শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১
কৃষ্ণাণীফুল
শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১
সুবর্ণ বিজয়
সুবর্ণ বিজয়
- সাকিব জামাল
দেখো, বিজয়ের গৌরব নিয়ে বুকে,
লাল-সবুজ পতাকা ঐ উড়ছে।
সুবর্ণ ক্ষণে, এই সোনার বাংলায়-
স্বাধীনতার সুখে সবাই ভাসছে।
আজ, মাথা উঁচু বাঙালি সকল
যেন ফুটেছে শাপলা ফুল!
স্বপ্ন পুরণে তাঁরা চলছে ছুটে-
যেন দুরন্ত বাঘের কুল!
ইলিশের মতো শুভ্র রঙে-
সবার মন যেন সাজছে!
কাঠালের ঐ মৌ মৌ ঘ্রাণে-
আনন্দে প্রাণ আজ হাসছে!
দোয়েলের শিসে, মাতোয়ারা গানে-
নেঁচে উঠেছে, আজ, যেমন হৃদয়।
এমন শুভ ক্ষণে, প্রার্থনা করি মনে-
থাকুক বাঙালি ভালো সবসময়।
ডিসেম্বর
ডিসেম্বর
- সাকিব জামাল
মার্চ থেকে ডিসেম্বর, একাত্তর।
সবুজ চত্বরে চত্বরে লাল রক্তের দাগ-
কোনটি দীর্ঘ ঘুমের, কোনটি তাজা!
সেসব রক্তবীজ জেগে ওঠে-
ষোল তারিখে, লাল-সবুজ পতাকা হয়ে।
শহীদদের আত্মারা দুঃখ ভুলে,
চোখ মেলে তাকায় আকাশে-
মাথা উঁচু করে। উল্লসিত।
মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার সাথে,
অদৃশ্যতই, শামিল হয় বিজয় মিছিলে।
অবাক বিশ্ব দেখে-
বাঙালির বীরত্ব। পতাকা। দেশ।
আজ, আমরা, অনুজেরা, আলো জ্বালাই,
এগিয়ে চলি, ফের গান গাই-
ডিসেম্বরের।
প্রতিবিপ্লব
প্রতিবিপ্লব
- সাকিব জামাল
তোমাকে পাঠের নেশায় ধরেছে, বেপরোয়া।
অথচ পাতা উল্টোতে দিচ্ছো না তুমি!
যদিও ইংগিতে বুঝি-
পি.টি.ও
কী করি?
হঠাৎ উড়ে যায়- গাঙচিল।
আমিও বাসা বাঁধি পাথরের খাঁজে!
শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১
কন্যাগন্ধা
কন্যাগন্ধা
- সাকিব জামাল
কন্যাগন্ধা, তুমি ফোটো আজ, রজনী'র বুকে।
ঘ্রাণে মাতাল হই আমি, এই অঘ্রানে, সুখে!
গোলাপী ঘরে-
ছড়াও শ্বেত কপোতের সুধা!
নোঙর করি, নিয়ে এতোদিনের শূণ্য নাও আমার।
বাঁধি মনফড়িং, বিক্ষিপ্ত রাত। ধরি, ডুয়েট গান-
টলটলে যমুনার সুরে। শান্ত। স্থির।
তব বহমান!
পতাকা
পতাকা
- সাকিব জামাল
বৈশ্বিক মঞ্চে-
পতাকাই পরিচয় আমার।
তোমার? নিশ্চয়ই ভিন্ন কিছু না!
হাতে ভিনদেশি পতাকা তুলে,
পরিচয়হীনতার উৎসব করে-
কী এমন আনন্দ পাও তুমি?
তোমার কি জানা নেই,
আত্মপরিচয় অস্বীকার করে-
কেউ জাতে ওঠে না!
সুতরাং, সুখে-
আপন পতাকাই ওড়াও।
দুঃখে, সে পতাকা হাতেই-
ঘুরে দাড়াও!
শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১
চিতই পিঠা
চিতই পিঠা!
- সাকিব জামাল
চাঁদকে 'চিতই পিঠা' বানিয়ে আজ,
খেজুর রস খেতে চাইছে মন!
যদি রাজি থাকো সই,
করো আয়োজন!
ময়ূরাক্ষী মেলে, সই হেসে বলে-
"বাগানে কতো ভ্রমর, কতো গান গায়!
সব সখি ওঠে না- সুজনের নায়!"
মন খারাপের সময় আমার,
জোছনায় ভেসে আসে।
হলুদ পাঞ্জাবীর পকেটে রেখে হাত,
চাঁদের সাথে সাথে হই ক্ষয়।
ঘুমিয়ে পড়ি...
অমাবস্যার কোলে!
অমিল টোনাটুনি'র গল্পে,
চিতই পিঠার উপলক্ষ- অপূর্ণই থেকে যায়!
মেটাভার্স প্রেম
নিয়মাক্রান্ত পৃথিবী
নিয়মাক্রান্ত পৃথিবী!
- সাকিব জামাল
সীমিত শব্দসংখ্যা। নির্ধারিত ছক।
বিষয়বস্তু ভিন্নজনের মস্তিষ্কপ্রসূত।
অথচ, কবিতা লিখতে হবে দুর্দান্ত!
আমিও লিখে দিলাম-
"দেখ শালা,
কোথাও কবিতা নেই,
শুধু সং এর পালা!"
অবিনীত চিরকুট ছিল-
সম্পাদক সমীপে।
যদি সাহস থাকে প্রকাশ করে দেখাও!
বিশেষ বয়ানঃ
বেড়ে চলা নিয়মাক্রান্ত পৃথিবীতে-
সব মানুষই এখন সুবিনীত দাস!
কেউ আমাকে ফিরিয়ে দাও,
আদিম সভ্যতার মতো-
অবারিত স্বাধীনতা!
পিংক কালারের মায়া!
পিংক কালারের মায়া!
- সাকিব জামাল
আজ, সমুদ্র উড়াল দিয়েছে, অকার্যকর নীলছাতা!
ভিজছি টিপটিপ ভালোবাসায়...
বিরহের কালো কার্তিক শেষে,
একেলা শালিখের বাসায়-
হিম হিম অগ্রহায়ণে,
এতোদিন পরে ফুটেছে-
একটিমাত্র পিংক কালারের ফুল।
আনন্দকালঃ হাসছে, গাইছে, নাঁচছে...
আর আমাকে জড়িয়ে ধরেছে- বৃষ্টিভেজা মায়া!
ওড়াউড়ি
ওড়াউড়ি
- সাকিব জামাল
পাখিরা ঈর্ষান্বিত হবে বলে, আমি আকাশে উড়ি না!
ভাবতেই পারো, দেহে আমার ডানার অস্তিত্ব কোথায়?
(মাওলানা রুমি কীভাবে-
পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, দিক-কাল অতিক্রম করে,
গ্রহ-নক্ষত্রে ঘুরে বেড়ান?)
মনের ভেতর মহাবিশ্ব রেখে, চোখ বন্ধ করে-
ওড়া যায়। ওড়া যায় ভীষণ-
যখন যেখানে ইচ্ছেখুশি।
সমকালে এ ওড়াউড়ি নান্দনিক নয়!
মহাকালে, যখন আমাকে নিয়ে-
পাখিদের ঈর্ষাহীনতার সময় আসবে,
বেড়াতে এসো তখন, আকাশে করবো ওড়াউড়ি উৎসব!
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর, ২০২১
চাদর
চাদর
- সাকিব জামাল
শীত, চাদরে-
দুটো গল্প এক হবার সময়।
ফুটে ওঠা জোড়াফুল,
ছোঁয়ায় ছোঁয়ায় স্বপ্ন বোনে, যুগল মনে।
জেনেটিক্স নতুন ভাষা খুঁজে পায়-
গায়ে গায়ে প্রাণের ওমে,
ক্লান্তিহীন!
নৈসর্গিক স্টপওয়াচ
নৈসর্গিক স্টপওয়াচ
- সাকিব জামাল
ওহ্! সে কথা কয় না!
