রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

উত্তরকাল

 উত্তরকাল

- সাকিব জামাল


পরতি সন্ধ্যাকালের পাখি আমি এখন! 

নীড় নাই, তীর নাই পথে 

দুঃখ সঙ্গমরত। 

মাত্র কয়েকটা দিন গান করেছি; 

এই জনমে, 

পাহাড় বিদীর্ণ হয়ে 

ঝর্ণা হয়েছিল প্রথম সেইকালে। 

ঝর্ণা, শুনেছি বহমান। গোলাপ রঙ! 

নীল তিমি সাঁতার কাটে। 

সুরে তাল মেলে না আমার! অর্থনীতি বুঝি নাই। 

অথচ রেঁনেসা কাল শেষ তাদের। 

আর আমি নীড় নাই, তীর নাই পথে...

স্বৈরাচারের ছল

স্বৈরাচারের ছল
- সাকিব জামাল

বল্ বল্ বল্ তোরা মুখ ফুটে সবাই বল্ 
এই দেশেতে চলবে না আর 
                স্বৈরাচারের ছল। 
বল্ বল্ বল্ তোরা মুখ ফুটে সবাই বল্।। 

জনতার মুখোমুখি হইতে হবে 
বিচার তোমায় পাইতে হবে 
      পাইতে হবে গণহত্যার ফল। 
বল্ বল্ বল্ তোরা মুখ ফুটে সবাই বল্।। 

বাংলাদেশের সব জনতা 
জেগেছি, আর ভয় পাবো না 
      অধিকার আদায়ে আমরা সবাই 
               আপোষহীন অবিচল। 
বল্ বল্ বল্ তোরা মুখ ফুটে সবাই বল।।

বাংলাদেশ থেকে ফিলিস্তিন

 বাংলাদেশ থেকে ফিলিস্তিন

- সাকিব জামাল


ফিলিস্তিনের দিকে তাঁকিয়ে ভাবি আমি- 

একখণ্ড স্বাধীন ভূমি কতোটা দামি! 

মাহমুদ দারবিশের কবিতা পড়েছি ভাই, 

একাত্তরের বীর সেনাদের তাই ভুলি নাই! 


আমাদের বিজয়ের এই মহান ক্ষণে- 

একটাই প্রার্থনা জাগে আমার মনে, 

"পৃথিবীর সংগ্রামী সব প্রান্তরে প্রান্তরে, 

বিজয় আসুক বীর মুক্তিসেনাদের ঘরে!"

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

লাইলি

 লাইলি

- সাকিব জামাল


মাওলানা রুমি'র সাথে কথা হলো আমার! 

বললেন,"প্রেমিকের কোন ভয় নেই, যার মঞ্জিল প্রেম!" 

আমি আকাশের দিকে তাঁকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। 

দু'চোখে উত্তাল সমুদ্র ঢেউ, 

গড়িয়ে পড়া জল হাতের মুঠোয় নিয়ে- 

মাঝরাতে মোনাজাতে বললাম, 

"লাইলি, আপনি কই?" 

নৈঃশব্দ্য মুচকি হেসে উঠলো। আমি কেঁপে উঠলাম। 

অনুভব করছি, ঘাম ঝরছে দেহের। 

নদীতে বইলো স্রোত। 

সবুজ হইলো জমিন। 

সোনালি ফসলের অপেক্ষায় এখন; 

বয়ে চলছি জীবন রহস্যপথে অবিরাম- দিশাহীন!

মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু

 মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু

- সাকিব জামাল


একাত্তরকে রেখেছি মনে, 

চব্বিশকেও ভুলবো না। 

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা 

আপোষ কভু করবো না! 

আমরা সবাই বাংলাদেশি, 

মাতৃভূমি ভালোবাসি।। 


মুক্ত করেছি ভয় আমরা, 

যুক্ত করেছি যুক্তি। 

স্বাধীনতার সৌরভে আনবো 

জনগণের মুক্তি। 

সবার মুখে ফোটাবো আমরা 

চিরন্তন সুখের হাসি। 

আমরা সবাই বাংলাদেশি, 

মাতৃভূমি ভালোবাসি।। 


মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু 

আমাদের শ্লোগান, 

দায় ও দরদে, দেশ গঠনে 

গাই বিপ্লবের গান। 

দেশ বাঁচাতে দেশ সাজাতে 

আমরা) মৃত্যুর মুখেও হাসি। 

আমরা সবাই বাংলাদেশি, 

মাতৃভূমি ভালোবাসি।। 

------------- 

(গানের কবিতা।

মধ্যবিত্ত

 মধ্যবিত্ত

- সাকিব জামাল


আসতে আসতে, যতদূর থেকে 

দেখা যায় তোমায়, চেয়ে থাকি। 

আহ্! প্রেম। 

যেতে যেতে, যতদূর অবধি 

দেখা যায় তোমায়, চেয়ে থাকি। 

আহ্! বিরহ। 

অতঃপর সংখ্যারেখায়- 

দেখি আমায়। দেখি অবস্থান আমার 

ফিক্সড শূণ্য বরাবর! 

আর শূণ্যকে যদি একটা বৃত্ত ধরো, 

প্রেম অথবা আর্থিক নিকাশ ঘরে 

ঐ বৃত্তেই বন্দি, 

বন্দি আমি- আজন্মকাল!

বিপ্লবী সূর্য

 বিপ্লবী সূর্য

- সাকিব জামাল


নভেম্বরের বিপ্লবী সূর্য 

আবার উঠেছে হেসে, 

ফ্যাসিবাদ যাবে এবার 

গণজোয়ারে ভেসে। 


বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চায় 

মাতবে আমার দেশ, 

জনতার সব অধিকার 

নিশ্চিত হবে বেশ

সংহতি শুভেচ্ছা

 সংহতি শুভেচ্ছা

- সাকিব জামাল


সিপাহী-জনতার বিপ্লবে শুরু জয়যাত্রা আমাদের, 

বিপ্লবে, বিস্ময়ে অমর নভেম্বর, বীরেরা চির অম্লান! 

গণতান্ত্রিক বিপ্লবে আমরাই সৈনিক নব্বইয়ের, 

চব্বিশে ফিরিয়েছি আবার এই বাংলাদেশের প্রাণ! 


সুশাসনের সৌরভে ফুটুক শতফুল অপরূপ এইবার, 

ভিন্নমতের কোরাসে হোক প্রিয় গণতান্ত্রিক গান। 

এক বাংলাদেশ, এক পরিবার। আবাস নেই হিংসা

লাল চোখের ডাহুক

 লাল চোখের ডাহুক

- সাকিব জামাল


স্বভাবে আমি ক্রেপাসকুলার, 

আন্ধার নামার আগেই ডাকি! 

যদি শোনো হবে প্রেম; 

রাত্রি ভয়হীন। 

দেখা হবে ফের চঞ্চল ভোরে 

ডেমোক্রেটিক ইনক্লুশনে

তবুও ফোটে ছাতিম ফুল

 তবুও ফোটে ছাতিম ফুল

- সাকিব জামাল


রাতের প্রেমে বইছে ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ 

পাগল প্রাণ, আমার পাগল প্রাণ! 

ধুপ-ধুনো জ্বালাই 

তোমারে খুঁজি। 

না-পাই, না-পাই, তোমারে না-পাই! 

