কিক
- সাকিব জামাল
সুযোগ পেলে-
মানুষকেও কিক মারে মানুষ!
অথচ, সময়ের প্যারামিটারে-
সব খেলাই ঠুনকো ফানুস!
নয় ছয়! অতঃপর, জয়।
ক্ষণকালের অনুভূতি মাত্র!
একটু হ্যাপি হরমোনের জন্য-
মানুষ কী করে অমানবিক হয়?
এসব দেখে,
নিরবে কাঁদে- মহাসময়!
কিক
- সাকিব জামাল
সুযোগ পেলে-
মানুষকেও কিক মারে মানুষ!
অথচ, সময়ের প্যারামিটারে-
সব খেলাই ঠুনকো ফানুস!
নয় ছয়! অতঃপর, জয়।
ক্ষণকালের অনুভূতি মাত্র!
একটু হ্যাপি হরমোনের জন্য-
মানুষ কী করে অমানবিক হয়?
এসব দেখে,
নিরবে কাঁদে- মহাসময়!
গ্রামীণ জোছনা
- সাকিব জামাল
জোছনা ডাক দিয়েছে- বাবুই বাড়ির মোহনায়,
জানালার গ্রিল ভেঙে উড়াল মেরেছে চোখ!
টিকছে না জোনাকি মন, এই শহরে আর!
শহুরে রাত- চুমু খেয়ে, তৃপ্তি নেই।
চোখ, ঠোঁট অস্থির। ছুটে চলে গ্রামে- পাখির ডানায়।
বিস্তীর্ণ সবুজ ধান ক্ষেত, মাঝ বরাবর-
যেন কিশোরী শরীরের ভাঁজ- মেঠো পথ।
আকাশের কাপে,
স্বর্গঘ্রাণে, চুমুকে চুমুকে-
এসো, সে পথে চলি দু' আত্মা অবিরাম ধ্যানে!
তোমার কালোটিপ, আমার কালবেলা!
- সাকিব জামাল
বেদনার রঙ কতোটা গাঢ় হলে,
তুমি, কপালে পড়ো কালোটিপ?
মন খারাপের সেইসব গল্প তোমার,
শুনতে চেয়েছিলাম-
ভালোবেসে।
হয়তো, বিশ্বাস রাখো নি! বলো নি!
অথচ, ভেবেছিলাম, তোমার দুঃখদিনে-
একান্তে সারথি হবো। মনমেঘে রঙ মিলাতে-
কপালে দিবো কালোটিপ, আমিও!
তারপর, হাতে হাত রেখে, মুছে ফেলবো-
জীবনের স্লেটে লেখা- অনাকাঙ্খিত শব্দসকল!
তোমার ভ্রু যুগলের মাঝে ফুটে উঠবে-
একটি লাল গোলাপ। একটু বড়!
আর তুমিও ছুড়ে ফেলবে-
আমার কালবেলা!
ছেউরিয়ার ঘাট
- সাকিব জামাল
গাঢ় অন্ধকার রাত। হঠাৎ আকাশে ভাসে-
ষোলআনা যৌবনা একখানা চাঁদ। দেখে, বিস্মিত
এক গৃহত্যাগী বাউল। স্পর্শ আহ্বানে ধরে গান।
বাউল হাসে, চাঁদ হাসে।
বাউল হাটে, চাঁদ হাটে।
আপ্লুত মনে- চলে ছেউরিয়ার ঘাটে।
অথচ, নদীতে তখন তুমুল ঢেউ!
মন মজে- মোহ মোহনায়।
পাড়ি দেবার আশায়, পা বাড়াতেই-
সঙ্গত কারণে চাঁদ লুকায় ফের। ছলে,
একতারা ভেঙে পড়ে জলে।
একলা বাউল আরও একা হয়ে যায়- তত্ত্বমতে!
লীলাবতী, এই শীতে...
- সাকিব জামাল
পৌষ, প্রথম পক্ষ। কেটে গেছে অভিমান।
কমেছে কাঁটার ভয় দেখানোর কাল।
ফুটেছে 'মুচিফুল' প্রেমে- আসন্ন বংশধর!
রসবতী খেজুর গাছ-
মুচকি হেসে, ডাকে,
"গাছি, ব্যবচ্ছেদ করো আমায়!
হাঁড়ি বাধো। এই দেহের-
যৌবনা দহন জলের
মিষ্টি স্বাদ নাও!"
এরপর, পুরো শীতজুড়ে-
জোর কোমড়ে, নিয়ত গাছে উঠি আমি!
নিগূঢ় দর্শন
- সাকিব জামাল
নারী এবং ফুল,
টিকিয়ে রাখে সভ্যতা- ভীষণ অতুল!
বাকিরা, এই দুই ঘিরে বাঁচে।
এটাই সৃষ্টির রহস্য!
বোঝা যায়- নিগূঢ় চোখে।
খেলা হবে
- সাকিব জামাল
হ্যাঁ, খেলা হবে!
জনগনও খেলতে চায় এবার।
সবুজ মনে কৃষ্ণচূড়ার রঙে,
শাদা পায়রার ডানায় ডানায় উড়ে-
সব রাজনৈতিক দলের সাথেই খেলতে চায়।
স্বপ্ন একটাই-
সুশাসনের গোলটি নিখুঁতভাবে করা।
রেডি তো সবাই!
উড়বেই পতাকা জনতার বিজয়ের।
গতরাতে তোমাকে স্বপ্নে দেখার ইচ্ছে ছিল,
অথচ স্বপ্নে দেখেছি শঙ্খচিল! উড়ে গেলো...
এরপর, দিন কেটেছে-
একলা একা। ভীষণ অস্থিরতায়!
রাত নেমেছে- ভয়ে!
অতঃপর...