অথচ, জন্ম থেকেই আমি কথা বলেছি, তার সাথে-
স্পষ্ট, অস্পষ্ট। মুখে কিংবা ইশারায়।
কেবল বাতাসেই টের পাই-
ফানুস অনুভূতির মাত্রাটুকু আমার।
এই অন, এই অফ-
কী রহস্যময় যাত্রাপথ!
জানতে চেয়েছি, দেখতে চেয়েছি-
জৈবিক দেহের নৈসর্গিক স্টপওয়াচ।
ওহ্! সে কথা কয় না!
দুঃখকুঞ্জ
দুঃখকুঞ্জ
- সাকিব জামাল
সুখের পথে দৌড়ে দেখি-
অন্তিমে তার দুঃখকুঞ্জ!
এই জীবনে, এই ঘরে, প্রবেশে-
বহুমুখী দরজা আছে,
বের হবার নেই পথ!
ইচ্ছে তুমি-
যে পথে চলো ভুবনডাঙার মাঠে,
প্রান্ত শেষে এখানেই থামে রথ।
ভাগ্যচাবি
ভাগ্যচাবি
- সাকিব জামাল
অনেক 'না-পাওয়া' আমার, অন্যের কারণে!
অথচ, গুণীজন বলেন, নিজের ভাগ্য নিজেই গড়া যায়।
এ কথায় আমি অনাস্থাই রাখি বেশি।
এক মানুষের ভাগ্যচাবি মাঝে মাঝে অন্য মানুষের-
হাতে চলে যায় বলে, যত সৃষ্টিঃ
তন্ত্র, মন্ত্র, সংঘ।
কৌশলী লোকেরা সেই চাবি দিয়ে খোলে-
তন্ত্রের তালা, মন্ত্রের মটকা, সংঘের সিন্দুক!
আর আমার মতো অধিকারহারার দল
তাদের পিছে পিছেই ঘোরা লাটিম, ভনভন!
স্বপ্ন শিশির
স্বপ্ন শিশির
- সাকিব জামাল
দিন যায়, স্বপ্নগুলো আমার,
বিন্দু বিন্দু শিশির হয়ে ঝরে পড়ে-
জীবনের সবুজ ঘাসপাতায়।
সূর্যের তাপে বেঁচে থাকার শক্তি হারিয়ে,
উড়ে যায় নাগালের বাইরে!
বার্ষিকগতির, এই সুখ, এই দুঃখ-
দোলাচালে মোড়ানো সময়ের পোশাকে,
মন ঋতু বদল করে, উল্লাসহীন!
শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১
আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ
আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ!
- সাকিব জামাল
দিন, দিনান্তে-
সুখটুকু নিয়ে উড়ে যায় সময়পাখি,
দুঃখেরা উৎসবে মাতে আমার বারান্দায়।
আমি হয়ে উঠি- জীবনানন্দ দাশ!
শ্রীহীন ধুসর ক্যানভাসে,
সেনহীন, আমি আঁকি-
একলা শালিখের বিরহবোধ।
কমলালেবুর গন্ধ সাথে,
একটি নদী বয়ে চলে-
সভ্যতারূপে, অবিরাম একাকী!
শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১
ধর্মফুল
ধর্মফুল
- সাকিব জামাল
তোমার ধর্মফুলের সৌরভে-
মুগ্ধ যত মানুষ, ততো সুন্দর তুমি,
ততোটা নিকটবর্তী স্রষ্টার ভালোবাসার।
আর যদি অমানবিকতার সংক্রমণে-
সৌরভ রূপ নেয় দুর্গন্ধে,
দূরে দূরে থাকবে সবাই।
ঘৃণা জিতে যাবে!
অথচ, জীবনবৃত্তান্ত পড়ে দেখো,
ঘৃণা নয়, ভালোবাসা অর্জন করাই ছিল-
তোমার ধর্মগুরুর কাজ।
এবার, উত্তর ভেবো, তোমার ধর্মফুল-
সৌরভমাখা নাকি দুর্গন্ধময়?
বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১
ডিয়ার কমরেডস
ডিয়ার কমরেডস
- সাকিব জামাল
ডিয়ার কমরেডস, দেখো, সবুজ চত্বরগুলো-
ধীরে ধীরে হলদে-তামাটে হয়ে নিশ্চিহ্নপ্রায়।
শোষক একনায়ক ইউক্যালিপ্টাসে ঘিরে ধরেছে!
আলোক অধিকারহীনে ফুটছে না রঙিন ঘাসফুল।
নিরীহ লতা-গুল্মকুঞ্জ অনুর্বর ভূমিতে অসহায়।
হতাশায় ডুবে আছে ছোট ছোট বৃক্ষদল।
পৃথিবীর প্রান্তরে প্রান্তরে-
ইউক্যালিপ্টাস উপড়ে ফেলে, ছুটে চলো তাই-
সবুজ সমাজ রক্ষার দুরন্ত কৃষক হয়ে!
সাম্যতার ভূমিতে বাঁচুক- ঘাস, লতা, গুল্ম, গাছ।
শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১
ত্রয়ী উপন্যাস
ত্রয়ী উপন্যাস!
- সাকিব জামাল
তোমাকে নিবেদন করেছিলাম-
ভালোবাসার একগুচ্ছ কবিতা।
ফিরে ফিরে তুমি উপহার দিলে-
কষ্টের গল্পসমগ্র।
সেসব প্রাক্তন কবিতা,
সেসব প্রাক্তন গল্প,
তোমার বর্তমানের কাছে গোপন রাখা-
কী নিপুন ত্রয়ী উপন্যাস!
শহুরে সাপ এবং মা
শহুরে সাপ এবং মা!
- সাকিব জামাল
ছেলেবেলায়, দুষ্টুমি শেষে, মায়ের বকা এড়াতে-
একদিন ঝোপের আড়ালে লুকিয়েছিলাম।
হঠাৎ, দেখি সাপ!
'মা' বলে চিৎকার করে-
আবার ফিরে গিয়েছি মায়ের কোলে। নিশ্চিন্তপুর।
এখন শহুরে আবাস, ঝোপজঙ্গল নেই, সাপ আছে!
অথচ, বড়বেলার দুর্ভাগ্য-
মা গ্রামে। কাছে নেই। চিৎকার করে লাভ নেই!
রোজ সাপের কামড় খেয়ে চলছি...
ক'দিন সইতে পারবো, জানি না। চিন্তিত অন্তরপুর।
মিনিংলেস ড্রিম
মিনিংলেস ড্রিম
- সাকিব জামাল
শরৎ রাত।
আকাশে টুকরো টুকরো শাদা শাদা বরফে'রা-
ঘিরে রেখেছে ভীষণ সুন্দরী চাঁদ!
আমি এক একলা পেঙ্গুইন,
বরফরাজ্যে অপটু প্রেমে।
তবুও ধীরে ধীরে হেঁটে এগোচ্ছি,
প্রায় কাছাকাছি, হঠাৎ
চন্দ্রাবতীর তুমুল টানে ওঠে জলোচ্ছাস।
ধপাস!
এরপর...
ভোর।
রোজ সকালে যেভাবে রাঙা চোখে-
ঘুম ভাঙে একলা আমার,
আজও তার ব্যতিক্রম হয় নি!
--------
কবিতাটি দৈনিক সমকালের কালের খেয়া এ প্রকাশিত।
তালপিঠা আখ্যান
তালপিঠা আখ্যান
- সাকিব জামাল
বেয়াইসাব কয়, "বেয়াইন, বেরহম ভাদ্রের গরম,
তাল কি পাকছে? হইছে নরম?
তালপিঠা খামু রাইতের কালে।"
"হয়, হয়!" বলে বেয়াইন যখন লজ্জায় লাল,
বেরসিক ভাবী এসে বলে,
"দেবর, বাড়ি চল। তাল লইছি দুইটা।
তোর ভাইও খাবে আইজ রাইতে তালপিঠা।"
ভাবী আর দেবর যায় ফিরে, গাঁয়ে।
ধীরে ধীরে নাও চলে,
বেয়াইনসাব ভাসে চোখের জলে!