আরতি আমার; হাতের মুঠোয় নিয়ে- 

চোখের জলে ভিজাই। 

অতঃপর আমি হই শিশির! 

ঘাসের বুকে ঝরে ঝরে পড়ি। 

বিরহ দহনে উড়ে যাই, 

উড়ে যাই; 

দূর নক্ষত্র জগতে... 

তবুও ফোটে ছাতিম ফুল! 

বিরহ পিছু ছাড়ে না কবি'র লোকান্তরে। 

-------- 

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

মিহি জোছনার গান

 মিহি জোছনার গান

- সাকিব জামাল


পূর্ণরূপ চাঁদ। লক্ষ্মীময় ক্ষণ! 

জোছনার শরাবে মাতাল পৃথিবীর মন। 

জোনাকিদল মেতেছে নাঁচের আড্ডায়। 

বৃক্ষেরা পাতায় পাতায়- 

বাজায় বাঁশি প্রেমের সুরে। 

হে প্রিয়তমা, কেন তুমি দূরে? 

হৃদয়ে ফুটেছে ফুল আমার। 

ভালোবেসে পাপড়িসব এক এক করে খুলে; 

করবো দান তোমার ঐ পদযুগলে। 

এসো, করি মিহি জোছনার গান!

বৃষ্টিভেজা রাত, একটি দাড়কাক আর আমি...

 বৃষ্টিভেজা রাত, একটি দাড়কাক আর আমি...

- সাকিব জামাল


ধীরে ধীরে রাতের শরীর পূর্ণযৌবনপ্রাপ্ত হলো, 

আকাশে হঠাৎ বিজলীর চমক, মেঘের ওড়াউড়ি 

বৃষ্টির গান। আশ্চর্য আবেগে আমি 

জানালা খুলে দেই, দেখি- 

একটি দাড়কাক, ল্যামপোস্টের মাথায় 

ভিজছে একা। স্পষ্টত বিরহক্লান্ত! 

কথা বলি, গল্প শুনতে চাই ওর। 

অসহায় দু'চোখ, ভেজা শরীর, দীর্ঘশ্বাসের ভাঙাস্বর তার 

বলে দেয় আমায়, হৃদয় ভাঙার শেষে- 

কোনও রিকনসাইল প্রসেস কাজ করে না আর! 

বিরহবোধে আমি তখন একাকার হয়ে যাই, 

একাকার হয়ে যাই দাড়কাকের হারানো বাস্তুসংস্থানে!

পথ

 পথ

- সাকিব জামাল


আপাত চোখে সরল রেখা 

    একটু একটু বেঁকে, 

কালে কালে হয় বক্র রেখা 

    পথ চলো তাই দেখে! 

শুরু আর শেষটা মনে রেখো 

     কম্পাস ধরো ঠিক, 

সময় গেলে যায় না ফেরা 

     দিশায় রেখো দিক!

ছদ্মবেশ

 ছদ্মবেশ

- সাকিব জামাল


ভেবেছিলাম বেহুলা তোমায় 

অথচ মনসা রূপ ধরে 

কেটে দিলে হৃদয়, 

এখন ভেসে বেড়াই একা 

দিক, দিশাহীন 

বিরহমুখর কলার ভেলায়!

বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ

 

বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ

বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ।
শান্তিতে সংগ্রামে আমার বাংলাদেশ।
এখানে সূর্য ওঠে
রক্তিম সাহস নিয়ে,
এখানে সূর্য ডোবে
লাল সালাম দিয়ে!
সাহস আর ভালোবাসায়
এগিয়ে চলছি বেশ।
বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ।।

বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন
হৃদয়ে রয়েছে গাঁথা
একাত্তরে রক্তে কেনা
আমরা স্বাধীনতা।
নব্বইয়ে গণতন্ত্র
আর চব্বিশে সুশাসন
বীরের সাথে বীরের বেশে
আমাদের বন্ধন।
তোমরা সবাই তাঁকিয়ে দেখো
আমরা অনিঃশেষ!
বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ।।

ভয় পাই না, জয় করে যাই
আমরা যেটা চাই!
মানবাধিকারের উজ্জ্বল পতাকা
আমাদের হাতে তাই!
বিশ্বকল্যানে আমরাই সেরা
অবাক সকল দেশ!
বিপ্লবে বিস্ময়ে আমার বাংলাদেশ।
শান্তিতে সংগ্রামে আমার বাংলাদেশ।।

বাঁধন ভাঙার গান

 

বাঁধন ভাঙার গান

শেষটা সুন্দর হোক আমাদের!
সমাপ্তির গানটুকু মনে থাকুক। মনে থাকুক
নদীর পাড় ভাঙার স্মৃতিচিহ্ন। মনে থাকুক
বিদীর্ণ পাহাড়ের ঝর্ণা। মনে থাকুক
তৃষ্ণার্ত পাখির হঠাৎ হঠাৎ জল পান।

প্রেম আমাদের কোনদিনই ছিলো না!
মনস্তাত্ত্বিক জগতের জৈবিক খেলা
বেপরোয়া বয়স উপেক্ষা করতে শেখেনি তখনও
পরিচ্ছন্ন পরিচ্ছেদে পরিচয় ছিলো না। হয়তো তাই
পরিচয় ঘটেছিল ফ্রয়েডীয় বাসরে।
ফান্টাসি'র ফানুস নিভে যাবার পরে
দুজনেই দুজনকে দেখলাম বেশ অচেনা।
যেন রাতের আকাশের দুই নক্ষত্র দুরত্ব নিয়ে,
পৃথিবীর চোখে কাছাকাছি থেকেছি।
ম্যাচিউরিটি এসেছে এখন, দাবি উভয়ের।
সুতরাং শেষটা সুন্দর হোক আমাদের!

শেষটা সুন্দর হোক আমাদের!
সমাপ্তির গানটুকু মনে থাকুক। মনে থাকুক
মেঘ থেকে ছিটকে পড়া বৃষ্টির শব্দ। মনে থাকুক
ঘাসের বুকে ক্লান্ত শিউলির দান। মনে থাকুক
ফসল শেষে বৃক্ষের অবশিষ্ট হিউমাস। মনে থাকুক
ফুড ওয়েব, ফুড চেইন, বাস্তুসংস্থান।

বিদায়।
শেষটা সুন্দর হোক আমাদের!
শুভ হোক বাধন ভাঙার ক্ষণ!

এই শরতে দোলো হে বিপ্লবিনী!

 

এই শরতে দোলো হে বিপ্লবিনী!

শরৎ সন্ধ্যায়,
এলোমেলো বাতাস লাগছে গায়
মন চায়, কাশফুলের মতো দোলো তুমি,
দোলো হে বিপ্লবিনী, রাতের গভীরতায়!
শরাবান তহুরার পেয়ালাসব তোমার,
আমাকে দাও। দাও প্রেম আর দ্রোহের ছবক।
আকাশে উড়ুক মেঘ তাড়ানো স্বপ্নের সফেন,
শ্বেত কপোতের গানে গানে।
আসুক ভোর, নতুন সূর্যের-
অনন্য উষ্ণতায়!

শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পাগলাটে একটা স্বপ্ন আছে আমার

 পাগলাটে একটা স্বপ্ন আছে আমার!