একটি বন্ধু আছে আমার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে-
সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টে পড়ে। শেষমেশ,
তার সাথেই দেখা করতে হলো...!
লাল ফুল। শাড়ির ভাঁজে লুকানো কোমল মাস্তুল।
কোথা থেকে আসে জল,
কোথায় গিয়ে হয় ফল?
ধ্যাণে জ্ঞানে বোঝে যারা- তারাই মূলত ঋষিকুল!
খালি চোখে-
কামরূপ! শুধু দেহ। খানিক মোহ।
ভ্রমর পাগল অহরহ।
ফলঃ অগ্নিদহ!
ধীর লয়, আত্মাঃ স্থিরময়।
খুঁজে পায়-
সৃষ্টির সাথে স্রষ্টা কীভাবে মিশে রয়! প্রেমরূপে-
কোন কোঠায়? কোন ফুল, ফল হয়- কোন সাধনায়?
নীল আকাশে রাস্তায় রাস্তায়-
আমি, শান্ত স্যাপিয়েন্স, হেঁটে চলছি একা।
আশা ছিলো, বেদনার রঙে-
আর কখনোই গল্প করবে না নক্ষত্রফুলের দল!
অথচ দেখি, প্রশান্ত মহাসাগর থেকে গোল্ডিলকস্ জোন
আজ কাঁপে- বিরহের তাপে!
হয়তো অদ্ভুত আশ্চর্য নিয়ে-
পৃথিবীর স্ববিরোধী এনার্জি কনজামশন,
দেখতে ছুটে আসে-
কিছু কিছু এলিয়েন মন!
আঁধার রাতের প্রত্যক্ষদর্শী পাইলটেরা,
স্বাক্ষ্য দিয়েছে ম্যাগাজিনের পাতায় পাতায়।
যুদ্ধকালে, ভাঙা প্রেমের দুঃখবোধঃ
ইউনিভার্স কিংবা মাল্টিভার্স জুড়ে ছড়িয়ে যায়!
বিকেল থেকেই আনন্দে নাঁচে একটি কর্মজীবী ভ্রমর!
প্রিয় ফুলটি তার- থাকে গ্রামে। ভাবে, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে-
পৌঁছেই দিবে চকলেটে কামড়!
ফুলটি সপ্তাহ জুড়ে একটু একটু করে ফোটে,
মনে খেলা করে- লজ্জা আর অভিমান!
ফিসফিস করে কথা কয়,
"আও কালাচাঁন, আও। তয়, দিমু না মুই-
এইবার আর লাল খিলিপান!"
অথচ, কী আশ্চর্য কেরামতি বৃহস্পতিবার রাতের-
শেষমেশ বৃষ্টিই নামে!
- সাকিব জামাল
নির্জন রাতের সৌরভে-
আমাকে একলা করি আমি! হেটে চলি-
প্রান্তিক পৃথিবীর পথে। পাশে যার হোগলা বন,
ফুটে থাকে মায়াবী জোনাকীর ফুলে।
নদীর জলে ডুবে থাকা-
একটি চাঁদের সাথে করি যৌথ স্নান!
তারপর, আঁধারে, বসি-
স্নিগ্ধ ধ্যানে সবুজ শাড়ির বুকে! প্রশান্ত প্রাঙ্গণে।
মহাশূণ্য তখন ভীষণকরে পূর্ণ হয়ে যায়-
তোমার ভালোবাসায়!
দুঃখতমা, কেন তুমি আমাকে এত্তো ভালোবাসো?
তোমার প্রেমে মাতাল আমি-
আমার প্রাক্তন সুখ-প্রেমিকাদের মনেই রাখি না।
তারা যেন সবাই-
তোমার ঠোঁটে হালকা রঙের লিপস্টিক,
জীবন, একটু চুমু খেতেই হারিয়ে যায়!
আর ফিরে আসে না। জোছনা শেষের গানে-
অমাবস্যার ফুল ফুটে ওঠে চারদিক!
আমি তোমাকেই ফের জড়িয়ে ধরি- অদ্ভুত মায়ায়!
দুঃখতমা, আমাকে কী আরেকটু কম ভালোবাসা যায় না!
কুসুম গরম মেঘলা দিনে-
শারদীয় শুদ্ধজল নামবার ক্ষণে, কাছে এসো, লালনিয়া।
আঙুলে আঙুল ধরো। ঠোঁটে ঠোঁট বাঁধো।
সভ্যতার জীয়নকাঠির বৈঠায়-
বাইতে দাও নাও, উজানে!
বৃষ্টি নামুক- মহাজাগতিক সৌরভে।
আর, আমাদের মস্তিষ্কজুড়ে ফুটুক-
পবিত্র পদ্মফুল, বিরামহীন।
মনপাখি
- সাকিব জামাল
একটি পাখি, উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ায়-
মনের আঙিনায়!
নাম কি তার জানি না,
বাসা কোথায় চিনি না,
দিনরাত তবু ডুবে থাকি-
তারই কামনায়।।
পাখিটি রূপে কালো গুণে সাদা,
কাজল চোখ প্রেমে আঁকা,
অঙ্গে অঙ্গে জমে আছে ভীষণ মমতা!
সেই পাখিটির জন্যই আমার-
মনটা পাগলপ্রায়।।
পাখিটি যখন ডাকে প্রেমের সুরে,
থাকা যায় না আর যে দূরে।
কাছে যাবার পথ জানি না, আমি-
মরি যন্ত্রণায়।।
কোথাও নেই হিমু!
- সাকিব জামাল
জীবনের বাস্তবতায়-
হারিয়ে গেছে হিমু হবার সাধ!