-------
কবিতাটি দৈনিক জনতা এর সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত।
শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১
ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে...
ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে...
- সাকিব জামাল
ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে-
উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার।
এখানে এরূপ, ওড়ে বহুরূপ-
শরীর খেকো উপাদান!
ঢাকা শহরে টাকা ওড়ে, সাথে ওড়ে-
ইনসমনিয়া, ডিপ্রেশন, দুঃখ হতাশার।
এখানে এরূপ, ওড়ে বহুরূপ-
মনোকষ্টের গান!
লোভের ঢাকা'য়-
দেহ ও মন দুটোই খায় টাকায়!
ডুবে দ্যাখ
ডুবে দ্যাখ
- সাকিব জামাল
রাত দুপুর। বৃষ্টি নুপুর টাপুর টুপুর। আকাশে মেঘের বাঁধ।
তবুও ইচ্ছে হলো, দেখবো, পূর্ণ চাঁদ।
লালনিয়া, বোঝে চোখের ভাষা। বলে,
চল, নদীর বাঁকে। দেখবি, কী সুন্দর চাঁদ ওঠে জলে!
তারপর, যখন জোছনায় ডুবে গেলাম,
বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম,
তখন, ভেসে আসে একতারার মিহি সুর-
ডুবে দ্যাখ দেখি মন...
মৃত্যু মায়াবিনী
মৃত্যু মায়াবিনী
- সাকিব জামাল
মৃত্যুকে আমি বেশ কাছে থেকে দেখেছি, কয়েকবার।
শান্ত, শুভ্র প্রেমিকার মতো ভীষণ মায়াবিনী।
ভালোবেসে আমাকে জড়িয়ে নিতে চায় বুকে অনন্তকাল।
না, ভৌতিক কোন রূপ নেই তার,
নেই ভয়ঙ্কর কোন কর্কশ স্বর।
কেবল লজ্জাবতীর মতো রহস্যময়তা আছে-
কাছে আসে আবার আসে না!
তবে সে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অলৌকিক মায়ায়-
একদিন কাছে আসবেই। আলিঙ্গন হবে বিরামহীন প্রেমে!
শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
জোছনাবিলাস
জোছনাবিলাস
- সাকিব জামাল
পূর্ণিমা রাত,
আকাশে তালগাছ হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে চাঁদ।
বাবুই পাখির বাসাগুচ্ছের মতো জোছনা'রা ঝুলছে।
আমি একটি বাসায় ঢুকে পড়ি,
দেখি মাটির দেয়ালে জোনাকীফুল-
মিটিমিটি আমায় ডাকছে।
আমি সারারাত জোছনায় ডুবাই,
ভিতর-বাহির।
আক্ষেপ
আক্ষেপ
- সাকিব জামাল
তোমার সাথে আমার দেখা হয়,
আমার সাথে তোমার দেখা হয় না।
আমার সাথে তোমার দেখা হয়
তোমার সাথে আমার দেখা হয় না।
এ কেমন চোখ আমার- নুর সয় না!
এ কেমন মন আমার- দূর সয় না!
বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১
চাকার বিবর্তন
চাকার বিবর্তন
- সাকিব জামাল
কৌশলে, শ্রমিকের মাথার সাথে পা লাগিয়ে-
চাকা তৈরি করে আধুনিক কর্মকার!
সভ্যতা এগিয়ে চলেছে সামনে...
হিসাব, ভ্রান্তি লুকানো চমৎকার!
ধারণা করি, এই চাকা আবিষ্কারের পূর্বেই-
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভালো ছিল।
এখন তারা ভালো না-থাকা মানুষের দলে!
শান্তিকে যদি সূচক ধরো,
সভ্যতা এগিয়েছে কতোটুকু?
চাকার সংখ্যা বেড়েছে মাত্র।
নিরানব্বই শতাংশ মানুষই চাকা।
আর চাকার প্রতিটি বিন্দুই পিষ্ট হয়!
বৃষ্টি অথবা বিগ ব্যাং
বৃষ্টি অথবা বিগ ব্যাং
- সাকিব জামাল
নীল শাড়ি উধাও! মেঘকালো চুল বৃষ্টিফুল-
কদমরেণু হয়ে ঝরে...
ত্রিকোণ ঘর মাতাল।
দারুণ সৃষ্টির রহস্য সেখানে!
বিগ ব্যাং এবং মহাবিশ্ব।
যোনিফুল এবং সভ্যতা।
একটি বিন্দুর চিৎকার। সুর, তাল, লয়।
এখনও বৃষ্টি হয়! তাই, সম্মুখ যাত্রায় সময়...
বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১
কথাদেবী
কথাদেবী
- সাকিব জামাল
তোমার কন্ঠে বাজে তানসেনের সুর।
মেঘমাল্লা হয়ে আমি-
করি মাতাল ওড়াউড়ি।
পাড়ি দেই- তেপান্তরের মাঠ,
সাত সমুদ্দুর।
পাপড়ির ভাঁজে ভাঁজে বৃষ্টি হয়ে ঝরি!
প্রেমচক্র
প্রেমচক্র
- সাকিব জামাল
হয়তো এই আমি, সামান্য 'প্লুটো' ছিলাম তোমার আকাশে- প্রেমিকের মর্যাদায়।
জীবনচক্রের একটি পর্যায়মাত্র। তারকা'র মতো!
তোমার মনের মহাজাগতিক পরিবর্তনে-
মর্যাদা হারিয়েছি।
এখন নেই কোন তালিকায়!
হস্তরেখার ক্রস চিহ্ন যখন ভাগ্যরেখায় এঁকে দেয় কাট্টি,
তখন বাঁধন ছিড়ে উড়ে যাওয়া ঘুড়ির মতো-
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে হয় দূরে কোথাও,
সবুজ ঘাসের গালিচায়।
একা।
প্রেমে ফোঁটা অশ্রুফুলে বাসর সাজাই আমি!
শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১
বাঁশোকী ভূত
বাঁশোকী ভূত
- সাকিব জামাল
ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁই ছুঁই!
ফিরছি বাসায়, একা।
তিন রাস্তার মোড়ে, কটকট শব্দ,
নুয়ে পড়ে বাঁশঝাড়, বাঁকা।
ডিঙিয়ে যেতে পারি না-
সর্বত্র অদৃশ্য দেয়াল,
আড়ালে ভূতেরা হি হি করে,
আমায় মারবার খেয়াল!
বাঁশের পর বাঁশ খেয়ে খেয়ে-
আমি চিৎপটাং রাস্তায়,
বড় বড় বাঁশোকী ভূতেদের-
ভূ-রাজনৈতিক ধান্ধায়!
শ্রাবণ শিস্
শ্রাবণ শিস্
- সাকিব জামাল
টানা সাতদিন ধরে বৃষ্টি আমার মনউঠোনে-
সা রে গা মা পা ধা নি।
এক যোগ এক, এক প্রেমসত্তায়-
নাঁচছে মাটি, ত্রিমোহনা জল।
নাঁচছে দম, আকাশ অতল।
হারমোনিয়ামে এখন,
যেখানেই স্পর্শ করবে তুমি-
সহজে বাজবে শ্রাবণ শিস্, অদ্ভুত সুন্দর!
শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১
আপনজননীতি
আপনজননীতি
- সাকিব জামাল
এলোমেলো ঝড়ো হাওয়া। দু'দল সুপারি গাছ। একদল আরেকদলের ফল ছিড়ছে, কান মলছে। পাতায় পাতায় করছে চুলোচুলি। এর গায়ে ও আঁচড় কাটে থেমে থেমে মহড়ায়। সময় গড়ায়, কেউ কেউ কোমর ভেঙে পরে থাকে বাগানটায়।
দুটো সারির মাথায় দুটো তালগাছ। দিব্যি দাড়িয়ে, বেখেয়ালে- বাতাসে পাতা ওড়ায়। গান ধরে, "আমি তোমাদেরই লোক।"
পাশ দিয়ে হেঁটে যায় এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক।
ফিসফিস করে বলে, "সেই ব্রিটিশ আমল থেকে দেখে আসছি গরিবের ভাগ্যযোগ।"
রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১
একগুচ্ছ এক লাইন!
