেতো দেখি থাকেনা থেমে
শ্রমিকের কষ্ট ঝরা ঘামে চলে কারবার
তবে কেন তাদের ভাগ্যের চাকা থেমে যায় বারবার ?
দিবা-নিশি তারা যদিও করে কাজ
মালিকেরা হয় আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ
তবু তাদের বেতন নিয়ে কেন চলে ছিনিমিনি ?
অধিকারের দাবী তুললেই
কেন আসে চলে টিয়ার গ্যাস, জল কামান
সাঁজোযা যানে পেটোয়া বাহিনী ?
বলি এসব দাও বাদ
দাও শ্রমিকের নায্য অধিকার
শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর পূর্বে
করো পরিশোধ বেতন ভাতা তার ।
দাস প্রথা যাও ভুলে
রক্ত চোষা জোঁকের চরিত্র করো পরিহার
মালিক-শ্রমিক সু-সম্পর্ক গড়ে
এগিয়ে নাও অর্থনীতি এই বাংলার ।
----------------------------------------------------------------------
সাকিব জামাল

কসম

কসম
সভ্যতা বিকাশের
ভালোবাসি তোমায় আজও
তোমাকে ‍বিকশিত করবো বলে ।
কসম
আগুন জ্বালানোর কৌশল শেখার
‍সেই সময় টুকুর
নতুবা আজও অন্ধকারে থাকতো পৃথিবী
ভালোবাসি তোমায় আজও
তোমাকে ‍আলোকিত করবো বলে ।
কসম
লোহা থেকে হাতিয়ার বানানোর
‍সেই শ্রম টুকুর
নতুবা আজও অরক্ষিত থাকতো জীবন হয়তো
ভালোবাসি তোমায় আজও
তোমাকে সুরক্ষিত রাখবো বলে ।
কসম
কৃষিকাজ শিখে ফসল উৎপাদনের
এবং পশুপালন করার মতন মেধা টুকুর
নতুবা আজও সংকটে থাকতো ধরার মানব
ভালোবাসি তোমায় আজও
তোমাকে ‍সমৃদ্ধ করবো বলে ।
কসম
আধুনিক সভ্যতার বিজ্ঞানের ‍আলোর
ভালোবাসি তোমায় আজও
স্বাপ্নিক জীবন গড়বো বলে ।

বেকারের গীত

চাকরি খুজে খুজে হয়রান ক্লান্ত যুবক মূখখানি থাকে সদা ভার
হৃদয়ে তার অস্পষ্ট কান্নার রোল দেখেনা অন্যদের নয়ন কখনো আর ।
মা বলে আর কতদিনে ঘুচবেরে বাবা সংসারের টানাটানি ?
বাবা বলে আর কতদিন বাবার হোটেলে খেয়ে দেখাবি তুই খানদানি ?
নির্বাক যুবক ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস তাকিয়ে আকাশ পানে প্রশ্ন ছোড়ে
হে সৃষ্টিকর্তা, মেধাতো দিয়েছিলে তবে দেওনি কেন মোরে -
লক্ষ টাকা আর ক্ষমতাবান মামা ? দেওনি কেন ছাত্রনেতা হবার পেশী শক্তি ?
এ তিনেরে ছাড়া বড় কঠিন কেন বলো বেকারত্ব থেকে তব মুক্তি ?
বেকারের প্রশ্ন শুনে জানিনা কি উত্তর দেন মহাবিশ্বের মালিক যিনি
তবে পাতালে দেখি অন্য মানুষের ভাগ্য চোরের বহর বাড়ছে প্রতিদিনই ।
টাকা, মামা কিংবা রাজনৈতিক বিবেচনায় যে করে যোগ্যকে জোর করে বেকার
আমি বলি- তারা দেশের শত্রু, সুষম উন্নয়নে বাঁধা- চা‍ই এখনই এর প্রতিকার ।

মামা কেল্লাফতে

হা রে রে মামা কেল্লাফতে
পরীক্ষার প্রশ্ন করেছি ফাঁস
এবার এ প্লাস পেয়ে করবো পাস !
তারপরে
সিস্টেম করে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে
বীরদর্পে হলে করবো বাস !
-এভাবে কি হবে ?
চাকরি কি পাবে ?
আরে বোকা মামা
টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে টাকা করবো জমা
চাকরি করবো খাড়া সেই টাকায়
জানইতো বাঘের চক্ষুও টাকায় পাওয়া যায় !
-তাই নাকি !
এসব করে কি হবে লাভ ?
ঘুষ খাবো ফাইল আটকিয়ে
সাথে দুর্নীতি টুকটাক
আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে
আর নেই বেশী ফারাক !
হা রে রে মামা কেল্লাফতে
বাড়াও তোমার দু হাত
আজকের এ আনন্দের দিনে
তোমার সাথে করি মোলাকাত !
দূর হ কুলাঙ্গার
তোর মত ভাগ্নের পরিচয় দিতে চাইনা আর ।
মানুষের মত মানুষ হতে পারবি যেদিন
আসিস ফিরে মামার কাছে কেবলই সেদিন ।

সোজা কথা

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্রের বাহকেরা
তুচ্ছ আমি বলি, একটু শোন দিয়ে মন
ইসলামের পথই আমার কাছে সর্বকালের সেরা
মহান আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন সে প্রজ্ঞাপণ ।
ইনিয়ে বিনিয়ে যে যাই তুমি বলো
সাঁজো নিজে নিজে যতই বিশাল বিজ্ঞজন
আমি বলি, মানিনা তোমার বানানো কোন কথা
কোরআন-হাদীসই আমার কাছে শ্রেষ্ঠ নির্দশণ ।