কলো কালো রঙের থাবায়-
প্রশান্তির হলুদেও মিশেছে বিষাদ।
মনের কোণে নেই সবুজ মাঠ।
শুধু কংক্রিটে রূপান্তর প্রকল্প চলে হালে।
উদ্দীপ্ত নিউরনসমস্ত নিমগ্ন আজ-
অনাকাঙ্খিত লৌকিক মায়াজালে।
অবশেষে,
ধীরে ধীরে নেমে আসে-
প্রেমিকাহীন জীবনানন্দের মতো অবসাদ।
হারিয়ে গেছে হিমু হবার সাধ!
স্বর্গগন্ধা মেয়ে
- সাকিব জামাল
স্বর্গফুলের ঘ্রাণ আমি পৃথিবীতেই পাই,
যখন তুমি ফোটো আমার মনের আঙিনায়!
ভাঁজে ভাঁজে তোমার-
সুখের নহর, ডাকে আমায় অষ্টপ্রহর!
কল্পনায় উড়ি আমি-
প্রজাপতির ডানায়! বাহানায়, বাহানায়-
কেটে যায় সময়। অন্তিমে নিজেকে হারাই-
ক্ষুধার্ত মাকড়সার জালে!
বাঁচবার উপায় বলো, মেয়ে, ইহকালে!
ধর্মতলা বাজার
- সাকিব জামাল
ধর্মতলায় গিয়ে দেখি-
সেখানেও আছে বাটপারি,
মিথ্যে কথার পসরা খুলে
চলছে নানান কারবারি!
এই বাজারে আমজনতা
ক্রেতা হয়ে খায় ধকল,
গুরু সাজা বিক্রেতাদের
পণ্যগুলো সব নকল!
এই বাজারে যারাই যায়
টাকা হারায়, বুদ্ধি হারায়।
বাঁচাতে হলে- মানবতা,
এই বাজার দাও বিদায়!
রমণফুল
- সাকিব জামাল
রেণুময় দখিনের হাওয়ায়, দোলা দেয় রমণফুল।
লজ্জায় না-লুকিয়ে, পেখম খোলে পাপড়ির মাস্তুল।
সৃষ্টির স্বপ্নে মাতাল হয় মন,
সভ্যতার আলো পায়- আদিম বন!
পবিত্র চক্রে, নারীবক্ষে, প্রেমেই বাঁচে মানবকুল।
ভাঙা প্রেমের স্মৃতি
- সাকিব জামাল
জানি দেখা হবে না, হবে না দেখা
আর কোনদিন!
প্রেমের আলোয় আঁকা স্বপ্নসকল
আঁধারে হয়েছে বিলীন।।
যদি না-রাখো চোখে, না-রাখো মনে
দুঃখ নেই আমার!
যতোটুকু পেয়েছি সেই তো অনেক
কী করে মেটাবো সে ঋণ?
যেখানে সুখ পাও, সেখানে তুমি যাও
অভিযোগ নেই আমার!
ভাঙা প্রেমের এই স্মৃতি নিয়েই-
আমি বাঁচবো বাকি দিন।।
একটি সাইকেল আর একটি খোলা জানালা
- সাকিব জামাল
একটি সাইকেল আর একটি খোলা জানালা
প্রতিদিনের গ্রামীণ সন্ধ্যায়,
কথা কয়-
ভীষণ মমতায়।
ক্রিং ক্রিং সুরে, যুগল চোখে,
মনসিজের আঁকা-
দারুণ এক উপন্যাস!
রোমান্টিক অথবা ট্র্যাজিক?
ক্লাইমেক্স ভাবনায়-
পাড়া-পড়শি ভোগে অস্থির ইনসমনিয়ায়!
শরৎ এসে গেছে
- সাকিব জামাল
আকাশের নন্দিত নীল, বলে, শরৎ এসে গেছে।
দখিনের কোমল বাতাস, বলে, শরৎ এসে গেছে।
অথচ তুমি কাছে আসোনি তাই
মন বলে, শরৎ আসে নাই, আসে নাই!
তা থৈ থৈ বিলে শাপলার ফুল, বলে, শরৎ এসে গেছে।
সবুজের মাঠে শাদা কাশবন, বলে, শরৎ এসে গেছে।
অথচ তুমি ভালোবাসোনি তাই
মন বলে, শরৎ আসে নাই, আসে নাই!
উল্টো অনুভূতির এই রথে,
যদি তুমি-
পরো নীল শাড়ি, দাও লালটিপ। আর কাজল চোখে,
চলো নুপুরের সুরে সুরে!
তোমার স্পর্শেই তখন, মন বলে, প্রকৃতির রঙে মিশে-
শরৎ এসে গেছে!
মায়াবিনী
- সাকিব জামাল
তারপর, এলো, চোখে চোখ রাখার পালা।
চন্দ্রমাসের মধ্যসময়ে-
জলে জোছনাভরা যৌবন, প্লাবিত বদ্বীপ।
সখি বলে, "সাঁই চায়,
দুজনে ডুবাই,
অথৈ প্রেমে-
পবিত্র নহরে নহরে!"
দমক্লান্ত ঘুম শেষে,
দেখি আমি, ঘুরে বেড়াই-
একা, অকূল দরিয়ার ঘাটে।
অথচ, কী দুর্ভাগ্য আমার,
বারো চান্দেও সাঁইয়ের দেখা না-পাই!
সভ্যতার স্মারক
- সাকিব জামাল
পৃথিবীর সমস্ত পথ আজ, যেন মিশে গেছে-
অন্ধকার সুড়ঙ্গের মোহনায়।
পথিকেরা বিভ্রান্ত!
অথচ, কথা ছিলো, আমাদের অভিযাত্রা হবে-
আলোর দিকে, সভ্যতা উত্তরণের সংগ্রামে।
শুধু প্রাণ থেকে বিবর্তিত প্রাণী হবো না আমরা!
হবো সমৃদ্ধ মানবতার উৎকৃষ্ট ধারক।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে, ভুলতে বসেছি,
সেই স্মারক!