একগুচ্ছ এক লাইন!
- সাকিব জামাল
১.
ট্রেন্ড | ফুড়ুৎ করে সময় ফড়িং হয়ে উড়ে যায়!
২.
সংগ্রাম | পদতলে ঘাসফুল উঁকি দেয় সূর্যপানে!
৩.
প্যানিক | ম্যাসেঞ্জারে টুং টাং কেঁপে ওঠে বর!
৪.
মৃত্যু | বড়ই পাতায় ঝুলে থাকে মৃত্যুরদল!
৫.
তৃপ্তি | কুয়োর জলেও শ্যাওলা পায় প্রাণ!
পলিদ্বীপের পালপিটিশন
পলিদ্বীপের পালপিটিশন
- সাকিব জামাল
নদীর জাতিকাঃ পলিদ্বীপ। সৌরভমাখা গায়,
আশেপাশে উত্তাল সবাই, ঢেউ হতে চায়।
যদি ছোঁয়া যায়, নারীমাটিদেহ! ছলে, করতলে-
ধোঁয়ার আড়ালে সুখটান, মুখ ঢেকে চলে।
ঢেউয়ের পর ঢেউ আসে, হিংস্র জোঁকে ভরা,
দ্বীপটির অসহ্য লাগে- কামুক কুহকে ধরা।
কোথাও প্রেমিক নেই, মধ্যবিত্ত সুন্দরীতমার!
দেহ কামড়ে দেয়- অনাকাঙিক্ষত জলে,
পলিদ্বীপের পালপিটিশন অবিরত বেড়ে চলে!
আউলিয়া
আউলিয়া
- সাকিব জামাল
হাঁটে পথে পথে দিশাহীন পথিক যেন,
অথচ, মন তাঁর বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড খবরিয়া!
লৌকিক জনমে 'পাগল' বলে লোকে,
লুকিয়ে গেলে ডাকে। বলে, আউলিয়া!
সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১
বাক বাকুম
বাক বাকুম
- সাকিব জামাল
পড়ন্ত বিকেল। বৃষ্টি পড়ছে। জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আমি দেখছি-
একটি পায়রা, আনন্দে- ভিজছে, নাঁচছে, গাইছে, উড়ছে।
উড়ে উড়ে আমার পাশে এসে বলে যায়-
বাক বাকুম, বাক বাকুম! তোমার চেয়ে আমি স্বাধীন!
শুনে, ভাবছি, আমি কী আসলেই বাকরুদ্ধ? কতোদিন?
কোন কোন পত্রিকা হয়তো জানে সে খবর!
আর জানতে পারে- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, সদর দপ্তর!
দেখা হয়নি আর...
দেখা হয়নি আর...
- সাকিব জামাল
কনিষ্ঠ আঙুলে আঙুলে হলো ভাব,
অনামিকায় অনামিকায় আংটি বদল,
মধ্যমা মাতাল ছিলো খুনসুটিতে,
তর্জনী করেছে আলতো আদর,
বৃদ্ধাঙ্গুলি সিঁদুর মাখে কপালে।
লাল রোশনাই, প্রেমে ডুবে যাই!
কিছুদিন পরে, চাওয়া পাওয়ার দ্বন্দ্বে,
ভালোবাসা পরিযায়ী পাখি হয়ে উড়ে যায়!
যুগল হাতে বাঁধানো প্রেমের চিহ্নে-
চর্তুদিক ঘিরে এখন নীল ক্যানভাস।
নীল দংশনে, আহত হই 'বিরহ' জংশনে!
সেই লাল, এই নীলে মিশে-
নেমে আসে কালো অন্ধকার!
কখনো আমাদের, দেখা হয়নি আর...
বৃষ্টি ও বিবিধ এজেন্ডা
বৃষ্টি ও বিবিধ এজেন্ডা!
- সাকিব জামাল
মুষলধারে ঝরে পড়ছে বৃষ্টি...
শহরের রাস্তায়- যানবাহন সাঁতার কাটে পাল্লায়!
আমরাও ভেসে বেড়াই পাশে পাশে।
না-জানি কে, ড্রেনে পরে উড়ে যায় আকাশে!
ছাদে ঘাস নেই, বৃষ্টিতে ভিজে লাভ নেই কংক্রিটে।
মনের শান্তি শহরতলির নদীতে ডুবে যায়।
ও আশা নেই! ছিটিতে বাজে না হুইসেল!
ভিআইপি, সিআইপি, ভাইরাল আলোচনা শেষে,
গোলটেবিল বৈঠকে আমাদের অধিকার-
পরে থাকে বিবিধ এজেন্ডায়!
শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১
এলেম
এলেম!
- সাকিব জামাল
কর্কশ কন্ঠের ওমে-
বেড়ে ওঠে কুহু কুহু সুর...
প্রমাণঃ কাক ও কোকিল!
খোলা চোখে- বাহ্যিকতামাত্র।
সহজে ধরা দেয় না প্রিয় প্রেম!
নির্জনে, ধ্যানে, গভীরে-
লুকানো প্রকৃষ্ট এলেম।
জীবন, জীবিকার দাস
জীবন, জীবিকার দাস!
- সাকিব জামাল
দু'পায়ের গাড়ি, থেমে নেই বাড়ি,
রাজপথে চলে জীবিকার চক্কর!
ভুলে সব ভয়, যেমন হোক সময়,
ক্ষুধার কাছে তুচ্ছ মৃত্যুঘন প্রহর!
হাঙ্গার ইজ অলওয়েজ আনলকড।
হাঙ্গার ইজ...
অলওয়েজ আনলকড।
যত তর্ক ধরো, জীবন, না জীবিকা বড়?
ক্ষুধা থোড়াই কেয়ার করে বাহাস!
মাতৃগর্ভ থেকে শুরু মহাকালের গর্ভ পর্যন্ত গুরু,
জীবন্তমাত্রই জীবন, জীবিকার দাস!
বিলিভ ইট আদারওয়াইজ ইউ উইল বি শকড।
বিলিভ ইট আদারওয়াইজ...
ইউ উইল বি শকড।
তওবা
তওবা
- সাকিব জামাল
হয়তো, প্রথমে, যুদ্ধে জিতে যায় শয়তান!
চুড়ান্ত যুদ্ধে বিজয়ী আদম!
পরিস্থিতিসাপেক্ষে, প্ররোচনার ভুলে-
স্থির থাকি না আমি, হতাশও নই।
অপেক্ষায় থাকি- চুড়ান্ত যুদ্ধের, বিজয়ের।
জানি, গন্ধম ভুলে-
তওবায় ফুটেছিল পৃথিবীফুল!
জানি, ট্রায়াল এন্ড এরর বেসিসে-
এগিয়ে চলে বৈজ্ঞানিক সভ্যতা!
জেনেটিকলি, 'আদম ডিএনএ' আমার দেহেও আছে!
আশারাখি তাই- তওবায়। রহমে খোদার-
আমিও পৌঁছে যাবো একদিন শুদ্ধতার মঞ্জিলে।
শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১
নাগরিক অমাবস্যা
নাগরিক অমাবস্যা!
- সাকিব জামাল
এই শহরে-
নৈঃস্বর্গিক পূর্ণিমা শুধু আকাশে থাকে।
'নাগরিক অমাবস্যা' এখানে বারোমাস!
নষ্ট অন্ধকারে ডুবে আছে-
গণশৌচাগার থেকে গণ সম্পর্কযুুক্ত প্রায় সব প্রতিষ্ঠান!
এই শহরে-
জনপথে, রাজপথে, 'জোছনা' তোমরা কোথায় দেখো?