মোনালিসা, মহা-বিস্ফোরন আর নাস্তিকতা

অবাক করা কথা
লিওনার্দো আঁকেননি মোনালিসা !
বরং ছোট্ট একটি বিস্ফোরনে
ঘরের মেঝে থাকা কৌটাগুলোর রঙ
ছিটকে পড়ে দেয়ালে
মোনালিসা হয়েছিলো সৃজন !
একদম জায়গা মত
যেখানে যে রঙ লাগে যত
পড়েছিলো ছিটকে ঠিকই তেমন
মোনালিসা এখন দেখতে যেমন !
কি ? মনে হচ্ছে মাকাল ফল
আসলে এ এক গবেষণার ফল ।
তবে কি করে এক মহা-বিস্ফোরনে
আপনা-আপনি মহাবিশ্ব সৃষ্টি হলো ?
কোনো শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড় ছাড়া
হয় কি এমন সুন্দর ধরা বলো ?
এটাই বাস্তবতা, মালিক আছেন মোর
আর সবকিছু তার নিপুন হাতে গড়া
সৃষ্টিতেই এ নিদর্শণ প্রকাশ সমস্ত
সুতরাং নাস্তিকতা না-দুরস্ত ।

অথবা গাধা

ধর্মনিরপেক্ষতা মানে এই নয়
কোন ধর্মকে করা তিরস্কার
‍যে করে ধিক তারে শতধিক
‍নিশ্চয়ই সে মস্ত কুলাঙ্গার ।
‍যে ধর্মের যে প্রথা - আছে যে আচার
ধর্মপ্রাণেরা করবে পালন - এই সত্য সমাচার
‍যে করে ব্যঙ্গ তায় দিতে চায় বাধা
‍নিশ্চয়ই সে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারী অথবা গাধা !

আমি গান দেখি ! আপনি ?

আজকের জামানার
নামকরা কড়া গাতকদের
গান দেখতে খুবই ভালো লাগে
আমার ! আপনার ?
তাদের গানে বড়ই সৌন্দর্য
তারা অঙ্গ দিয়া গান করে
পোশাক দিয়া শ্রোতা ধরে
আহা কি চমৎকার !
গান দেখতে নির্জন রুম লাগে
জঙ্গল হলে ভাল হয় আরো
বানরদের সাথে গান দেখার মজাই আলাদা
উহঃ আমার কথায় কষ্ট লাগেনা যেন কারো ।
না, না লাগে লাগুক কষ্ট
যদি লজ্জা পেয়ে ভাল হতো
এসব পথভ্রষ্ট নির্মাতা কিংবা গায়ক
তবে গান শুনতাম, বুঝলি আহম্মক !

সহকর্মীর শোকবার্তা শুনে ভাবি !

কারও কারও চলে যাবার সময়টা হয়তো
হতেও পারতো আরও খানিকটা পরে
তবুও সৃষ্টিকর্তার কাছে যাবার ডাক
যখন আসবে যার হবেই যেতে
জানা অজানা কোন না কোন ছলে
সবাইকে জানিয়ে বিদায় তব চিরতরে ।
হোক সে স্বাভাবিক অথবা অপ-মৃত্যু
‍কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোন দূর্ঘটনায়
হারা‍ই যখন কোন সহকর্মী মোর
‍বেদনা ‍বিধুর হৃদয় তব ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস
ভাবি একসাথে থাকার সময়টুকু
আরেকটু দীর্ঘ হলে বুঝি বইতো শান্তির সুবাতাস !
আবার ভাবি এতো কেবলই স্রষ্টার খেলা
জানিনা কখন কার জীবনে আসবে সায়াহ্ণ বেলা
যারা গেছেন চলে - ছেড়ে মোরে - সাঙ্গ করে মায়া
অনন্ত শান্তির জীবন তাদের দিও হে বিধাতা ।

মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬

দশ জানুয়ারি ঊনিশ শত বাহাত্তর

ঊনিশ শত একাত্তর মার্চ থেকে ডিসেম্বর
ইতিহাস সবার জানা ।
প্রতিরোধ - সংগ্রাম এরপর বিজয়
তবুও ছিল যেন অপূর্ণতা ।
থাকবেইতো - বাঙালির আরাধ্য পুরুষ
সেই মহান নেতা এখনো যে আসেননি ।
কোটি জনতার ক্লান্ত চোখ
মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘ প্রতিক্ষা
সাহসী নেতাদের সতর্ক অপেক্ষা
কখন আসবেন তিনি ?
সেই মার্চ থেকে আজ অবধি
কত দিন হয়নি দেখা জনকের মূখ
কত দিন হয়নি শোনা সেই চিরচেনা কন্ঠে প্রিয় ভাষণ
অবশেষে প্রতিক্ষার করে অবসান
নেতা-জনতার আবারো মিলিত মাহেন্দ্রক্ষণ
তিনি এলেন
মুক্ত মানবের আলোকবর্তিকা নিয়ে
জনতার মাঝে
সোনার বাংলায় -
'ধন ধান্যে পুষ্পেভরা বসুন্ধরায়' ।
দশ জানুয়ারি ঊনিশ শত বাহাত্তর
বিজয় পেল পূর্ণতা
জনকের নিদের্শনায় - হলো শুরু
বাঙালির গণতন্ত্রের পথে অভিযাত্রা ।

দ্বন্দ্ব সমাসের সমস্তপদ

আমি আর তুমি
প্রেম কিংবা বিরহ
জিবন অথবা মরন
সে যাই হোক
তৈরি থেকো তুমি ।
দ্বন্দ্ব সমাসের সমস্তপদে
পরিনত করতে
যতই বাজুক দামামা
ছাড়বোনা আমি
কখনো এই প্রেম রণভূমি ।