- সাকিব জামাল 


পাগলাটে একটা স্বপ্ন আছে আমার! 

এই পৃথিবীর বুকে একদিন, 

সমগ্র জমিন হবে মানচিত্রহীন 

এবং শাসকবিহীন! 

মানুষ হবে পরম মানবিক। 

এই শতকে অথবা পরে 

গ্রহে গ্রহে যখন সভ্যতা হবে 

স্বপ্ন আমার হবেই হবে সঠিক!

শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

রাষ্ট্রসংস্কার

 রাষ্ট্রসংস্কার

- সাকিব জামাল


সবার আগে দরকার, 

আপন মনের সংস্কার! 

        যা কিছু মন্দ সব 

তাড়িয়ে দাও দূরে, 

       যা কিছু সবার ভালো 

গ্রহণ করো সুরে। 

সেই সুরে ধরো তুমি 

            পরিবর্তনের গান, 

তবেই আসবে ফিরে 

          বাংলাদেশের প্রাণ। 

শুদ্ধ মনে, শুদ্ধ চিন্তায় 

হোক রাষ্ট্র সংস্কার, 

তারুণ্যের এই অভিযাত্রা 

রুখবে সাধ্য কার? 

পুনশ্চ, সবার আগে দরকার, 

আপন মনের সংস্কার!

শোক

 শোক

- সাকিব জামাল


আমার দেশটা এমন একটা 

মানবিক বাংলাদেশ হোক, 

যেন কারোই পালন না-করা লাগে 

অনাকাঙ্খিত কোন শোক!

কালের শিলালিপি

 কালের শিলালিপি

- সাকিব জামাল


আদিম যুগের শিলালিপি বীভৎস! 

মধ্যযুগের শিলালিপি রক্তরঙ লাল! 

আধুনিক যুগে স্বপ্ন ছিল, 

শান্তির রঙে রাঙাবে আসমানী নীলে 

উড়বে শাদা পায়রা অবিনাশী মানবতার গানে। 

অথচ ক্লান্ত পৃথিবী, ক্লান্ত মানুষের প্রাণ 

বারবার দ্যাখে চোখে- রঙ বদলায়নি তার! 

আদিম আর মধ্যযুগেই 

ঘুরপাক খায় কালের শিলালিপি 

অমানবিক চিত্রকলা খোদাই করা গায়।

যুগপথ বিষন্নতা

 যুগপথ বিষন্নতা

- সাকিব জামাল


চলে যাও তবে মনে রেখো 

আমাদের হয়তো দেখা হবে না আর 

           তখন তুমিও কাঁদবে 

           আমিও কাঁদবো 

অথচ কেঁদে কেঁদে যাবো ফিরে 

দুজনের ভিন্ন দু'টি নীড়ে। 

কাছে আসবার থাকবে না আর কোন অবকাশ! 


সকল স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে 

ভেবো না ভীষণ জয় হয়েছে তোমার, 

           শেষের কবিতায় 

           বিরহ ধারায় 

দেখবে, শ্রাবণের জল হয়ে বয়ে যাবো 

একই রকম দুঃখের মোহনায়। 


এবং এভাবেই প্রাক্তনদের ভাগ্যরেখায়- 

'যুগপথ বিষন্নতা' অটোমেটিক লেখা হয়ে যায়!

দেশের তরে শপথ

 দেশের তরে শপথ

- সাকিব জামাল


এই দেশটা আমার        দেশটা তোমার 

                 দেশটা জনতার, 

দেশের জন্য                     অন্তরে প্রেম 

              থাকতে হবে সবার। 

দেশের মান                   দেশের সম্মান 

             দেশের সকল সম্পদ, 

রাখতে হবে                   আগলে এসব 

              আসুক যতো বিপদ। 

দেশের ক্ষতি                 মানুষের ক্ষতি 

                  যাবে না মানা তাই, 

দেশের তরে                 এতোটুকু শপথ 

                 সবার থাকা চাই।

হাওর পাড়ের কন্যা

 হাওর পাড়ের কন্যা

- সাকিব জামাল


ওগো হাওর পাড়ের কন্যা, 

এই হৃদয়ে বইয়ে দাও প্রেমের জলের বন্যা। 

দখিনের বাতাসে উঠুক ছোট-বড় ঢেউ 

ছলাৎ ছলাৎ বয়ে চলুক 

মনইঞ্জিনের নাও। না-জানুক কেউ! 

মিঠামইনে, এই জল তরঙ্গে 

গোপন অভিসারে আজ ঐ আকাশের চাঁদ 

ডুবে যাক রাতের মৃদু আঁধারে! 

ওগো হাওর পাড়ের কন্যা, 

এমনও প্রেমের পুজোয় দেবী 'না' করে না! 

-------- 

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪

মহররমের চাঁদ

মহররমের চাঁদ

- সাকিব জামাল


দেখো, দেখো, বেদনার নীল আকাশে

কী করুণ চেহারা নিয়ে ভেসে উঠেছে

ওই মহররমের চাঁদ!

এই মাসে চাঁদ হাসে না।

যদি বোঝো, তাঁকাও, কী মলিন তার মুখ!

আচ্ছা, হোসাইনের শাহাদাত বরণে

তুমি কী দুঃখ পাও না?

এর চেয়ে নির্মমতম বিষাদ

আর কী হতে পারে?

এই চাঁদে-

ভুল তথ্যে তুমি, করো না

কোনও জোছনাবিলাস।

বরং বেদনায় দু'চোখে; স্রোত বয়ে যাক

নবীজির দৌহিত্রে'র প্রেমে।

শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪

আজব হাওয়া'র ঘর

  আজব হাওয়া'র ঘর

- সাকিব জামাল


পৃথিবীতে প্রথমে আদম 

হাওয়া আইলো পরে, 

এখন আদম জন্ম লয় 

আজব হাওয়া'র ঘরে! 


খালি চোখে বুঝবি না মন 

অপূর্ব এই কুদরতি, 

কোন নিগূঢ় রহস্য খেলায় 

নারী হইল মহামতি? 


সময় কাটার উজান ধরে 

দেখো না মন তাওয়াফ করে 

ভাগ্যগুনে মেলে মনের মানুষ 

মহামতি'র কৃপা তরে! 


শোনো, এই মহা খেলায়- 

আছে জয় আছে যে লয়! 

সাবধানে তাই চালাও তরি 

নারীর ঐ সাধন ঘরে!

সুন্দরীতমা, গাও বৃষ্টিভেজার গান

 সুন্দরীতমা, গাও বৃষ্টিভেজার গান

- সাকিব জামাল


আহা, রাত্রির মাঝামাঝি, 

মেঘ ভেঙেছে মান। 

এসো সুন্দরীতমা এসো, 

গাও বৃষ্টিভেজার গান! 


পাতার আড়ালে কেটে যাক 

আজ কদম ফুলের লাজ, 

কবিকুঞ্জে তবলার তালে তালে 

চলুক নিশীথের কারুকাজ! 

মিশে থাক পরানে পরানে- 

পরাগের প্রিয় ঘ্রাণ। 

এসো সুন্দরীতমা এসো, 

গাও বৃষ্টিভেজার গান।। 


তারপর, জামদানির আঁচলে- 

রাত্রির শেষভাগ, তোমার ভেজা চুল 

উষ্ণ চায়ের কাপ, কবিতার বই 

হৃদয়ের কথায় ব্যাকুল। 

তোমার জন্যে সম্প্রদান কারকে 

তখন আমায় করি দান! 