কার আকাশে, কোন আকাশে?
ছুমন্তর!
ছুমন্তর!
- সাকিব জামাল
তুমি, কী আশ্চর্য এক ছুমন্তর!
স্পর্শে, ঝরনা হয়ে গেল- আমার পাথরচাপা অন্তর!
কোন প্রত্নবিদ জানতো না এতোদিন,
আমিও ছিলাম বেখবর!
তুমি এলে, বিষাদের মেঘ কেটে-
টলটলে জলে ডুবে গেল নীল আকাশ!
এ জল এখন বাঁধা জানে না, মোহনায় মিশে যায়।
তুমি, নির্বিঘ্নে পান করো-
প্রবাহিত প্রেমের শরাব!
শান্ত সময়কে উত্তাল করে, আমি হই পরিব্রাজক।
ভৌগলিক পৃথিবীতে দেখবো-
যুগল পাহাড়, মাঝের উপত্যকা।
দেখবো, অগভীর কূপ।
মাটির ভাঁজে লুকানো সমুদ্র!
দ্রুত দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাসে, যৌথকাল যাপন শেষে-
পৃথিবীতে ফুটবে পরবর্তী ফুল!
এলিয়েনার জন্য ভালোবাসা!
এলিয়েনার জন্য ভালোবাসা!
- সাকিব জামাল
আমি আর এলিয়েনা, সন্ধি করেছি পৃথিবী আর মঙ্গলের!
প্রেমের বন্ধনে, আলোর বেগ অতিক্রমে-
আমাদের দেখা হয়েছিল সপ্তর্ষিমন্ডলে!
সেখান থেকে তাঁকিয়ে দেখি-
কী সুন্দর পৃথিবী! কী দারুণ মঙ্গল!
তারপর, হাতে রেখে হাত, চোখে রেখে চোখ,
দু'জনেই সমস্বরে বলেছিলাম,
"গ্রহে গ্রহে সবার জীবনটুকু সুখী হোক।"
লিপিবদ্ধ হলো প্রতিশ্রুতি, আমাদের প্রেমে-
নিরাপদ মহাকাশ। সবাই স্বাগত ভ্রমণে!
ভালোবেসে, তোমরাও কথা দাও-
কখনো হবে না 'স্টার ওয়ার' মহাবিশ্বের বুকে!
অন্যমানুষ
অন্যমানুষ
- সাকিব জামাল
বিরহ তাপদগ্ধ হয়ে, আমার কতো নদী জল-
বৃষ্টি হয়ে আকাশে উড়ে গেল, কেউ জানে নি!
চোখে যে আগুন জ্বেলেছিলে তুমি,
মধ্যরাতে তা চৈত্রের সূর্য হতো প্রতিদিন!
তীব্র দহনে, ক্লান্ত চোখের টাপুর টুপুর বর্ষা-
রাতেই বিদায় করেছি, ঐ সময়ের কর্পূর করে।
ভোরে, স্বাভাবিক থাকার মোহে!
সেইসব ক্ষণ জমেছে এখন, এই আষাঢ়ে,
ভীষণ উল্লাসে, অন্যমানুষের চোখে-
'খিচুড়ি খাবার' মেঘলাদিন হয়ে!
তোমারও কী আজ, ঐরূপ আনন্দ?
হিপোক্রেসি
হিপোক্রেসি
- সাকিব জামাল
একদিন, জিজ্ঞেস করেছিলাম তাঁকে-
তুমি আমার কি হও?
রহস্যময় হাসি! উত্তর এলো-
"আমি তোমার 'যমুনা' হই!"
স্পষ্টতই, আমি বুঝিনি
আথবা বুঝতে চাইনি তার মানে,
নির্বাক, অপলক চেয়ে থেকেছি শুধু!
নিঃশব্দ পায়ে, সে হেঁটে যায় দূরে...
যৌবনা চাঁদ জোছনা হারায় মেঘের কোলে!
অথচ, আজ, পড়ন্তবেলায়-
শুনি সাঁইজি'র গান!
কর্পোরেট বলয়ে বন্ধক রেখে জীবন,
ধরি, মুখোশে বাউল বাউল ভাব!
শনিবার, ১৯ জুন, ২০২১
শেষ দেখা
শেষ দেখা
- সাকিব জামাল
মেঘের পালকিতে করে
উড়ে যাবো বহুদূরে,
ডাকো যতো পিছে আমায়
আসবো না আর ফিরে।
এই দেখা শেষ দেখা
ভালো থেকো নতুন প্রেমে।।
অন্য কারো ভালোবাসায়
সুখে থেকো অন্য ঘরে
আমার কথা পড়লে মনে
দেখো একটু বৃষ্টি ধরে।
এই দেখা শেষ দেখা
ভালো থেকো নতুন প্রেমে।।
মেঘ ভেঙে রোদ এলে
বুঝে নিও চিরতরে,
আমার বিদায় এই ভুবনে
বৃষ্টির সাথে ঝরে পড়ে।
এই দেখা শেষ দেখা
ভালো থেকো নতুন প্রেমে।।
(এটি মূলত গানের কবিতা।)
পায়রা অথবা প্রেম
পায়রা অথবা প্রেম!
- সাকিব জামাল
পানকৌড়ি রঙ মেঘলাক্ষণ কেটে যাবার শেষে,
আমাদের পথচলায়- কনিষ্ঠ আঙুলে আঙুলে হবে ভাব!
সে অপেক্ষায় মন, নীলজলের তিমির মতন
বারবার উঁকি দেয়, তোমার পথ চেয়ে চেয়ে...
অসময়ে নিয়ন্ত্রণ নেই কারো!
ক্লান্ত চোখ, ঝড়ো হাওয়ার ধুলিকণায় আহত হয় বারবার!
আহ্নিক চক্রে, পূর্ব থেকে পশ্চিমক্রমে-
পৃথিবীর বুকে নেমে আসে সন্ধ্যা,
নিয়ন আলোয় ঝলসে ওঠে এক একটি রাজপথ।
তবুও রাত!
দুর্ভাগ্য আমাদের-
কারো আকাশে কোন 'সাদা পায়রা' ওড়ে নি আজও!
হাওয়া ছাড়া আদম বাঁচে না
হাওয়া ছাড়া আদম বাঁচে না
- সাকিব জামাল
হাওয়া ছাড়া আদম বাঁচে না!
না, না, হাওয়া ছাড়া আদম বাঁচে না।
একা আদম দুঃখে ভাসে,
বিরহ আগুনে পোড়ে,
হাওয়া প্রেমের দেখা বিনা-
ধরা সাজে না।।
বিচ্ছেদে দুঃখ বারবার,
আঁধার ভরা জগত সংসার,
ভালোবাসার সাধনা ছাড়া
সুখ মেলে না।।
আদম-হাওয়া সুখের মিলন
ভালোবাসায় শুরু জীবন,
মানব, জগত বুঝলো সবাই-
প্রেম ছাড়া জীবন চলে না।।
-------
এটি মূলত গানের কবিতা।
দুপুরবেলার ছেলেবেলা
দুপুরবেলার ছেলেবেলা
- সাকিব জামাল
খালের উপর মাঝ বরাবর ঝুলন্ত গাছের ডাল,
সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে ল্যাংটা ছেলের পাল!
বাবা মাকে দিয়ে ফাঁকি, চুপচুপ,
দম যতক্ষণ চলে ডুব, খুব খুব,
দুপুরবেলার ছেলেবেলা সে কী দারুণ বেসামাল!
বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
ইন আ রিলেশনশিপ!
ইন আ রিলেশনশিপ!
- সাকিব জামাল
প্রেমে, মনের স্লেটে লেখি ভালোবাসার কবিতা।
বিরহে, ডাস্টার দিয়ে মুছি!
সম্পর্কের কথামালা-
একচক্রে শেষ হয় না!
আবার লেখি, আবার মুছি..
লেখি, মুছি! মুছি, লেখি!
যেন 'টম এন্ড জেরি',
অবিরত কার্টুনে সময় চলে...