আদিম যুগে যা স্বাক্ষর করেছিলাম-
উন্নত সভ্যতার স্বাপ্নিক অক্ষরে,
মানবিক পৃথিবী গড়ার প্রত্যাশায়!
বুলন্দ দরজা
- সাকিব জামাল
অপ্রিয় ভেবে, কোন দুয়ার বন্ধ করবে তুমি, বন্ধু?
আমি যে চেয়ে থাকি কেবল আকাশের দিকে!
জীবন যখন আটকে পড়ে মোহাচ্ছন্ন পৃথিবীর ছলে-
নিরাশা নৃত্য করে মনের ঘরে,
বৈঠা ছেড়ে দেয়- স্বপ্ন মাঝি,
অন্ধকারে গিলে খায় চলার পথ,
রহমের বৃষ্টি খোঁজে অস্থির নিউরন!
আকাশ তখন অসীম আশ্রয়ে-
ডেকে ডেকে আমায় খুলে দেয় বুলন্দ দরজা।
আর কোন দুয়ারে- আমি দু'হাত তুলি না!
শুদ্ধতার প্রত্যাশায়, ইস্তিগফার শেষে-
কৃতজ্ঞ চিত্তে বলি, শুকরিয়া, আল-হামদুলিল্লাহ!
স্মৃতির সিন্দুক
- সাকিব জামাল
স্মৃতির সিন্দুক খুলে দেখি তোমারে বারবার।
কী আশ্চর্য! ঋতু বদলে যেমন বদলে যায় ফুল,
তুমিও নিজের রঙ বদলে ফেলেছ বেশ!
অথচ, আমি সেই কালো ভ্রমর হয়ে আছি-
অপরিবর্তিত দীর্ঘকাল।
বাহারি বাহানার সৌরভ তোমার
ঠিকই বুঝি, ঠিকই চিনি।
শুধু খুঁজে পাই না- প্রেম।
অবাক হই!
কী দ্রুত মুছে যায় সব, প্রাক্তন হলে একবার!
মনের মানুষ
- সাকিব জামাল
তা থৈ থৈ অথৈ জলে ডুবে মরি- তোমার প্রেমে।
ফের জাগি আশায়,
বারবার ডুবে মরবার সুখে!
কী দারুণ কেরামতি, ঐ লৌকিক দেহে!
অবাক হয়ে আকাশে তাঁকিয় রই,
কূল কিনারা না-পাই,
না-পাই তোমার ঠাই!
তুমি, কেমন গোপন গোপন, আবার প্রকাশ্য সই!
যাত্রাপথ
- সাকিব জামাল
হে থার্ড ওয়ার্ল্ড, পেছনে জঙ্গল, সামনে মঙ্গল।
যাত্রাপথ- বিবেচনার।
পেছনে মিথ, সামনে বিজ্ঞান।
যাত্রাপথ- সভ্যতার।
দৃষ্টি তোমার, ইচ্ছেখুশি তাকাও!
মন তোমার, ভাবনায় ডুবাও!
কোন পথে মুক্তি?
নিশ্চয়ই স্যাপিয়েন্স,
পেছনের দিকে হাটেনি কখনও!
সামনে চলো, রহস্যভেদের নেশায়-
তুমিও তুমুলকরে মাতো!
মহাবৈশ্বিক এই দৌড় থেকে ছিটকে পড়ে,
আগামী প্রজন্মের কাছে-
হারিয়ে যাওয়া নৃতাত্ত্বিক গল্প হবার যুক্তি নেই কোনও!
তবু তুমি থেকো ভালো!
- সাকিব জামাল
তোমাকে ছাড়া-
আমি ভালো নেই খুব একটা,
তবু তুমি থেকো ভালো!
আমার এখানে আঁধার নামে নামুক,
তোমার জীবনে জ্বলুক আলো!
তবু তুমি থেকো ভালো...
অতীতের পাখিরা ডেকে ডেকে যায়
বলে, আমারও ছিল সুদিন,
ভালোবাসার বাহারি রঙে ভরা
রোদেলা রঙিন।
মেঘে মেঘে এখন ঢেকে গেছে আকাশ
ভয় ভয়, কালো কালো!
তবু তুমি থেকো ভালো...
বুঝি বুঝি আজ, তোমার সুখের সমুদ্দুর
ছুটে চলে বহুদূর,
আমার নদী স্রোতহীন ভীষণ
বিরহ রাগিনী ভরপুর।
হারানো সুরেই সই, আমি বেঁচে রই
কষ্ট না-হয় একটু হলো!
তবু তুমি থেকো ভালো...
----
(মূলত এটি গানের কবিতা।)
তারপর যাবো শাহবাগের মোড়ে
- সাকিব জামাল
বন্ধু, সকাল সকাল, ঘুম থেকে উঠো কাল।
তারপর, যাবো, শাহবাগের মোড়ে!
কেন, জানো, এ জায়গাটি-
বেশ ভালো লাগে আমার?
কেন?
ওখানে গেলে, আমি হারিয়ে যাই
ইতিহাসের পাতায় পাতায়।
শুনি, নানা দ্রোহের গান
ফেলা আসা অতীতের ভেলায়!
কল্পনার চোখে দেখি-
গ্রীক সভ্যতার এথেন্স। নিজেকে ফিরে পাই-
সংগ্রামী নাগরিক রূপে! গনতন্ত্র, সুশাসন
যেখানে শাদা পায়রা হয়ে-
দলে দলে ওড়ে!
বেশ তো!
তাহলে, মাঝে মাঝে ওখানে যেতেই হয়!
বিরহকাল
- সাকিব জামাল
মেঘের নেকাবে, অভিমানে,
বারবার ঢেকে যায় আকাশ- এই বিভ্রান্ত মনের!