আমি আকাশ দেখি প্রিয়ার চোখে

এইতো সেদিন
আমায় ডেকে বলে
নীল আকাশ,
তোমার দেবীর
নীল চোখেই
আমার বসবাস ।
সেদিন থেকে
বিশালতা, উদারতা
আর আস্তা-বিশ্বাস,
সে আমার
প্রিয়ার দু চোখ
ভালোবাসার নীল আকাশ ।

শুচিস্মিতা

শুচিস্মিতা, একটু হেসে দাও না
আমাকে ভাসাও স্বপ্ন সায়রে
তোমার হাসির ভেলায় ।
সাবুদ, ইন্দ্রজিতও হেরে যাবে
তোমার লাস্যময়ী ঐ
অধর যুগলের খেলায় !
শুচিস্মিতা, একটু হেসে দাও না
গুলবদনে লুকায়িত গোলাপের
পাপিড় যুগল খুলে আজ ।
সাবুদ, প্রতাপশালী সব সম্রাটও
লুটাবে তোমার চরনে
ফেলে তব মাথার তাজ !
শুচিস্মিতা, একটু হেসে দাও না
তাকায়ে মোর পানে নত নয়নে
মূখে দুষ্ট শব্দ চয়নে ।
সাবুদ, ভালোবেসে তোমায় আমি
উৎসর্গ করবো মোর সবই
কেবলই তোমার স্বপ্ন পুরনে !

শ্যাম রাখি না কূল

বন্ধুত্বের খেলায়
চলতে গিয়ে হঠাৎ
ভেসে প্রেমের ভেলায় -
বুঝি হলো ভুল
এখন আমি
শ্যাম রাখি না কূল ।
বন্ধুতা না প্রেম
দুটোই যে
মোর কাছে হেম !
তুই এখন বল্
কি করি তবে
তোর ইচ্ছেমত চল ।

এক হলেও পার্থক্য আছে !

সূর্যোদয়ের আগে
যে আকাশ হয় লাল
সূর্যাস্তের আগেও
সে আকাশ হয় লাল ।
তবে –
দুই লাল এক নয়
একটির পরে আসে আলো
অন্যটি ডেকে আনে আঁধারের কাল !
তাই যারা বলেন –
সব মানুষের রক্তের রঙ লাল
নিলাম মেনে সে একই রূপ ।
তবে বলিরে ভাই
ভালো মানুষ আর খারাপ মানুষ
আকাশ-পাতাল পার্থক্য স্বরূপ !

প্রতীক্ষার দূতক্রীড়া

নয়নের জলে ভেসে কতোটা সময় গেছে কেটে
তোমারই বিরহে মোর নিয়ত নিশুতি বেলা
নতোন্নত মনের পথ ধরে আজকেও বুঝি
আঁখি যুগলের হবে নাকো পলক ফেলা ।
কী হও তুমি? কেনই বা তোমার অপেক্ষায়-
নিসঙ্গতার দিনগুনি ভেবে বসন্তের কতো দেরি আর
তুমি আসবেই মনের সাথে তব এ দূতক্রীড়ায়
হবে কি জয়! নাকি প্রতীক্ষায়ই জিবন হবে পার ।
যদি হেরে যাই এ জিবনে তোমার দর্শন বিনে
মুকুলিত মোর ভালোবাসার এ অকাল প্রয়াণে
প্রস্ফুটিত সব প্রসূন কবে সব ভোমরের কানে
মিথ্যে প্রেম! আর থাকবোনা কখনও কারো ধ্যানে ।

জিবনে মোর বসন্ত না হয় নাই হলো !

বসন্তের প্রথম দিনে
ছিলাম কিছুটা সময় ফুলের সাথে
ফুলকে বললাম - হয়ে যাই ভ্রমর
ফুল বলে - মাথা খারাপ তোর !
উদাস মনে তাকালাম আকাশ পানে
আসলো এক মানবী ধ্যানে
মানবীকে বললাম - হয়ে যাই ভ্রমর
মানবী বলে - মাথা খারাপ তোর !
পুষ্পিতা মানবী থাক তবে ভালো
জিবনে মোর বসন্ত না হয় নাই হলো !

দাম্পত্য মিলন

ভালোবাসার আকাশ যদি পাপের মেঘে ঢাকে
জিবন হারিয়ে যায় চোরাবালির বাঁকে
হতাশা-হাহাকারে নামে কেবল ধ্বংস চলার পথে
স্বপ্ন হারায় তব রাতকানার মত হতচ্ছড়ার রথে ।
ভালো যদি বাসো তবে বাসো আপন করে
প্রেমকে পাপাচার করোনা তুমি যেন ঘুণাক্ষরে
সত্য প্রেম ছাড়ায় আলো যেমন সূখ সূর্য কিরণ
তাইতো খোদাও ভালোবাসেন কেবল দাম্পত্য মিলন ।

আর্জি

ত্রিশ লক্ষ
দুটি পক্ষ
এ নিয়েও !
প্রায় অর্ধশত
বছর গত
অথচ বিভক্ত !
জাতির কাছে
আর্জি আছে
এ প্রজন্মের –
ঐক্যের রশি
ধরো সবে
একাত্তরের ।

সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬

রংধনু কহে

হে যুবক শোনো, রংধনু কহে -
যৌবন- জোয়ার ক্ষণকাল বহে ।
আমারই মতন সবার ক্ষণিকের জীবন
পৃথিবীতে যত জীব রব করেছেন সৃজন ।
বৃষ্টির জলকণা আর সূর্যের আলো
এ দুই কল্যাণে মোর জন্ম হলো ।
তেমনি যুবক তোমার পিতা-মাতা
এ ধরায় তোমার অস্তিত্ব দাতা ।
তারা কত কষ্ট করে তোমায় রাঙালো
বিপরীতে নিভছে তাদের জীবন আলো ।
সামান্য মোহে তাদের মূখ করো না মলিন ।
আমার মত তুমিও একদিন হবে বিলীন ।