'নিউরন' প্রোডাকশন হাউজের পরিবেশনায়-
করছি অভিনয়!
জীবনটা যতদিন দীর্ঘ, চলচ্চিত্র ততদিনের পূর্ণদৈর্ঘ্য।
অন্তরপুর
খোয়াবভঙ্গ
খোয়াবভঙ্গ
- সাকিব জামাল
আলো, শব্দে মেঘের নুপুর বাজে
মন আমার ময়ূরডানায় সাজে।
বাতাসে ভেসে ভেঙে ফেলি কপাট
যতখানি পারি করবো বৃষ্টি লোপাট!
হঠাৎ পড়ি মায়াবী এক ফাঁদে
নাঁচে 'পরি' একটি বাড়ির ছাদে!
মোড় ঘুরিয়ে উড়াল দিলাম তখন
তাল মিলাতে 'তা ধিন ধিন' প্রবণ।
কাছে যেতে হারিয়ে গেল সে
মেঘ ভেঙে ইতোমধ্যে রোদ উঠেছে!
বৃষ্টিজলে স্নান কারার স্বপ্ন হলো শেষ
খাঁ খাঁ রোদে পোড়ে এখন আমার অন্তরদেশ!
অনিবার্য বিচ্ছেদ
অনিবার্য বিচ্ছেদ
- সাকিব জামাল
অবিশ্বাসে যখন মনের আড়াল হয় মন,
অতীত স্মৃতিগুলো-
সাদাকালো হয়ে যায়!
রঙিন প্রেমের-
সব ধমনী, শিরা, উপশিরা
ভোগে ভীষণ রক্ত শূন্যতায়!
ভালোবাসা তখন ক্লিনিক্যালি ডেড!
শুরু হয়...
প্রাণহীন, একা থাকার দিন।
অবিশ্বাসে অনিবার্য বিচ্ছেদ।।
নফস
নফস
- সাকিব জামাল
চাঁদের পাশে মেঘেরা ভাসে
প্রেমের পাশে ভাসে বিরহ!
তোমার ভেলায় ভাসি আমি
আলো আঁধারের গল্পসহ!
অবরুদ্ধ সত্যগান
অবরুদ্ধ সত্যগান
- সাকিব জামাল
মাঝেমাঝে দু, একটি 'গায়ক' পাখি উঁকি দেয়,
কথা বোনে, করে সত্যের গান!
তখন হঠাৎ...
আকাশে ওড়ে শকুনের দল,
সাঙ্গোপাঙ্গরা চিল, ঈগল!
গায়ক পাখিদের ভয় দেখায়,
বলে ইঙ্গিতে, ইশারায়-
"যদি কথা কও, গাও গান
আর আমজনতা শোনে,
টুঁটি চেপে ধরা হবে,
গেলে যেতেও পারে প্রাণ!"
এরপর থেকে...
কন্ঠে অথবা কলমে-
কথা ও গান অবরুদ্ধ হয়ে পরে দিন দিন!
শনিবার, ১৫ মে, ২০২১
যুগপথ অতৃপ্তি
যুগপথ অতৃপ্তি
- সাকিব জামাল
একটি কালো ভ্রমর বসেছিল গোলাপের বুকে।
গল্প চলছিলো অন্তরঙ্গ প্রেমের।
গল্প চলতে থাকে,
অথচ দু'জনে কল্পনায় ভাসে ভিন্নতায়!
আনমনে, ভ্রমর উড়ে যায়-
রক্তজবার বুকে!
গোলাপ অনুভব করে-
রঙিন প্রজাপতির ছোঁয়া!
আত্মার অমিলনে যুগপথ অতৃপ্তি দেহজ যুগলে!
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আর্তনাদ!
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আর্তনাদ!
- সাকিব জামাল
যে উদ্যান থেকে এসেছিল একদিন
স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক,
সে উদ্যানকেই অবরুদ্ধ করতে আজ
বণিকেরা ছেড়েছে হাঁক!
গাছ কেটে হবে রেস্তরাঁ রঙমহল,
ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ভুলে!
হবে কার্বন নিঃসরণে তুমুল কেনাবেচা,
অক্সিজেন নিয়ে কেড়ে সমূলে!
নানান পাখি হবে সব নীড়হারা
গাইবে না মধুর সুরে গান,
নান্দনিক প্রকৃতি হবে ছুরিকাহত,
হবে শ্বাসরুদ্ধ শহুরে প্রাণ!
পুঁজিবাদের রুজিমুখী ঘোরাফেরায়
হবে মনের বিকাশ বন্ধ,
একটু একটু করে বাড়বে 'দখল'
সোহরাওয়ার্দী হারাবে ছন্দ!
অবশ্য, তাতে কার কী আসে যায়?
কার করে খানিক মাথা ব্যথা?
তবে উদ্যান নিরবে কাঁদে!
ভাবে, না-জানি সে কবে হারায়-
স্মৃতিচিহ্নের নান্দনিকতা,
ভাবগাম্ভীর্যের বিজয়গাঁথা।
সমুদ্রজল
অথচ সমুদ্রজল অযোগ্য পানে!
- সাকিব জামাল
তৃষ্ণা তীব্র চাতকের মতো! বাসনা
অফুরন্ত জল। কাছে কলসী ছিল
ইচ্ছে মেটে না, রপ্ত করেছি তাই
ছিনতাইয়ের ছল! পুকুর পেলাম।
চোখ ভরে না, গভীর নদীর প্রেমে
ডাকাতি করে নিলাম! মন বলে
আরও চাই, আরও চাই, চাই-
সমুদ্রসম জল। লোভে উন্মত্ত আমি!
অবৈধ সম্পদে নেশাগ্রস্থ ততদিনে,
অন্ধকারে পরিচয় বদলে হই অমানুষ!
অথচ সমুদ্রজল অযোগ্য পানে!
শনিবার, ১ মে, ২০২১
এই সময়ের মলাট!
এই সময়ের মলাট!
- সাকিব জামাল
দুঃখের মলাটে বন্দি এখন, জীবনের পাতাগুলো!
কী সাংঘাতিক সময়-
কবিতাগুলো,
গল্পগুলো,
অথবা চরিত্রগুলো
সবার ইমোশনে সয়লাব স্যাড ইমোজি!
একমাত্র বাস গ্রহে-
চলছে স্যাপিয়েন্স...
এ যাবতকালের অনিশ্চিত যাত্রায়!
পদে পদে এখন, দুঃখের মিউটেশন-
বেড়ে চলেছে কেবল দুঃখের ঢেউ!
কবে ফিরবে ফের, সুখের প্রচ্ছদে আঁকা ঢের-
প্রাণবন্ত জীবন, জানে না কেউ!
দুঃখের মলাটে বন্দি এখন, জীবনের পাতাগুলো!
কৃত্রিম সম্পর্ক
কৃত্রিম সম্পর্ক
- সাকিব জামাল
দেহাশ্রয়ী পরজীবী চিনতে যদি হয় ভুল,
তবুও ভালোবাসায়, অন্তিম ফলাফলে-
ভাঙে হৃদয়ের সব কুল!
কৃষ্ণকালো কৃত্রিম অথবা প্রাণবন্ত প্রাকৃতিক,
কি চাও?
সম্পর্কে জড়ানোর আগেই-
সিদ্ধান্ত নাও।
পার্থিব লোভে, কৃত্রিম সম্পর্কে-
দেহাশ্রয়ী পরজীবী করে বাস!
মেলে না প্রেম অথবা সুখ, ববং তুমি-
সর্বভুকের আহার, খেলনার ছল,
কাগজের ফুল!
কোন সম্পর্ককে কৃত্রিম করো না
ত্যাগ
ত্যাগ
- সাকিব জামাল
উদাহরণ অন্যতম,
ফাইটো-প্লাংটনে ঠোকর মারে মাছ-
হাসে,
নাঁচে,
বাঁচে!
ভিন্ন প্রজাতি,
সুখ-দুঃখের অনুভূতি ভিন্ন,
তবুও বন্ধন খাদ্যজালে!