বিষন্ন বাতাস ছুটে এসে মাংসাশী নেকড়ের মতো,
ব্যবচ্ছেদ করে আমায় তুমুল উৎসবে!
গাঢ় অন্ধকার ঝড়ে, চোখে নাঁচে যমুনার ঢেউ।
মাটি ছাড়া আর কোন ঘ্রাণ পাই না- এই দেহের!
অথচ, হাতটি একটু ধরো, বলেছিলো- কোন একদিন, কেউ!
পড়ন্তবেলায়, এখন, ভালোবাসার কথামালায়-
বিরাম চিহ্ন বসেছে ফুলস্টপ!
একদিন মেঘসন্ধ্যায়
- সাকিব জামাল
একদিন মেঘসন্ধ্যায়, কৃষ্ণকলি, আমায় ডাকে ইশারায়,
বলে ফিসফিস, চলো মাতি প্রেমে-
ভাঙা-গড়ার খেলায়, দুই পাহাড়ের চুড়ায়।
আমি না-করতে পারি না!
উড়ি, ভাসি। চুমু খেয়ে গলে যাই,
বক্ষ-উপত্যকা বেয়ে-
ছুটে চলি ত্রিমোহনায়।
ত্রিবেণীর যাত্রাপথেই- ফুটে ওঠে সভ্যতাফুল আমাদের।
পদ্মা সেতু
- সাকিব জামাল
দক্ষিণবঙ্গের মানুষ জানে-
পদ্মা সেতু নিয়ে এতো আবেগের মানে!
কতো কতো দুঃখের গল্প ভেসে গেছে আজ,
সুখের সূর্য উঠেছে হেসেছে।
দক্ষিণের জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে-
বিশ্বজয়ে, গ্রীবা উঁচুকরা স্বপ্নসকল!
উন্নয়নের অবাক মহড়া শেষে,
এগিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয়ে-
মেলেছে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের ডানা,
অবিরত, অবারিত আকাশে।
------
কবিতাটি দৈনিক ভোরের কাগজ এ প্রকাশিত।
প্রথম কদম
- সাকিব জামাল
পৃথিবীর প্রথম কদম ফুটেছিল আদমের বুকে।
কে না-জানে, বিরহ জলে-
মেঘ করে মন আকাশে! নামে বর্ষাকাল-
হৃদয়ের গহীনে। পুরুষ পাতার জমিনে,
একলা বাউলের গেরুয়া রঙে-
ফোটে কদম ফুল। প্রিয়তমা'র মুখ!
মিলনের আহ্বানে-
অপেক্ষার ঘ্রাণ, রেণুময় বাতাসে-
ভেসে চলে রিমঝিম সুরে। হাওয়ার ঘরে!
পৃথিবীর প্রথম কদম ফুটেছিল আদমের বুকে।
বাবাহীন বাবা দিবস
- সাকিব জামাল
বাবা দিবসে-
বাবাহীনে, আমার বিষাদে কাটে দিন,
হৃদয়জুড়ে সপ্তসুরে বাজে বেদনার বীণ।
জীবনের আলপথে-
নেই আজ বটবৃক্ষ কোনও,
ছায়াহীন, মায়াহীন-
তপ্ত দুপুর সারাক্ষণ যেন,
হেঁটে চলি- স্নেহের স্পর্শ ছাড়া!
বিরামহীন দীর্ঘশ্বাসে-
বাতাসে বয়ে চলে শনশন কান্নার গান,
কেউ শোনে না!
ফিসফিস করে বলি, ওরে মহাপ্রাণ,
ভালো থেকো- আমার নীল আকাশের তারা!
বর্ষাবাউল
- সাকিব জামাল
পাতার আড়ালে-
পিঠে পিঠ লাগিয়ে ফোটে প্রথম কদম,
যুগপৎ বর্ষানন্দে!
ধীরে ধীরে, সিনায় সিনায় অসীম দরিয়ায়-
ডুবে যায় মন।
জারণ-বিজারণঃ মিষ্টি রসায়ন।
অতঃপর সুখে, সিক্ত সাধনে-
মেলে বাউল পরম!
হেজিমনি
- সাকিব জামাল
কারণ, কৌশলগত!
এই আছে এই নেই- তাদের প্রেম।
তবুও, মিডিয়া পাড়ায়-
গুঞ্জন রাখে ধরে,
সম্পর্কের উষ্ণতা- অনন্য উচ্চতায় এখন!
গ্লোবালাইজেশন বলে একটি কথা আছে না!
মূলত, ইন্ডিভিজুয়ালিস্টিক, কী করে বলে?
ন্যাশনালিজম ফার্স্ট, কী করে বলে?
মানবাধিকার ফেইক মিথ, কী করে বলে?
পাবলিক পলিসির প্রলেপে-
লুকিয়ে রেখে স্বরূপ,
চরিত্র প্রকাশ করে ইমিটেশনে-
চকচকে বৈশ্বিক!
ঐ দেখো মৃত্যু, পাখি হয়ে উড়ে যায়!
- সাকিব জামাল
ঐ দেখো মৃত্যু, পাখি হয়ে উড়ে যায়!
আগুনে পুড়ে, জলে ডুবে
অথবা সড়কে দুর্ঘটনায়,
ঐ দেখো মৃত্যু, পাখি হয়ে উড়ে যায়!
কষ্ট কূজনঃ কেউ শোনে না তার।
দুঃখ ভুবনঃ কেউ বোঝে না তার।
অভিমানে, নীড় পানে-
আর ফিরে না-তাঁকায়!
ঐ দেখো মৃত্যু, পাখি হয়ে উড়ে যায়!
আকাশ নীলে-
হারিয়ে গিয়ে বলে,
অনাকাঙ্খিত মৃত্যু যেন না-হয় কারো। ভালো থেকো!