পতাকা দিবসের শপথ

এলে অগ্নিঝরা মার্চ-পতাকা দিবস
হৃদয় ওঠে মোর উত্তেজনায় দুলে
আহা ! থাকতাম যদি একাত্তরে
পতাকাখানি আমিও ধরতাম তুলে ।
যেমন সেদিন আমার অগ্রজ
লাখো লাখো বীর বাঙালি
মুক্তির আশায় বাতাসে ভাসায়
লাল সবুজের প্রেরণার ঢালী ।
সেই প্রহরের চেতনার ধারা
সব অনুজের দেহে হোক বহমান
চির উন্নত রাখবো এই পতাকা
এসো এ শপথে হই মোরা বলিয়ান ।

শিশুদের পাশে দাড়াও

মা - বাবা এই মহান ডাককে কলুষিত করছে যারা
মাতা – পিতা নাকো যেন হিংস্র পশু তারা !
যার মোহে এরা করছে হত্যা শিশু সন্তান
পরকিয়া পাপে মেতে বিলিয়ে সম্মান
ইহকাল - পরকাল আর হারিয়ে ফেলে রব
মাতা -পিতার মহত্বকে এরা করছে শব !
সমাজের সর্ব মহল এর বিরুদ্ধে ওঠো জেগে
শয়তান সৃষ্ট এ ব্যাধি তবেই যাবে ভেগে ।
নিষ্পাপ শিশুদের পাশে দাড়াও, করো প্রতিকার
কোন শিশু না হয় যেন এসব ঘাতকের শিকার ।

৭ মার্চে এ প্রজন্মের দাবি

৭ মার্চে এ প্রজন্মের দাবি
হেথায় আছেন কোন নেতা
দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার
দিবেন আপোষহীন ঘোষণা ।
যেমন করে সেই একাত্তরে
সাত মার্চের ঘোষণার পরে
স্বধীনতার জন্য জাতি
জেগেছিল প্রতি ঘরে ঘরে ।
নতুন ভাবে তেমন করে
আসুক ঘোষণা জাতির তরে
আর প্রতিধ্বনিত্ব হোক তা
প্রতি কন্ঠে অবিরাম
"এবারের সংগ্রাম -
দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার সংগ্রাম ।"

নারীকে মোর প্রতিশ্রুতি

তোমার স্বপ্নগুলো আজ আমার
আপন করে সবই নিলাম ।
নারী দিবসে তোমায় আমি
এ প্রতিশ্রুতিটুকু দিলাম ।
ধরার বুকে মোর যাত্রা পথে
হাত রেখে দুজনে হাতে ।
উভয়ের অধিকার মেনে নেব
মোরা সুষম চেতনার সাথে ।
কর্ম কাজে কিবা সমাজ রাজে
ফেলবো কদম সমান তালে ।
জয় হোক কেবলই মানবতার
নারী-পুরুষ বৈষম্যহীন কালে ।

স্মার্টফোনে বন্দি তরুন

স্মার্টফোনে বন্দি তরুন
একটু মনযোগ দাও সমাজচিন্তায়
নইলে বাস অযোগ্য হবে ধরা তোমারই জন্য
সবভালো করে ঝাটিয়ে বিদায় !
তুমিও হয়তো বাবা হবে কোনদিন
বংশগতির চিরচেনা ধারায়
সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত করবে প্রত্যাশা
সে প্রহরে কে দেবে সঙ্গ তোমায় ?
সংস্কৃতির ভালো-মন্দ একটু বোঝ
ভবিষ্যত পৃথিবী দেখো তোমার কল্পনায়
কেমন হবে ? কেমন চাও ?
যেদিন পরিনত হবে তুমি বৃদ্ধের কিনারায় ।
শুধু থেকোনা বিনোদন ভুবনে
চেতনাহীন শিহরণ আর রোমাঞ্চ ভাবনায়
কতো অগ্রজ, কতো অনুজ আছে চেয়ে তোমার পানে
তুমিই ধরবে জাতির হাল সে কামনায় ।
স্মার্টফোনে বন্দি তরুন
একটু মনযোগ দাও সমাজচিন্তায়
গাও শিকল ভাঙার গান
সুন্দর, কল্যান আর শুভ কামনায় ।

প্রতিদান

হঠাৎ নদীর পাড় ভাঙার মতন
যদি ভেঙে যায় তোমার প্রতাশা, প্রাপ্তি কিংবা স্বপন
বন্ধু, দু:খ করো না ।
সময়ের স্রোত একভাবে চলেনা সবসময়
হয়তো উত্তাল জোয়ার সমৃদ্ধির পলি আনতে পারে বয়ে
যা তুমি জানোনা ।
ধরো ধৈর্য, চলার পথে এ ভুবনে
যথাযথ কর্ম করে সম্পাদন সময় মতন
কর্মফল নিয়ে ভেবোনা ।
প্রতিদান পাবে ঠিকই একদিন
জানোতো ভালো এর সাথে ভালো বিনিময়ই করেন
দয়াময় প্রভু রব্বানা ।