এসো সুন্দরীতমা এসো, 

গাও বৃষ্টিভেজার গান।

কেউ তো আসেনি কাছে

 কেউ তো আসেনি কাছে

- সাকিব জামাল


কেউ তো আসেনি কাছে! 

তবে পাশাপাশি অনেকে হেটেছেন 

হাত ধরেছেন স্বল্প সময়ের সঙ্গে 

কথা বলেছেন, অঙ্গীকার করেছেন 

ভালো বাসবেন বলে। 

আমি অথবা আমরা 

অথবা আমাদের হৃদয়পুর 

আনন্দিত হয়েছিলো, এই ভেবে- 

প্রেমের নাও বুঝি চলবে এবার 

দ্রুত গতিতে না হোক স্থবিরতা হয়তো 

ভেঙে যাবে কিছুটা- সুশাসনের স্রোতে। 

অথচ সময় কেটে গেল, গুরুত্বপূর্ণ বাহাসে 

প্রিয়তম কমরেড, নির্বাক হয়ে গেলেন। 

আবারও ঘরে ফিরে গেলাম- 

ভালোবাসা হীনতায়। 

কেউ তো আসেনি কাছে!

শনিবার, ১৫ জুন, ২০২৪

দেখা দাও পারিন্দা আমার

 দেখা দাও পারিন্দা আমার

- সাকিব জামাল


জলগঙ্গায় নাঁচে পদ্মফুল আপন সৌরভে। 

কলির বিসর্জনে চাঁদ পূর্ণরূপ যেদিন 

কথা ছিল সেদিন হবে বসন্ত আমাদের! 

অথচ বিচ্ছেদে ঘূর্ণিরত দেহ এখনও, 

ক্লান্তি নামে যখন নুয়ে পড়া 

এই মাটির বুকে প্রেম জাগে ভীষণ! 

ডাকি তোমাকে, বিরামহীন। 

পারিন্দা আমার, নৈঃশব্দ্য আর সহে না পরানে, 

প্রবাহিত ঝর্ণার স্রোতে নিভিয়ে দাও- 

হৃদয়ে বয়ে বেড়ানো জাহান্নামের আগুন!

ব্রেকআপ

 ব্রেকআপ

- সাকিব জামাল


বুক কেঁপে উঠলো। চুরমার হয়ে গেলাম আমি। রিখটার স্কেল টেরই পেলো না! 

অতঃপর দীর্ঘশ্বাসের তীব্রতায়- 

চোখে নিরব জলোচ্ছাস। সুনামি রাতভর। দিন কেটে যায়, কোনও সুখবরের পূর্বাভাসহীন...

মেঘ হবো

 মেঘ হবো

- সাকিব জামাল


ইচ্ছে আমার, মেঘ হয়ে- 

আকাশপাড়ায় উড়বো, 

দহনকালের দিনে-রাতে 

বৃষ্টি হয়ে ঝরবো। 

আমায় তখন ছুঁয়ে দেবে 

ভালোবেসে সবাই, 

গ্রীষ্মতাপে তাইতো আমি 

বর্ষার গান গাই।

বুধবার, ২২ মে, ২০২৪

সঙ্গমচিত্র

 সঙ্গমচিত্র

- সাকিব জামাল


বইছে উষ্ণ হাওয়া এলোমেলো কামনার ঝড়ে

বিরহে বিষন্ন মেঘ ছুটে চলেছে শূণ্যতার বুকে

হঠাৎ মিহি সুরে বেজে ওঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত

সময়ের সমস্ত অভিমান 

কর্পুরের মতো উড়ে যায় তখন 

মেঘ ভেঙে চুরে হয় গুঁড়ো গুঁড়ো 

বাতাস ভিজে যায় প্রেমে।

আমরা বলি, আহ্! বৃষ্টি নেমেছে তীব্র সুন্দর!

বাবা

 বাবা

- সাকিব জামাল


বাবা আমার প্রাণের মানুষ 

মনের মানুষ 

এই না ভুবনে, 

বাবার মতো আপনজন 

হয় কোন জনে?



কতো দুঃখ কতো কষ্ট 

কতো ত্যাগের ফলে,

গড়ে দিলেন আমার জীবন

এই ধরা তলে। 

নিজের সুখের কথা তিনি

ভাবেন নাই মনে!

জানি না সেই বাবা আমার, 

কেমন আছেন ঐ দূর গগনে?

বাবার মতো আপনজন 

হয় কোন জনে।।



খোদার কাছে তাই মিনতি

ওগো রহমান, 

আমার বাবাকে দিও তুমি

জান্নাত ও সম্মান। 

সুখে রেখো

সুখে রেখো তাকে তুমি

পরকালের ক্ষণে।

বাবার মতো আপনজন 

হয় কোন জনে।।



(গানের কবিতা)

-------

দৈনিক বাংলাদেশের খবর এ প্রকাশিত।

এক কৃষ্ণ জনম

 এক কৃষ্ণ জনম

- সাকিব জামাল


আইও বৃষ্টি, আইও...

আইও রাইতের কালে,

এক দান লুডু খেলবার মনে লয়

প্রাণসই'র লগে!

যদি সাপের মুখে পড়ি

ভয় নাই;

আমিতো ফানা হতে চাই প্রেমে! 

আর যদি দেখা মেলে দ্রুত পথের মই,

বলবো সই, দান ফেরত; 

ঝড়ুক না বৃষ্টি আরও দীর্ঘক্ষণ!

এভাবে যাক না কেটে

এক কৃষ্ণ জনম!

ধানপ্রেমের হাইকুগুচ্ছ

 ধানপ্রেমের হাইকুগুচ্ছ

- সাকিব জামাল


ধানের ঘ্রাণে

চাষীর প্রেমে পড়ি

শহুরে প্রাণে!



কৃষক হাসে

ফসল প্রেমে তাই

কৃষ্ণাণী ভাসে!



নব লাঙল

উত্থিত জমি প্রেমে

গণ মঙ্গল!



উঠোনে ধান 

স্বদেশ পরিবারে

প্রেমের গান!

শ্রমিক অধিকার

 শ্রমিক অধিকার

- সাকিব জামাল


শ্রমিক অধিকার 

ফেল করা আদু ভাই হয়ে

একই ক্লাসে পড়ে আছে

বছরের পর বছর।

শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

ছায়ানীড়

 ছায়ানীড়

- সাকিব জামাল


বিরহদগ্ধ তাপের আগুন থেকে বাঁচতে

তোমার মনে লাগতে চাই- 

সবুজ বৃক্ষ প্রেমের!

একটু জায়গা দিও, প্রিয়।

তারপর, তোমার ছায়া 

এবং ছায়ার মায়ায়

বৃক্ষ শেকড়ে বাধবো জীবন

শাশ্বত সুন্দর- বিরহহীন অনন্তকাল!

জলপদ্ম

 জলপদ্ম

- সাকিব জামাল


পৃথিবীর সাথে জীবনের প্রেম 

শুরু ছিল জলের মায়ায়।

জলকে বিশ্বাসে রেখো, প্রিয়তমা।

পবিত্র রেখো, প্রেমিক।

ফুটুক পদ্মফুল হৃদয় কাবায়!