শেষের সুখে-
ভাগ্য হোক সবার- ঘুমিয়ে পড়ার, মাটির বুকে!
অপেক্ষা
- সাকিব জামাল
বৃষ্টি হোক অথবা না-হোক!
তোমার অপেক্ষায়, প্রতিদিন, চাতক হয়ে যায়-
এই দু' চোখ!
ক্লান্তি নেই কোনো ভালোবাসার পথচলায়।
দুঃখ অথবা সুখ!
অন্তিমে, এই কপালে, যে ফুল-
ইচ্ছে ফুটুক!
পরিচয়পত্র
- সাকিব জামাল
টোকা! অতঃপর শব্দসুর...
বোঝা যায়, মাটির পাত্র
কতোটুকু ভালো তোমার!
গতি! অতঃপর শব্দসুর...
বোঝা যায়, ডপলার ইফেক্ট
কেমন দৌড় তোমার!
মুখের ভাষা, দেহের ভাষা,
এ দুটোই তোমার-
পরিচয়পত্র। যথেষ্ট!
কামিনী ফুল
- সাকিব জামাল
রোদমাখা করোটির বুকে ফোটে কামিনী ফুল,
ভেজার বাহানায়!
তুমি, এসো, রাত বেরাতে-
আকাশের কলসিভরা নদীর জলে।
নিভে যাক দহনকাল আমাদের!
দুই শালিখের ভেজা শরীরে জেগে উঠুক-
অশরীরি প্রেম, মানচিত্রহীন!
বাসা বাঁধবো- বাবার মতো!
- সাকিব জামাল
এই দেহের ডালে ডালে,
বাসা বেঁধেছে-
কিছু রোগ,
কিছু শোক,
কিছু দুঃখ।
সেসব পাখিরা ডাকে প্রতিদিন!
ডেকে ডেকে যেদিন-
অস্থির হবে,
ক্লান্ত হবে,
নির্বাক হবে,
সেদিন ভীষণ মমতায়-
প্রিয় মাটির বুকে,
আমিও বাসা বাঁধবো-
বাবার মতো!
--------
উৎসর্গঃ বাবা নেই যাদের।
দুধশাদা রাতে...
- সাকিব জামাল
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে মিহি জোছনা।
দুধশাদা চাঁদ, ফুল কুড়োনো স্বভাব জাগিয়ে তোলে আমার!
আলতো ছোঁয়ায়, কাঙ্খিত ফুল হাসে লজ্জাবতীর সাজে।
তাঁকায় হংসমিথুন চোখে- অসীম প্রেমে।
আমি উচ্ছল হই-
এক 'গৃহহারা' ধ্যানে!
ঘুরি সারারাত-
আদিম জঙ্গলে!
পেয়ালাভরা জোছনার শরাব,
পান করে করে মাতাল থাকি- হাওয়ার ঘরে!
দ্রব্যদামে দম যায় যায়
- সাকিব জামাল
সবকিছুরই দাম বাড়ে হায়
দাম কমে শুধু মানুষের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
দ্রব্যদামে দম যায় যায়
গরীব দুঃখী মানুষের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
সমাধান নাই, নিয়ন্ত্রণ নাই
কোথাও কোন বাজারের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
দাম নিয়ে মশকরার ছলে
উপদেশ দেয় বিকল্পের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
নেতা, জনতা কেউ জানে না
শেষ কোথায় এই দুঃখের,
তবুও আমাদের গল্প চলে
উন্নয়নের ফানুসের!
আড়ালের গল্প!
- সাকিব জামাল
তুমি বোঝ নি!
বুঝেছে মেঘ, বৃষ্টিরেণু। বুঝেছে নীল আকাশ, রংধনু।
বুঝেছে আর বিকেলের হাওয়ায়!
প্রিয় ক্যাম্পাসে,
একেলা একা বসে, কাটিয়ে দিয়েছি কতোটা সময়-
তোমার অপেক্ষায়।
সময়ের সম্মুখ তীর,
কেড়ে নেয় সেসব দিন। বহতা নদীর সুরে-
চলে যাই আমি দূরে, তুমিও বহুদূরে।
আর দেখা হয় না!
স্বাক্ষী কার্জন। নীরবে চেয়ে থাকে!
প্রাক্তনঃ সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। হঠাৎ হঠাৎ জাগে!
কার্জনের ছায়ায়,
ফিরে ফিরে আসি- শ্রেষ্ঠ অনুভূতির মায়ায়।
কাঁপে তখন নিউরনসমস্ত!
ভাবি,
বন্ধুতার আড়ালে কতো প্রেম-
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় মোমবাতির মতো।
বিবিজানের টেক্কা
- সাকিব জামাল
নিস্তব্ধ রাত। চুপি চুপি যাই আমি-
বিবিজানের ঘরে। চমৎকার! বাবুই পাখির বাসা।
ভেবেছি, মহাজাগতিক প্রেম ছড়ানো এখানে-
জোনাকির দলে দলে আলোয় ভরা।
শরাব পানে সিক্ত কন্ঠে-
আগুন-ধোঁয়ার উল্লাসে যখন মগ্ন হই,
বিবিজান বলে, "মোরে একখান গলার হার দিও!"
পরাবাস্তবতা ছেড়ে-
ফিরে আসি আমি, গ্রহের জমিনে!
দেখি, এখানেও, কেবল টেক্কা চলে-
টাকার উপর টাকার!
দিন নয়, রাতের বাজিমাত- পৃথিবীর বুকে!
খ অথবা প্রাক্তন
- সাকিব জামাল
খ, দিগন্ত ছাপিয়ে তোমার,
রাতের তুমুল অন্ধকারে ভেসে আসে
ফের রজনীগন্ধার সৌরভ। আমি কেঁপে উঠি-
প্রেম ফোবিয়ায়!