মায়াবী মৃত্যুর শৃঙ্খলে-
অথবা অক্সিজেন দানে,
সবুজের ত্যাগে বাঁচে-
প্রাণীকুল পৃথিবীর বুকে।
অন্য গ্রহগুলো যেখানে নির্জীব,
ত্যাগ শেখো মানুষ, উদ্ভিদপ্রেমে।
শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১
মানবতার ক্ষমতায়ন
মানবতার ক্ষমতায়ন
- সাকিব জামাল
অগ্রজ-অনুজ ঐক্যহীনে,
একলা মানুষ বোকা!
অধিকার আদায়ের সংগ্রামে,
ফলাফল হয়- ধোঁকা!
মানবতার ক্ষমতায়নে-
চাই দায়িত্ববোধের টান।
প্রজন্ম দূরত্বে ভেদাভেদ নয়,
ধরো মানবপ্রেমের গান।
বেঁচে আছেন শঙ্খ ঘোষ দৃষ্টির আড়ালে
বেঁচে আছেন, শঙ্খ ঘোষ, দৃষ্টির আড়ালে!
- সাকিব জামাল
কোন কবি'র প্রয়াণে আমি 'বিদায়' জানাই না,
এ কেবল দৃষ্টি সীমানার অতিক্রম!
কবি বেঁচে থাকেন অনন্ত আগামীর মাঝে-
মানুষের ভালোবাসায়।
বেঁচে থাকুন, কবি শঙ্খ ঘোষ।
অনন্তকালের ভালোবাসা!
"আবার আমাদের দেখা হবে কখনো
দেখা হবে তুলসীতলায় দেখা হবে বাঁশের সাঁকোয়
দেখা হবে সুপুরি বনের কিনারে!"
ঠিক, তোমার কবিতার মতো-
বিশ্বাস রাখি,
সমকাল ছাপিয়ে মহাকালের আত্মিক বন্ধনে-
তোমার মৃত্যু নেই!
বিষাদের 'বিদায়' শব্দটি বেমানান
তোমার জন্যে।
তোমাকে প্রকৃতির ভালোবাসা।
নক্ষত্রমণ্ডলে হোক তোমার
জাঁকজমক বাসা!
ধ্যানসংযোগে পাঠকেরা
তোমায় ঘিরে থাকুক চিরকাল।
শঙ্খ ঘোষ, বিদায় নয়,
অনন্তকালের ভালোবাসা!
অভিমান
অভিমান
- সাকিব জামাল
জোয়ার-ভাটায় ছেড়ে দিয়েছি তরী, নিজে আর বাইবো না!
উজানে বাইতে গেলে
শত্রুর দেখা পাই,
স্রোতমুখী বৈঠা টানে
নৈতিকতা হারাই!
জোয়ার-ভাটায় ছেড়ে দিয়েছি তরী, নিজে আর বাইবো না!
এ আমার হতাশা নয়
খাপ খাইয়ে চলা,
নিজেকে সামলে নিয়ে-
আঁকা নিজের চিত্রকলা।
দ্রোহপ্রেম এখন, বিপদমাখা ভীষণ!
সঙ্গীবিহীন
একলা রাতদিন-
কাঁদতে আর পারবো না!
জোয়ার-ভাটায় ছেড়ে দিয়েছি তরী, নিজে আর বাইবো না!
সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১
সলোকপ্রার্থী
সলোকপ্রার্থী
- সাকিব জামাল
আমি কেবল তোমার রঙের সলোকপ্রার্থী!
রহমে তোমার, অধমের দাগমাখা কলবে-
প্রয়োজনমতো 'নিয়ন্ত্রিত'
আলোকধারা বয়।
সাথে ঠিক ঠিক,
প্রেমিক পায়-
তৃষ্ণার ছায়া, নিয়মমাফিক।
জেগে ওঠে প্রেমে,
সতেজ রয়।
তোমার 'নিরাকার' নূরে-
দূর হয় আঁধার,
দূর হয় ভয়।
বাঁচে আদম সন্তান তোমার মহব্বতে।
আমি কেবল তোমার রঙের সলোকপ্রার্থী।
বৃক্ষমানবী
বৃক্ষমানবী
- সাকিব জামাল
তুমি হও বৃক্ষের মতো,
ফলজ, ফুলেল, ছায়া-মায়াময়।
আমি ও জাতক আমার, তোমায় জড়িয়ে বাঁচুক!
তোমার সবুজপাতায় সালোকসংশ্লেষণে-
যাপিত জীবন সবার সতেজ থাকুক।
সৌরভে তুমি-
রাখো পৃথিবী ঘ্রাণময়।
ফলজ পরিপক্বতায় তোমার-
সভ্যতা অব্যাহত রয়।
সন্তান কিংবা প্রেমিক অথবা সভ্যতা
প্রাণবন্ত অপরূপ।
যদি হও মানবী তুমি-
বৃক্ষ প্রতিরূপ
বৃষ্টি, তোমার অভাবে
বৃষ্টি, তোমার অভাবে...
- সাকিব জামাল
আকাশে যতোই থাকুক মেঘ মেঘ ভাব,
তুমি নেই পাশে, তাই বৃষ্টির অভাব!
অথচ, এই মন চায় এখন-
প্রেমপবিত্র বৃষ্টি নামুক আজ,
বাজুক কথার নুপুর তোমার,
মাতুক অঙ্গে অঙ্গে কারুকাজ!
টাপুর টুপুর কাটুক সময়,
ছলাৎ ছলাৎ চলুক রাত,
জলজযাত্রায় সিক্ত হোক জমিন,
মুছে যাক বিরহবরাত!
ছুটে এসো, দ্রুত তুমি, ময়ূর পেখম মায়ায়,
তাপদগ্ধ একেলা ভুবন, বৃষ্টিহীন কেটে যায়!
শনিবার, ২৭ মার্চ, ২০২১
পঞ্চাশে এবং পরে
পঞ্চাশে এবং পরে
- সাকিব জামাল
এখনও চৈত্রের মতো রুক্ষ সমকাল।
পথে পথে শিমুল রঙ- জনতার দ্রোহে!
অধিকার আদায়ের আওয়াজ-
উত্তপ্ত দখিনা বাতাস হয়ে বয়ে যায়!
বসন্তে আর বসন্ত নেই মনে!
অথচ, আমরা চাই, পঞ্চাশে এবং পরে-
রাজপথ, জনপদ নির্বিঘ্ন হোক।
নির্বিঘ্ন হোক আমজনতার পথচলা।
শান্তির আবাসে বাঁচুক মানবতা।
বাঁচুক প্রেমে- সবার স্বাধীনতা!
জলের কোন জাত নাই
জলের কোন জাত নাই!
- সাকিব জামাল
জলের কোন রঙ নাই।
জলের কোন জাত নাই!
জল পিপাসায় কাতর কাউকে-
আঘাত করা ধর্মে নাই!
ইতিহাস স্বাক্ষী।
জলকষ্টে যারাই মারতে চেয়েছে মানুষ,
ভালো থাকে নি তারা কখনো পরে!
প্রকৃতির বিচার অলৌকিক,
ঘটে হঠাৎ হঠাৎ করে।
হও সাবধান!
গাও মনুষ্যত্বের গান।
জলের জন্য কেউ কেড়ো না-
অন্য কারও প্রাণ।
পুঁজিবাদ
পুঁজিবাদ
- সাকিব জামাল
পুঁজিবাদের কবিতায়-
মানুষ এবং কর্মী মৌমাছি একই সুরে গান গায়!
যতদিন জীবন, চলে নিরন্তর ছুটে চলা।
তবে মৌ-টুকু কার ভাগ্যে শেষমেশ,
জানা থাকে না সে গন্তব্য কারও!
অথচ সংগ্রহ সংগ্রামে-
জীবনবাজি রাখে কর্মীপক্ষ!