দীর্ঘশ্বাস

 দীর্ঘশ্বাস

- সাকিব জামাল


পুড়ছে দেহ, পুড়ছে মন।

কী নিদারুণ উত্তাপ উৎসব সর্বত্র!

পুড়ছে জল

             বায়ু 

                  মাটি

স্বদেশ। পৃথিবীর দীর্ঘশ্বাসে-

প্রতিদিন উত্থিত হচ্ছে উষ্ণতার শিশ্ন! 

মায়াবী সবুজ খেকো বেপরোয়া সভ্যতায় 

চৌচির দিগন্ত শ্বসন জটিলতায় 

আক্রান্ত ভীষণ!

প্রেমহীনতার বিনিময়ে, দেখা যাক,

সইতে পারো কতো ডিগ্রি সেলসিয়াস?

মানুষের অথবা পৃথিবীর 

দীর্ঘশ্বাস কিন্তু সবসময়ই গরম!

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

রোদ্দুর মুছে যাবার শেষে

 রোদ্দুর মুছে যাবার শেষে

- সাকিব জামাল


জীবনানন্দ নেই প্রিয়! দীর্ঘশ্বাস কমাতে 

তোমার প্রেমে পড়েছিলাম তাই। 

অথচ তোমার সাথে দেখা হবার পরে

দীর্ঘশ্বাস বেড়ে গেছে আরো বহুগুন।

তুমিও হারিয়ে ফেললে ঢেউ;

ধানসিঁড়ি নদীর মতন?

দুঃখবোধ এখানেই! রোদ্দুর মুছে যাবার শেষে,

এখন আর নাটোরে বেড়াতে আসে না কেউ!

টিপ

 টিপ

- সাকিব জামাল


তোমার ইশকে-

ঘুরি আমি লাটিমের মতো।

তোমার কপালে টিপ যেমন;

স্থির করে দাও আমায়।

বিলীন হই আমি, তোমার মাঝে-

মানডালার রেখায় রেখায়।

বাতি জ্বলুক প্রেমে-

মোকামে, মোকামে!

চাঁদরাত

 চাঁদরাত

- সাকিব জামাল


আমি চেয়ে থাকি, চেয়ে থাকি তোমার আকাশে

তুমি হেসে দিলেই শুরু হয় ঈদ আমার!

উচ্ছাসে, গেয়ে ওঠে হৃদয়ের গহীনে 

কত পাখি কত সুরে- অগণন!

সুরভি ফুলের পোশাকে সাজে নিউরনকুঞ্জ;

মগ্ন পাঠে তোমার ব্যস্ত সারাক্ষণ। 

আহ্! কী সফল ঈদ! 

এক ফালি চিরন্তন চাঁদ হোক তোমার ঠোঁট।

ঈদ হোক আমার অনন্তকাল- সীমানাবিহীন প্রেমে!

রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪

দিন ফুরানোর গান

 দিন ফুরানোর গান

- সাকিব জামাল


মাগরিবের আযানঃ 

মনেহয় যেন, জীবনের-

দিন ফুরানোর গান!

সূর্যাস্তের ওয়াক্তে, তাই 

মন জুড়ে ভেসে বেড়ায়-

মায়াবী মাটির ঘ্রাণ!

অণুগল্পঃ দেহ

 অণুগল্পঃ দেহ

- সাকিব জামাল। 

-------

ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে কাঁপছিল মিতা। দীর্ঘক্ষণ অন্ধকার রাত পার করে এইমাত্র একটু আলোর দেখা মিললো ওয়াশ রুমে! সে দেখলে তার পুরো শরীরটা। দেখলো নিজের প্রিয় দেহ। একসময় এই শরীরটা নিয়ে বেশ অহংকার ছিল তার। আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের দেহ নিজে দেখেই অন্য ধরণের এক শিহরণ অনুভব করতো সে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম শারীরিক গঠনের  নারীদের মিথগুলো তাকে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যেত। প্রায়শই নিজেকে তাদের সমকক্ষ মনে করে ফ্যান্টাসিতে ডুবে যেত মিতা। সে ফিসফিস করে বলতো, ডায়না ইজ ব্যাক! ইটস্ নাট মিতা, ইটস্ ডায়না, প্রিন্সেস ডায়না!


এখন তার ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে। আশেপাশের কাছের মানুষজন আর খোঁজ নেয় না! বিশাল ফ্লাটে একাই কাটে দিনকাল। একাকীত্বের যন্ত্রণা সইতে না-পেরে সোশ্যাল মাধ্যম থেকে খুঁজে নিয়েছিল এক যুবককে। গত রাত তার সাথে আড্ডা দিয়েছে। স্যাডিস্ট যুবক। ভোর রাতে চলে যায়। এরপর দীর্ঘক্ষণ ওয়াশ রুমে কাটায় মিতা। বারবার গোসল করে। কেমন যেন অসস্তি লেগেই আছে। কোনভাবেই কাটছে না! রাতে তার দেহে ঐ যুবকের দাতের কামড়, নখের আঁচর বেশ যন্ত্রণা দিচ্ছে। মনে বাড়াচ্ছে বিরক্তি। সকালের আলো ওয়াশ রুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে পৌঁছে পড়েছে তার গায়। কিছুটা ভালো লাগে। তখন বের হয়। কিন্তু শরীরের পালপিটিশন কমে না। বয়স হয়েছে। পঞ্চাশ কম কথা নয়!


বিছানায় শুয়ে পড়ে মিতা। মস্তিষ্কজুড়ে ভেসে ওঠে অতীতের স্মৃতির ফোল্ডারসমূহ। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে ছিল সে। ছিল রাজকন্যার মত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ। ব্যবসায়ী বাবা মেয়ের উচ্ছশৃঙ্খল জীবনযাপন দেখে পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে একজন বোকাসোকা তবে শিক্ষিত ছেলের সাথে মিতাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। মিতা এটি মেনে নিতে পারে নি। মাস পেরোতে না পেরোতে সে ডিভোর্স দিয়ে দেয় ছেলেটিকে। ডিভোর্স লেটার পেয়ে মনোজ মিতাকে কিছু না-বলেই দু-তিন দিন পরে হঠাৎ একসময় চুপচাপ চলে যায় আর ফিরে আসে নি! মিতার বাবা এ ঘটনায় প্রচন্ড কষ্ট পায়। কয়েক মাস পরে ছেড়ে যান পৃথিবী। শুরু হয় মায়ের সাথে মেয়ের সংগ্রামী জীবন। তবে মিতা ছিল ডোন্ট কেয়ার টাইপের। সময়ের গতিতে সময় এগিয়ে যায়! মিতার গ্রাজুয়েশন শেষ। সে জব শুরু করে একটি প্রাইভেট কোম্পানির রিলেশনশীপ ম্যানেজার হিসেবে। তার মাও মিতার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেয়। এরপর ঘরে বসে থাকতে থাকতে বার্ধক্যজনিত কারণে একদিন বিদায় নেন। এসব স্মৃতির সিন্দুক আজ মিতার মাথায় শুধুই ঘুরপাক খাচ্ছে। ঘুরপাক খাচ্ছে তার মা তাকে কতবার দ্বিতীয় বিয়ে করতে বলেছে সেসব। দৈহিক সৌন্দর্য্য আর শারীরিক শক্তির জন্য তখন কোন কিছুই পাত্তা দেয় নি মিতা। তবে আজ কেন অসহ্য নিঃসঙ্গতা তাকে ঘিরে ধরেছে। কেন? বয়স বেড়ে গেলে কী সব নারীই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে!