ঠিক, একলা পাখি যেমন উড়ে বেড়ায় তোমার বুকে,
একবার নীড় হারিয়েছে যে!
দূরে ডাল খুঁজে পেয়ে হুতোম প্যাঁচা ডাকে।
ভয়ে, তোমায় জড়িয়ে ধরতে চাই আমি!
যদিও রূপ রয়েছে তোমার-
এক আশ্চর্য আশ্রমের,
অথচ, শূন্যতার অসীম নদী!
রক্তজবা
- সাকিব জামাল
রক্তজবা আমায় দারুণভাবে ডাকে-
থরে থরে সাজানো দ্রোহ-লালের ভাঁজে!
কথা হলো, দুজনে একদিন-
এখনকার অস্থির সময় নিয়ে।
হেসে বলে, "এই জনমে-
দ্রোহই ভালো। দ্রোহই আলো।
জ্বলে ওঠো- চোখ জুড়ানো প্রেমে!"
সত্যি, ঠেঙিয়ে দিবো কিন্তু!
- সাকিব জামাল
সত্যি, ঠেঙিয়ে দিবো কিন্তু এবার,
যদি কেউ সাজো নব্য রাজাকার!
না-থেকে দেশের পথে,
যদি চলো ভিনদেশি রথে!
তবে বিদায় নাও, ছেড়ে এ বাংলা আমার।
-------------------------
উৎসর্গঃ কবি আব্দুল হাকিম। (১৬২০-১৬৯০)
চৈত্রযাপন
- সাকিব জামাল
বাতাসে ভাসিয়ে দাও- তোমার অভিমান সকল।
চৈত্র দহনকালে-
বাষ্প হয়ে উড়ে যাক চোখের জল।
তারপর, হাসো! হাসো, একেলা প্রেমে।
একাকিত্ব উপভোগ করো- ভীষণ ভালোবেসে!
তৃপ্ত আত্মার জোড়ে, চৈত্রযাপন শেষে-
তুমিও বলতে পারবে,
"বেশ ভালো আছি, এই একা আমি!"
বাতাসে ভাসিয়ে দাও- তোমার অভিমান সকল।।
একগুচ্ছ হাইকু
- সাকিব জামাল
১.
বুকে এখন,
ফাটা বাঙ্গির মতো-
কষ্ট লগন!
২.
চৈতালি দিনঃ
সিক্ত প্রেম হাওয়া,
বাষ্পে বিলীন!
৩.
শিমুলে রঙ,
দ্রোহ প্রেমিক খোঁজে-
হারানো ঢঙ!
৪.
ফাগুন শেষে,
কর্পুরে প্রেম মেশে-
দহন গ্রীষ্মে!
৫.
আউলা মন,
বসন্তেও বেদনা
নিত্য যখন!
মায়া
- সাকিব জামাল
দক্ষিণে টানে উত্তর, উত্তরে টানে দক্ষিণ।
দূরে যাই, কাছে আসি। কেন? 'প্রশ্ন' উত্তরবিহীন!
মনোবিজ্ঞান বলে মনস্তাত্ত্বিক, বায়োলজি কয় জৈবিক।
নৃবিজ্ঞান ধরে আদিম সুর, ইতিহাসে- প্রাগৈতিহাসিক।
দক্ষিণে টানে উত্তর, উত্তরে টানে দক্ষিণ।
অথচ, দুচোখে ভরা এখনো না-দেখার ঋণ!
আমি এতসব বুঝি না!
তোমাকে বলি, ভালোবেসে-
আমাকে ভাঙো সেমি-কন্ডাক্টরের মতো,
হয়ে উঠি আরও এনার্জেটিক। প্রেমে! মায়ায়!
নো দাইসেল্ফ
- সাকিব জামাল
তিন'শ ষাট ডিগ্রি চোখে,
গভীর অন্ধকারে, একদিন নিজেকে দেখেছি-
স্বভাবে আমিও গিরগিটিঃ
রূপ বদলাই- মোহে!
প্রয়োজনে অথবা অপ্রয়োজনে-
নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ি পৃথিবীর ধোঁকায়।
অতঃপর, দুঃখে কাঁদি-
ব্যর্থ জনম।
স্ব-পাঠ শেষে, বলি,
"আমার কেবলই রূপ হোক মানুষের!"
বাংলাদেশঃ দ্য টাইগার!
- সাকিব জামাল
বড়লোকের বেটি লো,
গ্রিস, শ্রীলঙ্কা আমার ভয়ের কারণ!
আমি বরং কৃষ্ণাণীর প্রেমেই থাকি!
থাকি নদীমাতৃক,
থাকি কবিতামাতৃক।
স্বনির্ভর সংসার গড়ে-
তারপর বুঝবো ইকনমিকস্!
প্রেমের ছবক না দিলেও কেউ,
আমি প্রেম করতে শিখেছি-
একাত্তর থেকে।
মনে রেখো,
স্বদেশ আমার, নয় উর্বরহীনতার!
একদিন এগিয়ে যাবোই...
চৈতালি দহন
- সাকিব জামাল
তোমার বিরহে-
চৈতালি দহন। শিমুল তুলো হয়ে উড়ি!
অপেক্ষায়, চোখে আবীরের রঙ।
ফাগুন ভেসে গেছে, সর্ষেফুল হয়ে!
অপ্রাপ্তবয়স্ক সুশাসন এখনো-
আমার জমিনে!
সেহেরি বেলার গান
- সাকিব জামাল
বছর ঘুরে, এলো ফিরে- পবিত্র রমজান,
জাগো মুমিন, শক্ত করো- তোমারই ঈমান।।
সময় হলো সেহেরি বেলার,
গান গাই তাই ঘুম ভাঙাবার।
জাগো, জাগো...
ওঠো, ওঠো...