তারা ই রাজাকার

তখন হোক
অথবা হোক এখন
যারা চায়
ভিন্ন হোক দেশের আয়তন
অথবা রাষ্ট্র চরিত্রের বাহার
তারা ই রাজাকার !
কিংবা
যারা ভালোবাসেনা
সবুজের উপর লাল রঙ
পাল্টে যায় মাঝে মাঝেই
দেশপ্রেমের ঢঙ
হোক সে আমজনতা
অথবা রাজনীতির খেলোয়ার
তারা ই রাজাকার !
এমনও হতে পারে
মুখে জাতীয় সঙ্গীত
কিন্তু অন্তর ভিন জাতির সংস্কৃতির ভীত
কথা বিকৃত বাংলা ভাষার
তারা ই রাজাকার !
আরও ভয়ঙ্কর
মুখে মানুষ ভালোবাসে শুধু
অথচ চায় খেতে ফাও সংখ্যালগুর সম্পদ
অথবা সুযোগ পেলে
জ্বালায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদ
এই সব কুলাঙ্গার
তারা ই রাজাকার !
অবাক হবেন না
যদি গায়ে থাকে সফেদ পোশাক
ভালো কথার ছবকের জিকির
কিন্তু মনে দুর্নীতির ফন্দি ফিকির
এসব মান্যবর
তারা ই রাজাকার !

পথিকের প্রেম

কেশবতী কন্যার মেঘ বরন চুল
শিমুল রং তার লাল ফিতা ফুল
দক্ষিনের আত্মভোলা বাতাসে যায় দুলে
ক্লান্ত পথিক সব পাগল তার প্রেমে ।
দেহখানি ভরা তার বটের ছায়ায়
যত দেখা তত ভরে হৃদয় মায়ায়
ভেবে পথিকের এবার দুহাত মাথায়
ভুলেছিল সে অন্য রূপে হেথায় সেথায় !
চলার পথে ভাবে পথিক এ কোন ক্ষনে
এলো সে আজ শিমুল কন্যার কাছে
কেনবা হলো শুরু মনে গঙ্গোর্মি খেলা
এলো কি তবে সে কাঙ্ক্ষিত বেলা!
উহ!এমন সময় যদি বাজাতো সানাই কোনজনে
বুলবুলি সাজতো পথিক ভাবে মনে মনে
স্বার্থক হতো তবে শিমুল কন্যার দর্শন
সুন্দর তব প্রকৃতি প্রেমিক যাযাবর জীবন !

ওরে বাঁশরে....

খালি সমালোচনা করস্ ক্যান
তারা কেরামতি সম্পন্ন ইঞ্জিনিয়ার!
মস্তবড় কমিশন কন্টাকটর !
ছু মন্তর টাইপ বিল্ডার !
জানোস তাদের পাওয়ার ?
এ মহরা দিতে দিতেই একদিন
বাঁশ, সুরকি দিয়ে বানাবে তারা
বিশ্বের সবচে বড় টাওয়ার !

যাবই যাব

ভয়াল কালো মেঘের কোলে -
আমি কেন সদা লুকিয়ে রবো ?
মেঘাচ্ছন্ন সেই আকাশ হাসিয়ে
স্বপ্নের রংধনু ঠিকই হবো !
চলার পথে আঁধার যদি নামে
কাঁপবো কেন ভয়ে থর-থর ?
আলোর আশায় নিয়ত দৃঢ় প্রত্যয়ে
জোর কদমে ডিঙ্গাবো পথ-প্রান্তর !
স্বপ্ন ভাঙবে ! ভাঙুক !!
গড়বো নতুন করে তা ফের !!!
যাবই যাব । যেতে চাই যেথায় –
লক্ষ্য একটাই – জীবন যুদ্ধে জয়ের !

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

ভ্রান্তি

মনের আকাশে হঠাৎ একদিন
উঠেছিল যে প্রেমের চাঁদ
কিছুদিন যেতে না যেতে বুঝলাম
উহু, ছিল তা ছলনাময়ী ফাঁদ !
এখন সে ওঠে রোজ অন্য আকাশে
ভেঙে আমার সব স্বপ্ন সাধ
সময়ের সাথে কেটে গেলো ভ্রান্তি
প্রেম নয় । ওসব ছিল বালুর বাধ !

রজব মাসে মোর মোনাজাত

এসেছে রজব মাস-সুপ্রসন্ন হলো মোর বরাত
হে আল্লাহ তোমার কাছে আজ করি মোনাজাত ।
পাপে ভরা জীবন আমার তবু তুলেছি দু হাত
ক্ষমা করো হে প্রভু - বাড়াও মোর হায়াত ।
শাবান - রমজান মাসেও যেন বেঁচে থাকি তোমারি দয়ায়
স্মরি যেন তোমারই নাম সদা সে হায়াতের জামানায় ।
সালাত, তাসবিহ আর রমজানের হক করে আদায়
তোমার পথে অটল থাকার কালে তব ডাক দিও আমায় ।

নাটাই-ঘুড়ি

কিসে তোমার এতো অহমিকা
কিসের দেখাও বাহাদুরি
কার হাতে রয়েছে নাটাই চরকা
তুমি ওরাও যে রঙিন ঘুড়ি ?
ভাবো তুমি বেশ যাবে উড়ে
মনে ইচ্ছে যেথা হয়
জান কি তা এক মিছে স্বপন
যদি সৃষ্টিকর্তার মর্জি না হয় ।
কর্ম ধর্ম সেই সবের মর্ম
নানা পথে মতে ঘোরা
সব কিছুরই হিসেব নেবেন
যিনি রয়েছেন নাটাই ধরা ।
ওরাও ঘুড়ি তুমি কোন পথে মতে
হিসেব কষে করো দেখভাল
প্রত্যাবর্তন যেন সুখের হয় তোমার
হলে শেষ আকাশে ওরার কাল।