মিতার আজ মনোজের কথাও মনে পড়ছে। কোথায় আছে সে। আদৌ বেঁচে আছে! ভাবছে, ইস্, বিয়ের পরে একবার যদি আমি মনোজদের দেশের বাড়ি যেতাম তবে হয়তো তাকে খুঁজে পেতাম! কতো ভালোবাসতো সে মিতাকে জানার চেষ্টাও করি নি- আফসোস! আবার ভাবে, মনোজ কী আর বিয়ে না-করে আছে? হয়তো অনেক সুখেই আছে তাই আমার আর খোঁজ রাখেন নি! ফিসফিস করে মিতা বলে ওঠে, মনোজ আই আম সরি! আমি তোমার সাথে ইনজাস্টিস করেছি!


বিছানায় শুয়ে এসব ভাবতে ভাবতে মিতার চোখে ঘুম চলে আসে। ক্লান্তির ঘুম! ঘুমের মাঝে শিয়াল, শকুন, কুকুরের রূপে ভেসে ওঠে এক একজন পুরুষ- যারা তার দেহই ভোগ করেছে, কেউ ভালোবাসেনি! ভেসে ওঠে মিতার নিজের মুখটিও! মুখে লাবণ্য নেই, হাসি নেই! আছে শুধু দেহ নিয়ে অহংকার করা এক কামুক নারীর অবয়ব! মন অশান্ত থাকলে ঘুম হয় না! মিতা জেগে ওঠে বারবার, কিন্তু ক্লান্তি তাকে জড় পদার্থের মতো বানিয়ে ফেলেছে আজ! ক্লান্তির ঘুমে, অসার মিতা ফিসফিস করে বলে, মনোজ, "এই দেহ তোমার! শুধুই তোমার!" শব্দগুলো হয়তো ফ্যানের বাতাসে মিশে ঘরেই ঘুরপাক খায় শুধু! প্রাকৃতিক হিমেল হাওয়া কামনার কবিতা শোনে না, সে বয়ে বেড়ায়- প্রেম! পবিত্র প্রেম! পৌঁছে দেয় ভালোবাসার মানুষের কাছে।

------


বিষন্ন ফুল

 বিষন্ন ফুল

- সাকিব জামাল


ভেঙে যাওয়া প্রেমের গল্পে 

চোখের জলই কবিতা!

মুহুর্তে মুহুর্তে আনমনে- নিউরন দোলে

জেগে ওঠে স্মৃতির ডুবোচর। 

অস্থির চর গিলে খায়- জীবন জাহাজ!

স্থবির হয়ে ঘাসের বুকে, 

পড়ে থাকে মালা সাজানোর স্বপ্ন-

নির্বিকার। তারপর...

জীবন সেতো একঝাঁক বিষন্ন ফুল!

সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪

প্রেম

 প্রেম

- সাকিব জামাল


শার্টের বোতাম খুলে দিয়েছি

লিলুয়া বাতাস তূমি চুমো দিয়ে যাও।

বুকের দহন আমার 

চুষে নাও প্রেমে!

আমাকে ভাঙো-গড়ো। 

করো রেণুময়।

ভেসে গিয়ে বসে পড়ুক স্বপ্ন, ফুলের ভাঁজে।

জিকির হোক ভালোবাসার!

প্রার্থনা

 প্রার্থনা

- সাকিব জামাল


যখন সূর্য হেলে পড়ে

আমিও অবনত হই- তোমার প্রেমে!

ধীরে ধীরে নৈসর্গিক মায়ায়

কী দারুণ নিস্তব্ধতা নেমে আসে! আমি কথা কই, 

কথা কই তোমার সাথে বারবার।

তবুও কেন ডুবে রই তুমিহীন- অথৈ দরিয়ায়?

কতকাল হয়ে গেল, জনম যায় যায় প্রায়

আমায় তুমি নায়ে তোল না! 

প্রেমের গান আমার

কবুল করো মাঝি তোমারই দয়ায়।

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

কবিতার বই কেনার বাজেট নেই!

 কবিতার বই কেনার বাজেট নেই!

- সাকিব জামাল


বসন্ত সন্ধ্যায়, হঠাৎ যখন মেঘ করে আকাশে 

তীব্র বেদনায় ডুবে যাই! উড়ে বেড়াই আমি-

চাতক হয়ে শূণ্যতা ঘোঁচাবার সাধনায়! 

বিজলীর আলোয় চলি পথ। 

জলে জীবনানন্দ খুঁজি!

বদ নসিব! তৃষ্ণার্ত চাতকের গান 

বোঝে না এ জামানার প্রেমিকার দল।

বোধহয়, ভালোবাসার সময়টুকু 

হারিয়ে গেছে নব্বই দশকের শেষে! 

বসন্ত আর বৃষ্টির গান ছিল প্রিয়তম ক্ষণ,

কবিতার বই কেনার বাজেট নেই, কারও এখন!

নান্দনিক কামনা

 নান্দনিক কামনা

- সাকিব জামাল


এক একটা ক্লান্ত বিকেল, ভালোবাসার উচ্ছাসে

হেটে হেটে চলে সন্ধ্যারঙের নেশায়

রাত্রির মায়ায় ঘোর প্রবণ।

কর্পোরেটাক্রান্ত দিনে- 

যান্ত্রিকতায় প্রেম ফ্যাকাশে, ক্লিশে!

দিনান্তে, পাখিদের নীড়ে ফেরার গানেই মাদকতা বেশি!

বিরহদগ্ধ চৈতালি ক্ষণে, এমন এক পশলা মাদকতা নিয়ে 

আমিও ফিরে ফিরে আসি- তোমার ঘরে।

পরানের গহীনে তখন মেঘ ডেকে যায়

অসীম আকাঙ্খায়, যদি একটু বৃষ্টি হয়- রাতে!

শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪

আমি আউলা ঝাউলা বাউলা সংঘের লোক

আমি আউলা ঝাউলা বাউলা সংঘের লোক,

আমার জন্যে-

          তোমার পৃথিবীর

                    নিয়ম নীতি রহিত করা হোক!


আমি হেটে বেড়াবো 

           ঘুরে বেড়াবো 

                       কোন বাধা না-মেনে

আমি কথা কবো

         গান গাইবো

                     কোন সুর না-জেনে

এসব নিয়ে তোমার মনে অস্বস্তি যেন না-হোক!

আমি আউলা ঝাউলা বাউলা সংঘের লোক।।


আমি ভালোবাসবো

         বন্ধু হবো

                  কোন হিসেব না-করে

আমি জীবন চালাবো

            সময় কাটাবো

                  কোন দুঃখপ্রেমীর ঘরে

এসব নিয়ে তোমার মাথা ব্যথা যেন না-হোক!

আমি আউলা ঝাউলা বাউলা সংঘের লোক।।



ও চাঁদ, লও নৈবেদ্য- এই দেহ!

 ও চাঁদ, লও নৈবেদ্য- এই দেহ!