বিভ্রান্ত থাকে অগ্রজেরা-
শেষ ভোক্তার ভবিষ্যৎ ভাবনায়,
শতভাগ শুদ্ধ কোন চরিত্র নেই-
পুঁজিবাদের কবিতায়!
কয়েকটি হাইকু
কয়েকটি হাইকু
- সাকিব জামাল
১.
রূপালী চাঁদ
জাগে হৃদয়ে প্রেম
মানে না বাঁধ।
২.
জোছনা রাতে,
তোর বদন দেখি-
ফাগুনে চাঁদে!
৩.
শ্যাওলা শূল-
বদ্ধপুকুর মনে
ফোঁটে না ফুল!
৪.
ফাগুনক্রান্তি
'তুমিময়' বসন্ত
ভীষণ ভ্রান্তি!
৫.
চৈতালী রোদ,
যেন প্রেমিক মনে-
বিরহ বোধ।
শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১
তব এসেছিলে তুমি
তব এসেছিলে তুমি
- সাকিব জামাল
তব এসেছিলে তুমি একদিন কাছে মোর
সে সময়টুকুই শ্রেষ্ঠ এ জীবনে!
নব নব স্বপ্নের করে দিয়েছো যে শুরু
আজ কেন? কোনদিনও হবে তার শেষ।
কেটে যায় দিন-রাত, আসে নতুন ভোর
ভাবি বসে একা আমি, আসবে তুমি ফের কবে
হংস মিথুনের জুটি হয়ে আবার উঠবো মেতে-
ক্লান্তিহীন ভালোবাসায় শুধু দুজনে হতে নিরুদ্দেশ।
এক হিংস্র শতাব্দী
এক হিংস্র শতাব্দী
- সাকিব জামাল
বোধহয়, বর্তমানে বিশ্বে-
একবিংশ নয়, এক 'হিংস্র' শতাব্দী চলে!
জনপদে জনপদে-
চলে মানবাধিকার লংঘনের মহোৎসব।
মানুষের পরিচয় ভুলে গেছে মানুষ!
ভুলে গেছে বোধের বিবর্তনে বিবর্তিত হয় জৈবিক কোষ,
সে ধারায় হোমো-সেপিয়েন্সও বিলুপ্ত হতে পারে একদিন।
কি হবে মানুষের পরিচয় সেই দিন?
হৃদয়ে রেখে-
এক 'মানবিক' যুগের অভিপ্রায়,
এখনই সময়,
উন্নত অনুজ প্রজন্ম সৃষ্টির জন্যে,
মানবপ্রেমের মহিম মন্ত্রে,
হিংস্রতাকে উচিত জানানো বিদায়।
তোমার অভিমানে...
তোমার অভিমানে...
- সাকিব জামাল
প্রতিরাতের পাতায় পাতায়
অদৃশ্য ইতিহাসে লেখা আছে,
তোমার অভিমান ভাঙতে-
ঝরেছে কতো সমুদ্র জল দু'চোখে আমার!
অবাক হয়েছি, ভালোবাসার একান্ত অভিধান-
যখন খচিত হলো বিচ্ছেদের অনল রঙে,
নিরবে পুড়ে পুড়ে ছাই হলো যুগল প্রেমের স্বপ্নসকল,
তখন দুঃখ লাগে নি তোমার!
অথচ, রাতজাগা ক্লান্ত চোখদুটো আমার
প্রতিদিন তোমার অপেক্ষায়-
ঝরা শিউলি ফুল হয়ে চেয়ে থাকে!
ফাগুনের আগুনে পূর্ণিমায়
ফাগুনের আগুনে পূর্ণিমায়
- সাকিব জামাল
ফাগুনের আগুনে পূর্ণিমায়,
ডুবে যায় মন- তোর দরিয়ায়!
শুদ্ধ প্রেমের শুভ্র সময়,
হয় হয় বুঝি, দ্রুত হয় ক্ষয়।
করিস না তার-
বিন্দু অপচয়!
নিভৃতে সখী, দ্রুত কাছে আয়!
গভীর প্রেমে,
বেঁধে রাখ ফ্রেমে-
যুগলবন্দি সময়, লক্ষ্মী জোছনায়।
ফাগুনের আগুনে পূর্ণিমায়,
ডুবে যায় মন- তোর দরিয়ায়!
শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
মেঘ কারিগর মন
মেঘ কারিগর মন
- সাকিব জামাল
তোমার শূন্যতায়, নিম্নচাপে, মেঘ কারিগর মন।
শীতল বিরহে বৃষ্টি নামে, দু'চোখে প্লাবন!
যতোই বলি, থামো এবার,
লোনা প্রবাহের কী দরকার!
বোঝে না মন, করে আয়োজন, বৃষ্টির আলিঙ্গন!
বায়ান্নোর আবেশ
বায়ান্নোর আবেশ
- সাকিব জামাল
রাতের আকাশে নিয়ত মিটিমিটি জ্বলে-
প্রেরণার 'রফিক, বরকত, জব্বার!'
আমার সাথে চুপিচুপি কথা কয়,
গান গায় প্রাণের ভাষা বাংলার!
আমি শিহরিত হই, দ্রোহ-প্রেমে ডুবে রই!
আঁধারে যখন নিমজ্জিত হয় দেশ
অনুভব করি বায়ান্নো'র আবেশ।
বলি "দূর হও সব অবাঞ্ছিত কালো!
কৃষ্ণচূড়ার রঙ চেতনায় আমার,
স্বপ্নে নক্ষত্রের আলো!"
অপরিহার্য বিশ্বাস
অপরিহার্য বিশ্বাস
- সাকিব জামাল
উদাহরণমাত্র,
একসময় পাথর কেটে কেটে ঘর বেঁধেছি আমরা,
এখন ইট-পাথর গেঁথে গেঁথে বাঁধি ঘর।
স্থাপত্যকলায় জৈবরাসায়নিক ভালোবাসায়-
এগিয়ে চলে সময় অবিরত ক্লোক-ওয়াইজ বরাবর।
এরূপ,
রুচিতে রূপান্তর শৈল্পিক,
ডিএনএ'র বিবর্তন গ্রথিত সাথে।
তবুও শিল্পীর ছোঁয়া অপরিহার্য!
আঁধারে অস্বীকার সাময়িক,
প্রস্ফুটিত ফুল সৌন্দর্য্যে স্পষ্ট প্রাতে!
তুমিকেন্দ্রিকতা
তুমিকেন্দ্রিকতা
- সাকিব জামাল
অজান্তে হৃদয়গঙ্গায় ঘুরে বেড়ায় কতো কতো গ্রহ, নক্ষত্র!
অথচ, একমাত্র তোমাকে পেয়েছি-
যাকে কেন্দ্র করে আমি করি বাস।
আমার ভালোবাসা।
আমার পৃথিবী।
তোমাকে আবর্তনেই-
ভালো থাকে আমার সমকাল।
তোমার উপগ্রহ হয়েই বাঁচতে চাই,
মহাজাগতিক প্রেমে আঁচলে বেঁধে রেখো আমায় আজন্মকাল!
চলো বহুদূর
চলো বহুদূর
- সাকিব জামাল
সময়ের ডালে নিপুন বাবুই পাখির মতন,
স্বপ্নের সাথে স্বপ্ন বুননে ছুটে চলো মন।
চলো বহুদূর নিজের মতো করে,
করো বাস আপন স্বপ্নঘরে।
ভুলে যাও ঋনাত্মকজনের তিক্ত কথন।
রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২১
বন্ধুতা এখনকার
বন্ধুতা এখনকার
দৃষ্টিসীমানা অতিক্রমে-
মন থেকে মুছে যায় স্মৃতিছবি চুপচুপ।
কেমন যেন
বন্ধুতার সম্পর্কসকল দুর্বিনীত দূরত্বে
ভ্যানডার ওয়ালস্ বলে আটকা পড়ে যায়!
সমযোজী বা আয়নিকে
পাশপাশি বা মিশে যেতে পারে না।
একলা মন, একলা ইলেকট্রন
থেকে যায়, বহিঃস্তরূপ!