ভুলে ভরা ফুলের প্রেম

যখন যৌবন শেষের কাছাকাছি
অবাক বিস্ময়ে ফুল দেখে হায় –
কমে গেছে ভ্রমরের নাচানাচি !
এ কেমন প্রেমের পরিনতি
তবে কি ভালোবেসেছে সে যৌবনকালে
নিয়ম ভেঙ্গে অতি !
কতো ভ্রমর এসেছিল-
কতো সুরে গেয়েছিলো গান ?
সত্য প্রেম কোনটি ছিলো
আজ কেন সব হয়ে যাচ্ছে ম্লান !
সময় নির্মম নাকি ভ্রমর
নাকি দুটোই - ভাবে ফুল
তবে কি যৌবন-মোহ প্রেম
ছিলো সবই মারাত্মক ভুল !
হ্যাঁ, প্রেম সে তো রয় চিরদিন
জীবন্ত সতেজ এ ধরার বুকে
থাকে অটুট-সত্য-শুদ্ধ প্রেম
বাকি সব একসময় যায় চুকে !

ভালো নাবাসার অধিকার

এই মেয়ে কথা ছিল
বলি শোনো দিয়ে মন
বাসতে চাই ভালো তোমায়
করতে মোর প্রিয়জন ।
আমার কথায় দেখি মেয়ে
করছে বিব্রত বোধ
মন বলে এতো প্রেম নয়
এক তরফা গতি রোধ !
ক্ষমা চেয়ে বললাম তারে-
আমার আছে তোমায়
যেমন ভালোবাসার অধিকার
তেমারও আছে ঠিক তেমনি
আমায় ভালো নাবাসার অধিকার ।
শুনে মেয়ে হেসে বলে -
ধন্যবাদ তোমায় ভাই
তোমার মত সব ছেলের
এমনই শ্রদ্ধাবোধ চাই ।
যে তোমায় ভালোবাসে
নিবেদন করো কেবল তারে
নিরাপদ স্বদেশ গড়ো ভাই
বাংলার সকল নারীর তরে ।

আলহামদুলিল্লাহ - হে রহমান

দু:সময় কিংবা সু-সময়
কোনটিই চিরস্থায়ী নয় ।
অহমিকামুক্ত- ধৈর্যশীলদেরই
পরিনামে হয় সর্বদা জয় ।
জীবন সাগরে ঢেউয়ের খেলা
সেতো চিরদিনই বহমান ।
সেই সফল যে বলে প্রতিক্ষণে
“আলহামদুলিল্লাহ - হে রহমান” ।

এনে দাও ভোর

রাত কি পোহাবে না ? হবে না কি ভোর ?
বইবে না কি সুবাতাস ? খুলবে না বুলন্দ দ্বোর ?
তমাশার অন্ধকারে কতো আর লুকাবে মূখ ?
বিভোর থেকে ঘুমে কি এমন পাও সুখ ?
অথচ তোমার ধরার মাঝে কাঁদে মানবকুল
শোষণ নিপিড়নে তারা আজ বিপদসংকুল
মুখে নাই আহার তাদের, কেউবা বাস্তুহারা
এমন দুর্দশা তোমায় কেন দেয়না নাড়া?
জালিম মুনাফিকেরা তাদের টুটি ধরছে চেঁপে
গুলির শব্দে মজলুম হৃদয় নিয়ত ওঠে কেঁপে
অথচ তুমি চুপ, ক্লান্তিভরা ঘুমে বিভোর
জাগো বিশ্ব মুসলিম এখনই-এনে দাও ভোর ।

একটা নজরুল চাই

একটা নজরুল চাই ভাই
বিদ্রোহী নজরুল ,
সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব যে আজ
ভয়ংকর সব সমস্যা সংকুল ।
গাইবে সে সাম্যের গান
বীর যৌবনে জাগাবে কম্পন,
শোষক নিপীড়ক করে বিদায়
বাজাবে ঢংকা, ওরাবে জয় তোরণ ।
ছড়াবে আলো আদিত্য সম
তাড়াবে অন্ধকার কাল
বঞ্চিত মানবতার নেতা হয়ে
জ্বালাবে দ্রোহের দ্বীপ্ত মশাল ।
বিষের বাঁশিতে তোলবে সুর
বিশ্বসভার মহারণ মাঝ
জাগাবে স্বপ্ন সব মানসপটে
সৃষ্টি সুখের শান্তির সমাজ ।

বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬

সব পুরুষ কর্মী মৌমাছি

সব পুরুষ কর্মী মৌমাছির মতন
রানীকে পাহারা দেয়া
ফুলে বনে ঘুরে মৌচাকে মধু জমানো
সবই পরার্থে সম্পাদন।
ক্লান্ত শ্রান্ত খেটে খাওয়া জীবন
যার খোজ রাখেনা কেউ
সময় পৌছে যায় ধীরে ধীরে সাঁজবেলায়
একসময় চিরতরে গমন ।
সব পুরুষ কর্মী মৌমাছির মতন ।।
কর্মই যার ধর্ম, কর্মই যার জীবন
সব পুরুষ কর্মী মৌমাছির মতন ।।

কবিতায় আজ নির্বাক অক্ষর

কবিতার খাতায় আজ অক্ষরগুলি নির্বাক
শব্দ চয়নের তেলেসমাতি অসম্ভব দক্ষতার পরিচায়ক
বটেইতো আজকালকার কবিরাও যে চালাক !!!
তাইতো সমাজের অসংগতি ধরা পড়েনা আজ কলমের জালে
আর্থিক বৈষম্য নিয়ে তেমন কবিতা দেখিনা এ আধুনিক কালে
আচারের কুসংস্কার দিব্যি থেকে যায় চোখের অগোচরে -কি অবাক !
কবিতার খাতায় আজ অক্ষরগুলি নির্বাক
মজলুম জনতার কন্ঠসরের ধ্বনি সেথায় প্রতিধ্বনিত হয় কমই আজ
প্রভাবশালীর অবৈধ অহংকারের কাছে কবিতাদের দেখি দুর্বল হাঁক !
তাইতো মানবতার কথা বলতে বহু হিসেব কষাকষি চলে
ভুলে সরল পথ -পথিক তারা আজ নানান মতের ভ্রান্ত দলে
এভাবে কতোদিন আর চলবে কবি? ভাঙবে না কি কানাগলির বাঁক ?
আমি চাই, তুমিও চাও হে কবি -
শীত নিদ্রা ভেঙে যাক বিদ্রোহী কবিতার !
হোক অসির চেয়ে বড় কবিতার অক্ষর
সবাক হোক মানবতার কবির রবির কর !