- সাকিব জামাল


বসন্ত হাওয়ায় নিস্তব্ধ মধ্যরাতে হঠাৎ

ভেসে আসে পূর্ণ-জোছনাসমেত একখানা চাঁদ। 

চিলেকোঠায় নৈসর্গিক নৈবেদ্য সাজাই আমার দেহ!

চুলবন্ধনী খুলে দেই 

লম্বা দাড়িতে মাখি সুরভি

চোখে সুরমা লাগাই 

অতঃপর গান ধরি,

আমি অপার হয়ে বসে আছি...

হয়তো লোভে, জেগে ওঠে কামনার ঘ্রাণ! 

হারিয়ে যায় চাঁদ, সাঁইজি'র চাঁদ। 

বিচলিত হয়ে পড়ি আমি, তবুও 

বারো চান্দের ফজিলত খুঁজি- তোমার মাঝে!কবিতা:: ও চাঁদ, লও নৈবেদ্য- এই দেহ!

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪

টিএসসি থেকে আর কতদূরে যাবে তুমি?

 টিএসসি থেকে আর কতদূরে যাবে তুমি?

- সাকিব জামাল


গভীর রাত। বৃষ্টি নেমেছে। বসন্তের প্রথম বৃষ্টি।

আধো আধো ঘুম নিয়ে দু'চোখে বসে আছি।

বসে আছি কার অপেক্ষায় জানি না! 

জানি না, কেন বসে থাকি?

তবে একটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আছে!

বসন্তদিনের এক সন্ধ্যায় আমাদের কথা হয়েছিল। 

কথা হয়েছিল ফিলোসফি'র তুমুল আড্ডায়। 

হঠাৎ বৃষ্টি! হারিয়ে গেলাম আমরা জলের খেলায়!

বিতর্কের বাঁকে বাঁকে আমি আস্থা রেখেছিলাম

কসমিক রিলেশনশিপে!

মেটাভার্সের যেথায় থাকি, সাইকোলজিকালি যদি 

ভাবনা থাকে এক। দেখা হবে আমাদের! 

টিএসসি থেকে আর কতদূরে যাবে তুমি?

নিঃসঙ্গ ডাহুকের গান

 নিঃসঙ্গ ডাহুকের গান 

- সাকিব জামাল


নক্ষত্রদের মেলা এড়িয়ে

আমি হতে চাই, এক নিঃসঙ্গ ডাহুক!

জলসিক্ত মমতার মাটি স্বদেশ আমার, 

শাপলা, কচুরিপানার সৌরভমাখা।

তোমরা অপছন্দ করো কবিতা?

তবে মেখে নাও নিয়নের রোশনাই-

অভিজাত শহরে, ইন্দ্রিয় গন্ধে অথবা গন্ধমে 

ভালোবাসা তোমাদেরই হোক!

আমি? বিরহ শেকড়ে; কবি। ডেকে ডেকে 

কন্ঠে ফোটাই রক্তরঙ-আপত্তিহীন!

----------


শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

হ্যালুসিনেশন

 হ্যালুসিনেশন

- সাকিব জামাল


প্রগাঢ় জোছনা। শাদা লাউফুলের মত 

ফুটে আছে চাঁদ। শিহরিত জমিন কাঁপছে 

জোনাকি জলের ছোঁয়ায়। 

উচ্ছাস অবাধ।

বিভ্রম নাঁচে মস্তিষ্কজুড়ে আমার!

দেখি, তুমি হাসছো। 

ভীষণ রহস্যময়!

আলতা পায়ে একটি রাজহংসী তখন 

হেলে দুলে নদীর দিকে যায়, এত রাতে

স্রোতের বিপরীতে আনন্দ খেলায়।

হঠাৎ একটি নিঃসঙ্গ পাথর এমন সময়ে

বিদীর্ণ হয়ে ঝর্ণার গান গায়

ছলাৎ, ছলাৎ...

অধরা চাঁদ

 অধরা চাঁদ

- সাকিব জামাল


...! অভিমান করেছে ডায়েরির পাতা! কথা কয় না বহুদিন। আমি বলি। সে বলে না! ঐশ্বরিক আর লৌকিক দ্বন্দ্বের দ্বীপে আমি দৌড়াই, দৌড়াই দুই পাহাড়ের মাঝে- একটি ঝর্ণার খোঁজে। প্রাণবন্ত ঝর্ণা। বয়ে যেতে যার দ্বিধা নেই!

     তৃষ্ণা ভয়ঙ্কর মায়াবী, ভীষণ বেপরোয়া! যার কাছে হেরে যায় জামানার কত সাধক কতবার। অথচ চাতক ধর্ম মেনে আমি ঠিকই জল চেয়েছিলাম মেঘের কাছে। ঝর্ণার কাছে চেয়েছি প্রেম। তবুও ব্যর্থ ভালোবাসার কিতাব! 

     ইহকাল আর কতদিন...!

অমর একুশে

 অমর একুশে

- সাকিব জামাল


একুশ আমায় এনে দিল

    ভাষার স্বাধীনতা,

মায়ের ভাষায় কথা বলার 

     মুক্তির বারতা।

আঁধার ভেঙে শহীদ মিনারে

    সূর্য উঠলো লাল,

রক্তে কেনা বাংলা ভাষা

      বাঁচুক চিরকাল।

রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪

আধ্যাত্মিক ময়ূর

 আধ্যাত্মিক ময়ূর

- সাকিব জামাল

জ্বলজ্বল করে অলৌকিক জল। মস্তিষ্কজুড়ে নাঁচে যমুনার প্রেম। হাওয়াকুঞ্জে অভিসার বাসনা। অনাগত অনুজের আহ্বানে, সপ্তর্ষি মন্ডলে গান তোলে আধ্যাত্মিক ময়ূর- অক্লান্ত যৌবনের আয়োজনে!

প্রকৃতির পুঁথি পাঠ চলে- নদী, পাহাড়, সমতলে। গুহা সভ্যতা আনন্দে হাসে। আগামী গ্রহিক সভ্যতার স্বপ্ন দেখে আধুনিক সমকাল। আমি স্থানান্তরিত করি আমাকে অন্য জনমে! বিনিময়ে, তুমিই আমার আনন্দময়ী সেই সত্তরটি ফুল!

হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

 হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

- সাকিব জামাল


শীতার্ত পাখিসব, ডেকে ওঠো

ডেকে ওঠো কাঙ্খিত বসন্তদিনের কামনায়।

ঝরাপাতার মর্মরধ্বনি রূপান্তরিত হোক 

নতুনের গানে গানে, শ্লোগানে!

চাপাকলির খোলস ভেঙে 

ফুলেরা ফুটে ওঠো অবিরাম গণতান্ত্রিক সৌরভে!

মুগ্ধতার এই সমস্ত কোলাহলে 

নদীরা বয়ে চলো উল্লাসিত স্রোতে

কবিতামাতৃক বাংলাদেশে- ইচ্ছেখুশি!

শীতল সম্পর্কসব উষ্ণ হোক।

সম্ভবনাময় একটু উষ্ণতার জন্যে

হে বসন্ত, তোমাকে অতল অভ্যর্থনা!

ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল

 ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল

- সাকিব জামাল


হিম হিম বাতাসে, কেমনতর আগুনে পুড়ে যায় মন!