রাখো রোজা সবাই মিলে, ওহে মুসলমান।
শোনো আমাদেরই আহ্বান।।
বছর ঘুরে, এলো ফিরে- পবিত্র রমজান,
জাগো মুমিন, শক্ত করো- তোমারই ঈমান।।
একটি রোজা, হলে কাযা-
ভীষণ বেদনার।
হেলায় হেলায়, নফসের ধোঁকায়-
ঘুম থেকো না আর।
জাগো, জাগো...
ওঠো, ওঠো...
রাখো রোজা, মিলবে তবে তাকওয়া, সম্মান।
শোনো আমাদেরই আহ্বান।।
বছর ঘুরে, এলো ফিরে- পবিত্র রমজান,
জাগো মুমিন, শক্ত করো- তোমারই ঈমান।।
একগুচ্ছ একলাইনঃ বাংলাদেশ
- সাকিব জামাল
সংগ্রাম | সবুজের বুকে চাঁদ-তারা মুছে সূর্য আঁকা!
পতাকা | জাহানারা ইমামের বুকে রুমির রক্ত!
মানচিত্র | স্যাটেলাইটের চোখে নতুন পৃথিবী একাত্তরে!
বিজয় | মুদ্রা চিত্রে ভাসে ফুটন্ত শাপলা!
মুক্তি | মার্চের মার্চ চলুক বারোমাস!
উত্তরাধুনিক সংসার
- সাকিব জামাল
তোমাকে ভালোবাসি। কেন এই প্রেম-
বুঝি না। বোধহয়, বেশ কিছু জাদুবাস্তব ফেনোমেনা!
কতো কতো অমিল আমাদের।
অথচ, বাবুই পাখির কাছ থেকে-
বাসা বাধার নিয়ম শিখেছি।
শিখেছি সোনামুখী সুই-সুতোর কারুকাজ।
ক্যাঙ্গারু দেখে দেখে-
বুকে প্রজন্ম লালনের কৌশলও জেনেছি।
আবার হঠাৎ হঠাৎ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে-
স্বপ্ন ভাসিয়ে দেই মেঘের ওপারে!
ইচ্ছে হয়, শূণ্যে উড়ি একা।
উত্তরাধুনিক সংসারঃ ঘুড়ির বিচ্ছিন্নতায়,
হয়তো আনন্দেই বাঁচে নাটাই- উৎসবের নীল ঠিকানায়!
মধ্যবিত্ত অথবা ট্রাম দুর্ঘটনার পূর্বে
- সাকিব জামাল
জীবনানন্দ এখানে ভেসে চলে- জলে জলে!
কোলকাতা দ্যাখে... ঢাকা দ্যাখে...
দ্যাখে অপলক সব নদীমাতৃক চোখ।
তল্লাটে তল্লাটে ঘুরে, অবশেষে জমে নুন।
কী ভীষণ বেদনার গান!
অনুভব করো?
অনুভব করো,
হিমালয় থেকে সাগর অবধি-
পলিমাটির নিউরন,
ক্যামন অতৃপ্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে সারাক্ষণ!
ভাষা
- সাকিব জামাল
ভাষা মানে আশা ভরা
মনের কথা বলা,
ভাষা মানে স্বপ্ন দেখা
নতুন পথে চলা।
ভাষা মানে তুলে ধরা
আপন পরিচয়,
ভাষা মানে বিশ্ব জুড়ে
ছড়িয়ে দেয়া জয়।
আল্লাহ আমার, ওগো রহমান
তোমার ঘরে আমায় করো মেহমান।
এই জীবনে অনন্ত একবার
হজ্জ করার করো তৌফিক দান।।
মনে বড় ইচ্ছে জাগে-
যাবো বাইতুল্লাহর গুলবাগে,
কাবা শরীফ করবো তাওয়াফ
চাবো তোমার কাছে গুনাহের মাফ।
কবুল করো আমায়- ওগো রহমান।
তোমার ঘরে আমায় করো মেহমান।।
আল্লাহ আমার...
হজ্জের শেষে যাবো মদিনায়-
দুরুদ সালাম দিবো নবীজির রওজায়।
তোমারই কাছে, নবীজির শাণে-
এই মিনতি আমার মনে প্রাণে।
কবুল করো আমায়- ওগো রহমান।
তোমার ঘরে আমায় করো মেহমান।।
আল্লাহ আমার....
আল্লাহ আমার, ওগো রহমান
তোমার ঘরে আমায় করো মেহমান।
এই জীবনে অনন্ত একবার
হজ্জ করার করো তৌফিক দান।।
দুঃ
- সাকিব জামাল
যতটুকু কপাল আমার, ততটুকুই দুঃখে ভরা!
সুখগ্রাসী সময়ে, যাপিত জীবনে আমার,
সব শব্দের পূর্বে, চোখ বন্ধ করে এখন-
'দুঃ' উপসর্গ বসাই আমি।
তারপর চলি পথ...
এবং এখানে কোন ডপলার ইফেক্ট নেই!
যতটুকু কপাল আমার, ততটুকুই দুঃখে ভরা!
একটি অপরাজেয় গল্পের অপেক্ষায়!
- সাকিব জামাল
শুনেছি, বিলুপ্ত প্রায়। অথচ প্রতিদিনই দেখা পাই তার!
বলছি, শকুনের কথা। শকুনের দলের কথা।
পথে-ঘাটে, অফিসে অথবা
এমন কি প্রার্থনা ঘরে
কোথাও বাদ নেই,
সর্বত্র বেপরোয়া ওড়ে-
সুযোগ পেলেই- খামচে ধরে,
ছোবল মেরে কেড়ে নেয়- অধিকার আমার।
কেউ আছো, মানবাধিকার মঞ্চে উঠে-
শকুন বধের অপরাজেয় গল্প শোনাবে আমাকে!