পূর্ণিমাটা তোমার বিপরীতটা আমার

রবি ঠাকুরের সেই গানটির মতোই
কোন এক পূর্ণিমা রাতে -
মধুর লগন নামিয়ে এনেছিলাম
শুধুমাত্র ভালোবাসার বিনিময়ে ।
মনে হয়েছিলো পূর্ণিমাটা চিরদিন রবে সাথে
যদিও ভাবনাটা ছিলো বিজ্ঞান বিরোধী-অর্থনীতি বিরোধী ! অসার !
তবে কি আজ আবেগ আর অর্থ-বিজ্ঞানের দ্বন্দে-
পূর্ণিমাটা তোমার বিপরীতটা আমার ।

যতি চিহ্নের দ্বন্দে ভালোবাসা

তুমি আমায় ভালোবাসো । না এ কোন হিসেবের ছক আকাআকি ।
খুজে পাই প্রেম । হীন কারনে অকারনে তোমার চোখ পানে চেয়ে
দেখি সবসময় আমায় নিয়ে কেমন আবেগ !
অথবা
তুমি আমায় ভালোবাসো না । এ কোন হিসেবের ছক আকাআকি ?
খুজে পাই প্রেম হীন । কারনে অকারনে তোমার চোখ পানে চেয়ে
দেখি সবসময় আমায় নিয়ে কেমন আবেগ ?

ঈদের সাজ

নতুন পোশাকে সাজাবে দেহ
মন সাজাবে কেমন করে ?
সাজাবে কি তারে ভালোবাসায় 
তব বিশ্ব মানবতার তরে ?
এক দিন নয় সাজাও প্রতি দিন
শুভ কামনায় তোমার মন ।
মনের সাজে অশুভ হবে দূর
তবেই সফল ঈদ কল্যান চিরন্তন ।

জলের গান

অনুরোধ করি, শোন হে বিশ্ববাসী আমার আজকের আহবান
সবাই মিলে এসো গাই সমস্বরে এক ভিন্নতর ' জলের গান ' ।
সুপেয় পানিই জীবন এ কথা সবারই আছে জানা
সে অধিকারেও পড়ছে আজ বিশ্বজুড়ে দানবের হানা ।
দিনে দিনে বাড়ছে বিশ্বের প্রান্তরে প্রান্তরে নদ-নদীতে বাঁধ
মানবের কারনে মানব মারার তৈরী হচ্ছে নতুন নতুন ফাঁদ ।
আমি বলি প্রকৃতির দেয়া এই দানে আছে সবার অধিকার
সুপেয় পানির সংকট সৃষ্টি স্পষ্টত লংঘিত মানবাধিকার ।
জাতিসংঘের আছে হুশিয়ারী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতে পারে জলের কারনে
দরিদ্রতার চেয়েও মহামারী হবে তা - সকল সচেতন চিত্তই জানে ।
জাগ্রত হও বিশ্ববিবেক, এখনই আনো একই সুর সবার কন্ঠস্বরে
যে দেশেই হোক, যে নদীরই হোক - ' সব জল সকলের তরে '।
সার্বজনীন পানি বন্টন নীতি হোক রাজনীতি অর্থনীতির ঊর্ধ্বে
জল যেন না হয় ' তেল ' কিংবা কোন বাণিজ‌্যিক পণ্য ভবিতব্যে ।
পানি মজুদকারীদের লোভ থেকে মুক্ত থাকুক কোটি মানুষের প্রাণ
এই হোক আজকের ব্রত - এই মোদের ভিন্নতর ' জলের গান ' ।

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬

ঈদের শেষে

ঈদের শেষে খানিক পরে
ভুলিস নারে মন
জেগেছিল সবার তরে
যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ।
ভালোবেসে রাখিস ধরে
আজকের দিনের ভাব
ধনী গরিব ভেদাভেদ হীন
এ সময়টুকুর ছাপ ।
ঈদের শেষেও থাকুক মম
এ আত্মার বন্ধন চিরদিন
পুরো বর্ষ থাকুক হর্ষ
দু:খ করে লীন ।
ভালোবেসে থাকরে মন
সদা আজকের ন্যায়
বয়ে যাক শান্তির বাতাস
তব তামাম দুনিয়ায় ।

সুকেশিনী

সুকেশিনী, দেখে তোমার চুল
হয়ে ভীষণ আত্মহারা
ফিসফিস করে বলে
নীল আকাশের সব তারা –
" ইচ্ছে করে নেমে এসে
হই তোমার খোপার ফুল
থাকি তোমার প্রেমে বিভোর
হয়ে আমি চির ব্যাকুল ।
জ্বলি মিটিমিটি প্রতি রাতে
তোমার চুলের মাঝে
ভালোবেসে মিশে থাকি
সুকোমল খোপার ভাজে । "