ফুটে ওঠো লাল গাঁদা ফুল এই সময়ে, 

প্রজাপতি ডানার চাদরে উষ্ণতার মায়া

রাত্রির প্রহরে তীব্র হয় যখন। 

চোখে চোখে গাঢ় বিরহে কুয়াশার জল

মুছে দাও, মুছে দাও যুগপথ ওমে। 

তারপর ভোর হোক। 

ভোর হোক আকাঙ্খার আকাশে 

সূর্যোদয়ের সফল গানে- প্রেমে এবং সংবিধানে!

পুড়ছি তোর প্রেমে!

 পুড়ছি তোর প্রেমে!

- সাকিব জামাল


প্রেমের আগুনে পুড়ে

বিচ্ছিন্ন ফানুস হয়ে উড়ে গেছি দূরে।

দগ্ধ মন ভর্তি এখন 

একাকীত্বের বার্ন ইউনিটে, 

ভীষণ যন্ত্রণা কাতর!

ও ডাক্তার, 

বিরহ দহন আমার 

নেভানোর মায়া নেই কী তোর?

স্রোত

 স্রোত

- সাকিব জামাল


নিরিবিলি গভীর রাতে, নদী তোলে গান

অঙ্গে অঙ্গে ছলাৎ ছলাৎ সুরে।

জলের ছোঁয়ায় জল, 

বিগ ব্যাং রহস্য নিয়ে বেড়ায় ঘুরে।

পৃথিবীর বুকে-

শাখা নদী হয় জাতক।

কী দারুণ জেনেটিক্স কেরামতি!

স্রোতে স্রোতে জলের বাড়ে গতি...

আহ্...সুখ!

 আহ্...সুখ!

- সাকিব জামাল


ওহ্ সময়, ওহ্ প্রিয়তমা

শৈশবে মেলেনি সুখ, কৈশরেও না।

যৌবনে ফোটেনি ওই ফুল

জীবনের মৌবনে!

বৃদ্ধবেলায়

তা...না...না...

সমস্ত সুখ আমার, তাই

মায়াবী মাটির কাছে

রেখেছি জমা।

যদি দেখা হয়, হাওয়া'র খেলা শেষে!

--------

কবিতাটি দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন এ প্রকাশিত।

এইসব শীতবৃষ্টি এবং কয়েকটি কাক

 এইসব শীতবৃষ্টি এবং কয়েকটি কাক

- সাকিব জামাল


এইসব শীতবৃষ্টির কালে, নীড়হারা পাখিরা উড়ে বেড়ায়। 

ডাস্টবিনে রাখা চোখে অন্ধকার নামে,

জলস্রোতে ভেসে যায় রুটি-রুজির শেষ ভরসা! 

নাগরিক সমাজ ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ে 

সামসময়িক রাজনৈতিক কোলাহলে!

অথচ উষ্ণতার কোন খোঁজ খবর মেলে না

দারিদ্র্যসীমার নিচু রেখা বরাবর। 

কী দুর্ভাগ্য এই জনমের! কয়েকটি কাক

তখনও ভুণা খিচুড়ি'র পঙতি সাজায় বেপরোয়া!

বুধবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৪

ধ্যানবিন্দু

 ধ্যানবিন্দু

- সাকিব জামাল


আমার পাশে জায়নামাজে তোমাকে চাই!

তুমি কথা কও নিরবে। তোমার কথার 

রহস্যপথ ধরে আমি ধ্যান করি; 

ধ্যান করি আকাশে ওড়বার। 

নীল শূণ্যতার মাঝে 

কী দারুণ পালঙ্ক এক! 

থাকতে চাই ওখানে বাকি কাল।

সম্ভব? সম্ভব না? দ্বিধায় ডুবে রই!

ডুবে যাই, আমি শুধু ডুবে যাই...

আমার পাশে জায়নামাজে তোমাকে চাই!

গোলাপ জ্বালা

 গোলাপ জ্বালা

- সাকিব জামাল


বকুল ফুলে কেমন যেন 

বিরহ ঘ্রাণ পাই!

মালা নয় প্রিয়, গোলাপের 

জ্বালা দিও তাই!

কাঁটায়, জ্বালায় 

তেমন ভয় নেই আমার 

সইতে পারি বেশ!

তবু থাকুক প্রেম

বাঁচুক প্রেম

হোক বিরহ নিরুদ্দেশ।

সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৪

নাগরিক পত্র

 নাগরিক পত্র

- সাকিব জামাল


তোমার চোখে তাঁকিয়ে-

শব্দহীন কত কথা বলে যাই আমি!

তুমি বুঝে নিও বাতাসের কম্পন।

বুঝে নিও ডপলার ইফেক্ট। 

যদি তুমি চাও, আমার চুপকথারা 

মুখর হবে স্বাধীনতার গানে 

ভালোবাসার রাজপথে!

পাশাপাশি হেটে যাব আমরা বহুদূর

সুশাসনের স্মার্ট সড়কে!

ছুটি

 ছুটি

- সাকিব জামাল


তোমার প্রিয় পথে উড়ে যাও পাখি, 

উড়ে যাও দূরে, যত খুশি উড়ে যাও।

বেলা শুরুর গানের কথা ভুলে যাও, 

ভুলে যাও দ্রুত, যত ইচ্ছে ভুলে যাও।



তবু মনে রাখবো আমি, মনে রাখবো একা,  

সবুজ বৃক্ষ। খড়কুটোর ওম। যৌথ ভ্রমন। 

মনে রাখবো, দিনের খুনসুটি। রাতের কূজন। 

বসন্তকাল। আর হংস-মিথুনের গল্প কথা!



অতঃপর, মাটির মায়ায়, একদিন

মিশে যাবো সময়ের প্রান্তিক ঘাসে,

একদম অভিযোগহীন!

হবে না দেখা আর গোলাপের সাথে!

--------

কবিতাটি দৈনিক যায়যায়দিন এ প্রকাশিত।

ফিলিস্তিন

 ফিলিস্তিন

- সাকিব জামাল


টুকরো টুকরো পাথরে বোনা স্বাধীনতার স্বপ্ন 

কচি ঘাসের গায়ে লেগে থাকা রক্তের দাগ

তোমরা বোঝ না? 

তোমরা বোঝ না, কতোটা অধিকারহারা হলে

আপন সন্তানের মৃতমুখ দেখেও

বাবা বলে ওঠেন, "হে আরশের মালিক,

তবুও আমার পরিচয়টুকু নিশ্চিত করো!"


অথচ তোমরা পাথরের টুকরোগুলোকে 

ভয়ঙ্কর বলো বোমারু বিমানের চেয়ে!

তাদের পক্ষে জলসা বসাও। সংঘ করো।

সন্ত্রাসবাদের তকমা দিয়ে- 

অস্বীকার করো স্বাধীনতার সংগ্রাম।

অন্যান্য মানবাধিকারের হিসাব দূরে থাক!

শুধু এতোটুকু হিসাব করো,

কে কতজন মানুষ মেরেছে, 

কে কতোটা দখলবাজ?


তবে, জেনে রেখো, একদিন এইসব পবিত্র পাথরের টুকরোই

আল-আকসাকে মুক্ত করার জন্য যথেষ্ট হবে!

--------

কবিতাটি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণে প্রকাশিত।