চাই কদম, চাই প্রেম

হে নয়ন শীতলকারী মালিনী মোর
তোর কাছে -
চাই কদম, চাই প্রেম ।
এই আষাঢ়ে কোন আষাঢ়ে গল্প নয়
তোর কাছে -
চাই রিমঝিম ভালোবাসা- সেই তো মণি মুক্তা হেম ।
জানি প্রেমেও জৈব যৌগের বহুরূপতা আছে
ছলা কলা অথবা রাজনীতিতে যেমন শেষ কথা বলে কিছু নেই
প্রেমও নাকি তেমনি !
যারা প্রেম করছে সবাই কসম করেই এ কথা বলেছে !
তবুও সাহস করি - তোর কাছে যাওয়ার
কেন জানিস ?
শুনেছি কদম ফুল তোর ভীষন প্রিয় ।
পথশিশুদের কাছ থেকে অনেক আদর করেই চড়া দামে কিনে নিয়ে
ভালোবাসার আভিজাত্য দেখাস্ তুই
তাইতো এই বর্ষার মত তোকে ছুতে চাই
কদম ফুলকে ভালোবেসে সিক্ত বর্ষার মতই ।
কিফিরিয়ে দিবি ? নাকি কদমফুলের মত কিনে নিবি ! প্রেম অভিসারে প্রত্যাশায় বিনামূল্যে !
হে নয়ন শীতলকারী মালিনী মোর
অপেক্ষায় রইলাম -
প্রস্ফুটিত কদম তলায়।

নয়নে নয়ন রাখো

নয়নে নয়ন রাখো বন্ধু ।
নয়নে নয়ন রেখে - চয়ন করতে চাই প্রেমের কবিতা জনম জনম
সময় হবে কি একটু তোমার ? পাশে বসবার - কসম, এই প্রথম !
ভালোবাসার ছবক নিতে মন চাইছে - ভীষন শূন্যতা হৃদয় মাঝে মোর
প্রশমনে এগিয়ে আসো । নইলে নিশ্চত হবে ঝর - ঘুর্ণিঘোর -
ধুলির মত উড়ে যাব । তুমি বিনে কে আছে আঁচলে জড়াবে বন্ধু
নয়নে নয়ন রাখো - ঐতো দেখছি প্রেম । না রাখলে বিষাদ সিন্ধু ।
নয়নে নয়ন রাখো বন্ধু ।
নয়নে নয়ন রেখে - শুনাতে চাই যৌবনের জয়গান হয়ে জিয়ন কাঠি
নয়তো স্বল্পায়ু হবে মৌবন ! হবেনা সুরের গুঞ্জন ! জীবন মরু - মাটি ।
ভালোবাসার ছবক নিতে মন চাইছে - একাকি থাকার যন্ত্রনায় কাতর মন
দূরীভুত করতে এগিয়ে আসো । নইলে নিশ্চত অমাবস্যার অন্ধকার -
কালো ছায়ায় ঢেকে যাব । তুমি বিনে কে আছে আলো ছড়াবে বন্ধুবর
নয়নে নয়ন রাখো - ঐতো দেখছি পূর্ণিমা । না রাখলে কৃষ্ণ গহব্বর ।
নয়নে নয়ন রাখো বন্ধু ।

আতা গাছে তোতা পাখি ( রিমিক )

আতা গাছে তোতা পাখি
ডালিম গাছে মৌ
কিনে দেব লাল শাড়ি
হবে নাকি বউ !
যদি বউ সাজো গো
আরও সুন্দর লাগবে গো .......
আতা গাছে তোতা পাখি
পাখি গেলো উড়ে
বউ না পেয়ে কাটাই সময়
দেবদাস হয়ে ঘুরে !
ইসসসসসসসসসসস
দোলারে দোলারে দোলা দোলা......
ডালিম গাছও গেলো মরে
বউ এখন অন্য ঘরে
বন্য হয়ে হন্য হই
এ কবিতাটা পড়ে ।
কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে
রাতেরই অন্ধকারে........
আতা গাছে তোতা পাখি
ডালিম গাছে মৌ
জীবনখানা তুমি গড়ো
দায়ী নয়তো কেউ ।

মানবতার কবর বালুচরে

সমুদ্রে ঢেউ আছড়ে পরে
রচে মানবতার কবর বালুচরে
অথচ বিশ্ব তাকিয়ে অর্থনীতি বোঝে
সমুদ্রে ভাসার ভিন্ন মানে খোজে !
বিশ্ব করে এক কালে লুন্ঠন
সম্পদ করে একত্রে জড়ো
আজ ঢেকে অবগুন্ঠণ
ভাবে মানবতার চেয়ে অর্থ বড় !
সমুদ্রে ঢেউ আছড়ে পরে
রচে মানবতার কবর বালুচরে
অথচ বহুজাতিক কোম্পানি নতুন বাজার খোজে
লাভ-লোকসানের খুটি নাটি বোঝে !
দিবা রাত্রি বিশ্ব করে শোষণ
সম্পদের গড়ে তারা পাহাড়
আজ ঢেকে অবগুন্ঠণ
ভাবে দারিদ্রতা মোচনের চেয়ে বাজার বড় !
সমুদ্রে ঢেউ আছড়ে পরে
রচে মানবতার কবর বালুচরে
অথচ সন্ত্রসীরা ক্ষমতার আশায়
মাতে অস্ত্রের নগ্ন খেলায় !
বিশ্বের স্থিতিশীলতা করে নষ্ট
তৈরী করে কিছু ভ্রষ্ট পথ
আজ ঢেকে অবগুন্ঠণ
ভাবে জনতার চেয়ে বড় মসনদ !
--------------------------------------------------
উৎসর্গ : আয়লান কুর্দিকে
---------------------------------------------------------------